বাঙালিরা ঘরের মেয়ে উমাকে বিদায় জানান বিজয়া দশমীর দিন। এই দিন বনেদি বাড়ির সীমা ছাড়িয়ে ছোট-বড়-মাঝারি বারোয়ারি পুজোতেও চলে দেবী বরণ এবং সিঁদুর খেলা। এমনই দক্ষিণ দমদম পুর এলাকার অমরপল্লি সর্বজনীন দুর্গোত্সব কমিটি দেবীবরণ থেকে সিঁদুর খেলায় জাতি ভেদাভেদ মুছে দিল। এখানে সিঁদুর খেলায় অংশ নিলেন হিন্দু ও মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের বিবাহিত মহিলারাই। পাশাপাশি যোগ দিলেন সমাজের পিছিয়ে পড়া আদিবাসী সম্প্রদায়ের মহিলারাও। তবে একটা বিষয়ে তাক লাগিয়েছেন এই পুজো কমিটির উদ্যোক্তারা। সেটা হল করোনা সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে মহিলারা সিঁদুর খেললেন পিপিই কিট পড়েই। অমরপল্লি পুজো কমিটির দাবি, মোট ৫২ জন সধবা মহিলা এদিন তাঁদের পুজো মণ্ডপে সিঁদুর খেলায় অংশ নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৩০ জন হিন্দু, ১২ জন আদিবাসী এবং ১০ জন মুসলিম সম্প্রদায়ের। করোনা সংক্রমণের কথা মাথায় রেখেই এদিন প্রত্যেককে পিপিই কিট দেওয়া হয়েছিল। এই পুজো কমিটির এক কর্তার কথায়, আমরা সকলেই চাই করোনা বিদায় নিক। আগামী বছর যাতে এই মারণ সংক্রমণ ছাড়াই সকলে পুজোর আনন্দে গা ভাসাতে পারে তার জন্যই সচেতন ও সুরক্ষিত থাকতে পিপিই কিট দেওয়ার ভাবনা মাথায় আসে। পুজো কমিটির আরেক কর্তার কথায়, তাঁদের পুজো মণ্ডপ সাজাতে মেদিনীপুরের পিংলা ও চণ্ডীপুর থেকে পটশিল্পী হিসেবে এসেছিলেন মুসলিম মহিলারা। তাঁরা মণ্ডপ সাজিয়ে তোলার পাশাপাশি মণ্ডপের পাশে স্টল তৈরি করে তাঁদের হস্তশিল্প বিক্রিও করছিলেন। ফলে পুজোর কটা দিন তাঁরা এখানেই ছিলেন। ফলে তাঁদেরও আমরা দেবী বরণ এবং সিঁদুর খেলায় আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। তাঁরা সানন্দেই বাঙালি হিন্দুদের উত্সবে সামিল হতে রাজি হয়। ফলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতির এক অনন্য নজির হয়ে থাকল এবারের সিঁদুর খেলা।