বুধবার বডি গার্ড লাইনে প্রচারসভা করেন তৃণমূল সুপ্রিমো। বিজেপি কড়া তোপের সঙ্গেই বেশকিছু আবেগী মন্তব্যও করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভবানীপুর উপনির্বাচনে এটিই ছিল তাঁর প্রথম নির্বাচনী জনসভা। তিনি এদিন বলেন, মিছিলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে নির্বাচন কমিশন, তাই আমরা মিছিল করতে পারছি না। কমিশন বলেছে করোনার জন্য় মিছিল করা যাবে না। তাই মানুষের যাতে কোনও অসুবিধা না হয় সেই চেষ্টাই করব। বিগত কয়েকদিন ধরেই রাজ্য়ে তুমুল বৃষ্টিপাতে বিপর্যস্ত জনজীবন। এই নিয়েও এদিন বলেন তৃণমূলনেত্রী। তাঁর কথায়, ‘বিগত ৩০ বছরে এত বৃষ্টি কোনওদিন হয়নি। তবে আগে বৃষ্টি হলে তো মানুষ বাড়ি থেকেই বের হতে পারতেন না। সে সমস্য়া এখন নেই’। রাজ্য়ে তৃণমূল সরকারের বন্য়া নিয়ন্ত্রনে অনেক কাজ করেছে, সেই কাজের খতিয়ান দিয়ে তিনি বলেন, ‘গোটা রাজ্য়ে সাড়ে তিন লক্ষ পুকুর খনন করিয়েছি, বৃষ্টির জল ধরে রাখার জন্য। অনেকগুলি স্টেট ড্য়াম তৈরি করিয়েছি। তাই এখন বেশি জল জমতে পারে না’। ভবানীপুরে কেন তাঁকে ফের দাঁড়াতে হল তার ব্য়াখ্য়াও দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতার দাবি, নন্দীগ্রামে ষড়যন্ত্র করে হারানো হয়েছিল আমাকে। নন্দীগ্রামে আমাকে হারাতে যে ষড়ষন্ত্র হয়েছিল, তা শুনলে আপনাদের ভয় লাগবে। এরপরই তিনি বলেন, ‘আমার ভাগ্য়ে লেখা ছিল যে আমি ভবানীপুর থেকেই লড়াই করি। তাই আবার আপনাদের কাছে ভোট চাইতে এসেছি’। এই প্রসঙ্গে ভোটারদের তিনি আবেদন করেন যাতে সকলে ভোট দিতে যান আগাামী ৩০ সেপ্টেম্বর। তৃণমূলনেত্রীর কথায়, ‘অনেকেই বলছেন দিদি এমনিতেই জিতে যাবে, আবার কেন ভোট দিতে যাবো? কিন্তু ভোট না দিলে আমাকে পাবেন না। প্রত্য়েকটা ভোট আমার কাছএ গুরুত্বপুর্ণ, ভোট না পেলে আমার কিন্তু আমার ক্ষতি হয়ে যাবে। তাই ঝড় হোক, জল হোক, যে করে হোক ভোট দিতে যাবেন’। তাঁর লড়াই যে মূূলত কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধেই সেটাও জানাতে ভোলেননি তৃণমূলনেত্রী। এদিন তিনি বলেন, ত্রিপুরা ও অসমেও খেলা হবে। তৃণমূলকে আটকাতে ত্রিপুরায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এখানেও তো পুজো হয়, কিন্তু তার জন্য় ১৪৪ ধারা জারি করতে হয় না। প্রসঙ্গত, অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের মিছিল আটকাতে ত্রিপুরা সরকার ১৪৪ ধারা জারি করেছে। এই প্রসঙ্গেই গর্জে ওঠেন তৃণমূল সুপ্রিমো । এরপরই তাঁর হুঙ্কার, আমরা ভারতবর্ষের বিভিন্ন জায়গায় লড়ব, ভোটের ময়দানেই লড়াই হবে, বিজেপি-কে আমরা হারাবোই। এদিন তিনি আরও বলেন, বিজেপির বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলবে। চারটে জায়গায় উপনির্বাচন বাকি আছে, আমরাই জিতব। বিজেপি কোথাও জিততে পারবে না। তোমরা যদি বুনো ওল হও, তাহলে আমরা বাঘা তেঁতুল। মনে রাখবেন আমি আপনাদের পাহারাদার। সাত দফায় সাংসদ হয়েছি। প্রতিবার খিদিরপুর সঙ্গে ছিল। ২০১১ সালে উপনির্বাচনে আপনারা ভোট দিয়েছিলেন। ভবানীপুর থেকে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছি। ২০১৬ সালেও এখান থেকে নির্বাচিত হয়েছিলাম। এটা ভাগ্যের খেলা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হলে ভবানীপুর থেকেই হবেন। বিধানসভা ভোট থেকে ‘খেলা হবে’ স্লোগান জনপ্রিয়তার শিখরে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে এদিনও শোনা যায় এই ধ্বনি। বলেন, ‘ভোটের ময়দানে খেলা হবে। ত্রিপুরা, গোয়া, উত্তরপ্রদেশে খেলা হবে। বিজেপিকে দেশ থেকে হঠাবই।’ তিনি বলেন, ‘মোদিজির বিজেপি দেশকে ভেঙে টুকরো টুকরো করার চেষ্টা করছে। বাংলাকেও ওরা ভাঙার চেষ্টা করেছিল। ভেদাভেদের রাজনীতি করছে। কিন্তু, বিজেপি দেশটাকে তালিবান করবে তা আমরা কিছুতেই মানব না। বাংলা ভাগও হতে দেব না।’