তৃতীয় দফায় নির্বাচনের আগে রাজ্যে দফায় দফায় জনসভা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। শনিবার সকালেই হুগলির তারকেশ্বরে বিজেপি-র স্বপন দাশগুপ্তের হয়ে সভা করেন তিনি। সেখান থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র আক্রমণ করেন। এরপরসোনারপুর দক্ষিণে জনসভা করছেন মোদি। মোদি বলেন, তৃণমূলের তোলাবাজরা গরিবের পেটে লাথি মেরে রেশনও লুঠ করে। আমফানের সময় কেন্দ্রীয় সরকার যে সাহায্য পাঠিয়েছিল, তৃণমূল সরকার, তা লুঠে নিয়েছিল। করোনার সময়ও কেন্দ্রীয় সরকার গরিব মানুষের জন্য ৮-৯ মাস বিনামূল্যে সবজি পাঠিয়েছিল। ২৩ লক্ষ মেট্রিক টন চাল, ১ লাখ মেট্রিক টন ডাল বিজেপি নেতৃত্বের হাতে পাঠিয়েছিল কেন্দ্র। ৯ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছিল সব মিলিয়ে। কিন্তু মমতা সরকার এই সাহায্য আপনাদের কাছে পুরোপুরি পৌঁছতে দেয়নি। কেন্দ্র গরিব মানুষের জন্য যে সবজি পাঠিয়েছিল, তাতেও তৃণমূলের তোলাবাজরা হাত বসিয়েছিল। আসল কথা হল, দিদি রেশন দেন না, গরিবের রেশন লুঠে নেন। দিদির পার্টি বলছে, দিদি বারাণসী থেকে লোকসভায় লড়বেন। এতে দু’টো কথা স্পষ্ট, দিদি বাংলায় নিজের হার স্বীকার করে নিয়েছেন। তাই বাইরে যাওয়ার কথা ভাবছেন। দিদি এখন বাংলার বাইরে নিজের জন্য জায়গা খুঁজছেন। ভালই। বিধানসভায় হেরে লোকসভায় অবশ্যই যান। হলদিয়া থেকে বারাণসী পর্যন্ত যে জলপথের বিস্তার ঘটিয়েছে, তাতেই হয়ত বারাণসী যাচ্ছেন। আর এখটা কথা কানে কানে বলি শুনে রাখুন, আমার বারাণসী, কাশি এবং উত্তরপ্রদেশের লোক এত বড় মনের অধিকারী যে ওঁরা আপনাকে ‘বহিরাগত’, ‘পর্যটক’ বলবেন না। বাংলার মানুষের মতোই বড় মন ওঁদের। প্রধানমন্ত্রী এও বলেন, শুনলাম তৃণমূলে মন্থন চলছে। যে ক’জন বিচক্ষণ লোক রয়েছেন, সকলে দিদির নন্দীগ্রাম যাওয়ার সমালোচনা করছেন। সকলে বলছেন, নন্দীগ্রাম গিয়ে ভুল করেছেন দিদি। আমি জানতে পারলাম, নন্দীগ্রামে হারছেন বুঝে তৃণমূলের লোকজন ঠিক করে ফেলেছিলেন মমতাদিদিকে অন্য আসনে নামানো হোক। কিন্তু অনকে বুঝিয়েছেন, সেটা আরও ভুল হবে। কারণ দু’টো আসনে হারলে তৃণমূলের পরবর্তী রাজনৈতিক যাত্রা আরও কঠিন হয়ে যাবে। মমতাদি সঠিক পরামর্শদাতাদের চেয়ে ভুল পরামর্শদাতাদেরই বেশি ভরসা করছেন। ভুল পরামর্শদাতারাই দিদি আর ওঁর স্কুটিকে নন্দীগ্রাম পাঠিয়েছিলেন। ওঁরাই বাংলার থেকে দিদির টিকিট কেটে দিয়েছেন। মোদি এও বলেন, বালি দুর্নীতি, কয়লা দুর্নীতি, ভর্তি দুর্নিতী, আমফান দুর্নীতির পরেও এত রাগ কেন। আপনি নিজেকে ‘কুল’ ভাবেন। কিন্তু আপনার আচরণেই বাংলার রায় বোঝা যাচ্ছে। ছাপ্পাভোটের সুযোগ পাননি বলে নির্বাচন কমিশনকে গালি দিচ্ছেন। নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। ১০ বছর আগে এই নিরাপত্তাতেই ভরসা ছিল আপনার। এই নির্বাচন কমিশন, এই ইভিএমঅ আপনাকে ১০ বছর বাংলার সেবা করার সুযোগ করে দিয়েছিল। তখন তো ভাল লেগেছিল। আপনি বাংলার মানুষের উপর ভরসা করুন। মানুষ রায় দিয়ে দিয়েছেন। সকলে ঠিক করে ফেলেছেন, আপনাকে তৃমমূল সমেত নবান্ন ছেড়ে বেরিয়ে যেতে হবে: মোদী।