বিদেশ

কফিনে করে নাবালিকাদের যৌনদাসি করতে পাচার! রান্না পছন্দ না হলে মহিলাকে জ্বালিয়ে দিত, তালিবানিদের অত্যাচারের কথা ফাঁস করলেন নাজলা-রা

তালিবানরা প্রায় দু’দশক পর ফের ক্ষমতা দখল করায়, দেশ জুড়ে ছড়িয়েছে আতঙ্ক। তালিবানি শাসন থুড়ি শোষণের কথা ভুলে যায়নি আফগানিস্তানের মানুষ। ওরা মেয়েদের মানুষ মনে করে না। শুধু তাই নয় পুরুষদেরকেও নিয়ম ভাঙতে দেখলে গুলি করতে দু’বার ভাবে না। এ হেন তালিবান ফের ক্ষমতায় আসায়, মানুষ দেশ ছেড়ে পালিয়ে আসতে চাইছে। তার ছবি ধরা পড়েছে কাবুল বিমনা বন্দরে। ভয়াবহতায় শিউরে উঠেছে বিশ্ব। তালিবানরা জানিয়েছে তারা বদলে গিয়েছে। এবং মহিলাদের ইসলাম মতে তারা পড়াশুনো করতে দেবে। অনেক স্বাধীনতা থাকবে। কিন্তু তাদের কাজে ও কথায় কোনও মিল নেই। আজই তালিবানরা ফতোয়া জারি করেছে যে ছেলে এবং মেয়েদের এক সঙ্গে পড়াশুনো করতে দেওয়া যাবে না। এরই মধ্যে ফের উত্তেজনা তৈরি হয়েছে আফগানিস্তানের প্রাক্তন মহিলা বিচারক নাজলা আয়ুবির বক্তব্যে। তিনি একটি সংবাদ মাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ভয়াবহ কথা জানিয়েছেন। তালিবানরা ক্ষমতায় আসার পর বলেছিল মহিলাদের তারা সম্মানের চোখে দেখবে। স্বাধীনতা দেবে। কিন্তু মাত্র কয়েকদিনের চিত্র একেবারে অন্য কথা বলছে। নাজলার সঙ্গে কিছু আফগানিস্তানি মহিলার কথা হয়েছে। সেই মহিলারা যা জানিয়েছেন তা রীতিমতো ভয় ধরাবে। তাদের কথায়, তালিবানরা নিজেদের খাবার তৈরির জন্য আফগান মহিলাদের বলছেন। সেই মতো বাধ্য হয়েই খাবার বানিয়ে দিতে হচ্ছে কাবুলের কিছু মহিলাকে। কিন্তু খাবার পছন্দ না হয় এক মহিলাকে আগুনে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে তালিবানরা। শুধু তাই নয়, কাবুলের বিভিন্ন বাড়ি বাড়িতে গিয়ে নাবালিকা কন্যা খুঁজছে। যাদের বাড়িতে নাবালিকা রয়েছে তাদের সঙ্গে তালিবান সেনাদের বিয়ে দিতে বলছে। না দিলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে গোটা পরিবারকে। এখানেই থেমে নেই, এক মহিলা নাজলাকে জানিয়েছেন, কফিনে করে নাবালিকা কন্যাদের অন্য জায়গায় পাচার করে দেওয়া হচ্ছে যৌনদাসি বানানোর জন্য। মাত্র চার পাঁচ দিনেই তলে তলে এই সব শুরু করে দিয়েছে তালিবানরা। যা ভয় ধরাচ্ছে। নাজলা বলছেন, তিনিও আতঙ্কে রয়েছেন। কিভাবে এর থেকে মুক্তি মিলবে কিছু জানা নেই। এই তালেবানদের অত্যাচার থেকে নিস্তার পেতে আফগানিস্তান থেকে ভারতে চলে আসেন আরও এক মহিলা। নাম মুস্কান। ওই মহিলা আফগানিস্তানে পুলিশ বাহিনীতে কাজ করতেন এবং তালেবানদের ভয়ে ভারতে এসেছিলেন এখন নয়াদিল্লিতে বসবাস করেন। এক সংবাদমাধ্যমের কাছে বিবৃতি দিয়ে মুস্কান জানান যে জিহাদি গোষ্ঠীর দ্বারা তাকে হুমকির সম্মুখীন হতে হয়েছিল তাই বাধ্য হয়ে চাকরি ছেড়ে ভারতে আসতে হয়েছে। শুধু আমাকেই নয়, রীতিমত আমার পরিবারকেও হুমকি দেওয়া হত। তালেবানরা মহিলাদের তুলে নিয়ে যায় এবং তাদের গুলি করে। তিনি আরও বলেন, “তারা মৃতদেহকেও ধর্ষণ করে। দেহটি মৃত না জীবিত তা তারা গুরুত্ব দেয় না । লাশের সাথে যৌন মিলনের অভ্যাসকে বলা হয় নেক্রোফিলিয়া । এটা কি আদেও কল্পনা যোগ্য? সেটিও বলেন তিনি । মুস্কান বলেছিলেন যে যদি কোনও মহিলা সরকারের পক্ষে কাজ করে তবে তারা একটি ভয়াবহ পরিণতির শিকার হবে। এর আগে, এটা জানা গিয়েছিল যে আফগানিস্তানের একমাত্র মেয়েদের বোর্ডিং স্কুলের সহ প্রতিষ্ঠাতা তার মেয়েদের এবং তাদের পরিবারের সুরক্ষার জন্য সমস্ত নথিপত্রে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল। স্কুল অফ লিডারশিপ আফগানিস্তানের (এসওএলএ) অধ্যক্ষ শাবানা বাসিজ-রশিখ বলেন, তার উদ্দেশ্য ছিল তাদের মুছে ফেলা নয় বরং শিক্ষার্থীদের ও তাদের পরিবারকে তালেবানদের হাত থেকে রক্ষা করা। গত ২০১৮ সালে ভারতে আসা আরেক মহিলা বলেছিলেন যে তার বাবা তালেবানদের গুলিতে নিহত হয়েছেন কারণ তিনি পুলিশের জন্য কাজ করতেন। পরিবারের আরেক সদস্যকেও গুলি করা হয়েছিল কারণ তিনি আফগান সেনাবাহিনীর একজন চিকিত্‍সক হিসাবে কাজ করেছিলেন।