বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদ জেলার সামশেরগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে নির্বাচনী প্রচারে এসে বিজেপিকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জি। তিনি বলেন রাজ্য বিজেপির একাধিক শীর্ষ নেতা এই মুহূর্তে তৃণমূল দলে যোগ দেওয়ার জন্য লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। কিন্তু তৃণমূল দরজা খুলছে না বলে এখনও তাঁরা যোগ দিতে পারেননি। তৃণমূল যদি তার দরজা খুলে দেয় তাহলে বিজেপি এই রাজ্যে উঠে যাবে।বৃহস্পতিবার সামশেরগঞ্জ মাঠে তৃণমূল প্রার্থী আমিরুল ইসলামের সমর্থনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে অভিষেক ব্যানার্জি বলেন, ‘এই জেলার মানুষ ইতিমধ্যেই বিধানসভা নির্বাচনে ২০টি আসনের মধ্যে ১৮টি আসন তৃণমূলকে দিয়েছে। বাকি দু’টি আসনে এবার তৃণমূল প্রার্থীদের জিতিয়ে জেলা থেকে বহিরাগতদেরকে বিদায় দিতে হবে। এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এও বলেন, ভাঙা পায়ে ২১৩ আসন জিতেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবারের নির্বাচনে মুর্শিদাবাদ মালদা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিল। তবে ৩০ তারিখ ষোল কলা পূর্ণ করতে হবে। যে বাকি দুটি আসনে ভোট রয়েছে এক লক্ষের বেশি ব্যবধানে জেতাতে হবে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন কংগ্রেস এখন বড় বড় ভাষণ দিচ্ছে।প্রণব মুখোপাধ্যায় এর পুত্র অভিজিত্ মুখোপাধ্যায় তৃণমূলে যোগদান করেছেন। সিপিএম কংগ্রেসের জোট করে বিধানসভায় শূন্য হয়ে গেছে। ২০১৬ সালে নীতি-আদর্শ নৈতিকতা সব ত্যাগ করে সিপিএমের সঙ্গে জোট করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে হারাবে ভেবেছিল।আর যখন বিজেপির সাথে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লড়াই করতে নামে তখন সাম্প্রদায়িক শক্তির সাথে জোট করে। মানুষ তার যোগ্য জবাব দিয়ে বিধানসভায় শূন্য করে পাঠিয়েছে। সিপিএম কংগ্রেস কে ভোট দেওয়া মানে ভোট নষ্ট করা আজ এমনটাই বলেন সামশেরগঞ্জে প্রচারে গিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এজেন্সিকে কাজে লাগিয়ে বাংলা দখল করতে চেয়েছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর আক্রমণ করে পা ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। ভাঙা পায়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২১৩ টা আসন ছিনিয়ে নিয়েছেন। খেলা তো শুরু হয়নি। আগামী দিনে বিজেপিকে হারিয়ে ত্রিপুরায় তৃণমূল কংগ্রেস জিতবে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ তোলেন তিনি যাতে ত্রিপুরা যেতে না পারেন সে জন্য ১৪৪ ধারা জারি করে রেখেছে। কেন এত ভয় প্রশ্ন তোলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। খেলা তো দিল্লির হবে।আজ বিজেপি ভেবেছে কংগ্রেসকেই ইডি,সিবিআই দেখিয়ে যেভাবে ভয় দেখিয়ে রাখে তৃণমূল কংগ্রেসকেও রাখবে। আমাকে ১৫ দিনে পাঁচটা নোটিস পাঠিয়েছে। আমি গেছি ন ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন ৫০০বার ডাকলেও মেরুদন্ড বিক্রি করব না। দিল্লি ছাড়া করে ছাড়বো বিজেপিকে।বহিরাগতদের দিয়ে বাংলার মাটি দখল করতে পারিনি বলে বহিরাগত এজেন্সি দিয়ে ভয় দেখাচ্ছে বিজেপি।তাঁর অভিযোগ, ‘বিজেপি সরকার আচ্ছে দিনের নাম করে সবকিছু বেসরকারিকরণ করে দিচ্ছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনে জিতে আসার তিন মাসের মধ্যে আমরা দু’য়ারে সরকার’ করেছি ,’দুয়ারে রেশন’ এবং ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’- এর মধ্যে প্রকল্প চালু করতে পেরেছি। অন্যদিকে বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশ পশ্চিমবঙ্গের ছবি ব্যবহার করে তাদের রাজ্যের উন্নয়নের কথা প্রচার করছে।’ বিজেপিকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘বিজেপির উন্নয়ন মানে শহর এবং গ্রামের নাম পাল্টে দেওয়া। মুর্শিদাবাদ থেকে যদি তারা যদি জিতে আসত তাহলে হয়তো এই জেলার নাম তারা করে দিত ‘মোদি-শাহ -বাদ ‘। ‘ অভিষেকের খোঁচা, ‘এই জেলার ভাঙন কবলিত সামশেরগঞ্জের মানুষের সমস্যা নিয়ে মমতা ব্যানার্জি অবগত এবং খুব শিগগিরই রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ভাঙন প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সামশেরগঞ্জের ভোটারদের কাছে আবেদন, বিচ্ছিন্নতাকামী এবং বিভেদকামী শক্তিকে জেলা থেকে ঝেঁটিয়ে বিদায় করতে হবে কারণ মুর্শিদাবাদ জেলার মানুষ মাথা নিচু করতে জানেন না।’ অভিষেক ব্যানার্জি বিরোধী রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের জমানত জব্দ করতেও ভোটারদের কাছে আবেদন রাখেন।