কলকাতা

‘রাজ্যপাল অর্ধসত্য বলছেন’, তোপ সুখেন্দুশেখরের

রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় বাংলা ভাগের চক্রান্ত করছেন বলে এবার সরাসরি অভিযোগ আনলেন তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়। রাজ্যপাল আইনের অপব্যাখ্যা করে মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন বলেও অভিযোগ করেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ। প্রসঙ্গত, এ দিনই রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ফের সরব হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি রাজ্যপালকে দুর্নীতিগ্রস্ত বলেও অভিযোগ করেন। তিনিও প্রশ্ন তোলেন, কেন এই সময় রাজ্যপাল উত্তরবঙ্গ সফরে গেলেন? এর পাল্টা জবাব দেন রাজ্যপালও। তার পরই সাংবাদিক বৈঠক করে জগদীপ ধনখড়ের বিরুদ্ধে বাংলা ভাগের চক্রান্ত করার অভিযোগ আনলেন সুখেন্দুশেখর রায়। গত সপ্তাহেই রাজ্যপাল দার্জিলিং সফরে গিয়েছিলেন। এ দিন দার্জিলিং ছাড়ার আগে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, জিটিএ দুর্নীতির আঁতুড়ঘর। জিটিএ-র আর্থিক লেনদেনের হিসেবে গরমিল ধরতে ক্যাগ-কে দিয়ে তদন্ত করানোর হুঁশিয়ারিও দেন জগদীপ ধনখড়। উত্তরবঙ্গের অনুন্নয়নের অভিযোগেও সরব হন তিনি। এর পরই বিতর্কের সূত্রপাত। নবান্নের সাংবাদিক বৈঠক থেকেও রাজ্যপালের উত্তরবঙ্গ সফর নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কারণ গত কয়েকদিন ধরেই বিজেপি-র উত্তরবঙ্গের সাংসদ, বিধায়কদের কয়েকজন পৃথক রাজ্যের দাবিতে সরব হয়েছিলেন। এই সময়ে রাজ্যপাল কেন দার্জিলিং গেলেন, কাদের সঙ্গে তিনি বৈঠক করেছেন তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন তিনি। রাজ্যপাল অবশ্য কলকাতায় ফিরেও নিজের বক্তব্যেই অনড় থেকেছেন। সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রীকে জবাব দেন তিনি। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই রাজ্যপালকে পাল্টা আক্রমণ করেন সুখেন্দুশেখর রায়। তিনি অভিযোগ করেন, উত্তরবঙ্গে গিয়ে আসলে বাংলা ভাগের চক্রান্ত করছেন রাজ্যপাল। আপনি সংবিধান মেনে চলুন। মুখ্যমন্ত্রীকে সম্মান করুন, রাজ্য প্রশাসনের নিন্দা করা বন্ধ করুন। আপনি বাংলার মানুষের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছেন। আপনি দার্জিলিং গিয়েছিলেন বিজেপি-র নির্দেশে। যে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা বাংলা ভাগ করতে চাইছে, আপনি সেই নেতাদের সঙ্গে গোপনে শলা, পরামর্শ করছেন। এবং আপনি ফেরার পর থেকেই ওই বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতারা রাস্তায় নেমে বাংলা ভাগ করার দাবিতে সরব হয়েছে। উত্তরবঙ্গের পরিবেশকে উত্তপ্ত করে তুলছে। আপনি একজন চক্রান্তকারী। বাংলা ভাগ করতে আপনি ষড়যন্ত্র করছেন। আপনার আচরণ, আজকের সাংবাদিক বৈঠকের মধ্যে দিয়ে তা স্পষ্ট।’ মুখ্যমন্ত্রী এ দিন রাজ্যপালের বিরুদ্ধে জৈন হাওয়ালা মামলায় নাম জড়িত থাকার অভিযোগ এনেছেন। রাজ্যপাল পাল্টা দাবি করেছেন, ওই মামলার চার্জশিটে তাঁর নাম ছিল না। মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অসত্য অভিযোগ আনারও অভিযোগ করেছেন রাজ্যপাল। সুখেন্দুশেখর বাবু অবশ্য পাল্টা বলেন, ‘রাজ্যপাল সম্ভবত অর্ধসত্য বলছেন। উনি বলেছেন ওই মামলার চার্জশিটে তাঁর নাম ছিল না। কিন্তু মামলায় তিনি জড়িত ছিলেন কি না সে বিষয়ে কিছু বলেননি।’ সুখেন্দুশেখর বাবু অবশ্য বলেন, তিনি আইনজীবী হিসেবে এই প্রশ্ন তুলছেন। রাজ্যপাল বার বারই ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন। সুখেন্দুশেখর বাবু এ দিন পাল্টা দাবি করেছেন, বার বার এই অভিযোগ তুলে আসলে হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট, মানবাধিকার কমিশনকে প্রভাবিত করতে চাইছেন জগদীপ ধনখড়।