দেশের নাগরিকদের ধর্মীয় স্বাধীনতা, লিঙ্গ, বর্ণ, ধর্ম নির্বিশেষে ব্যক্তিদের সমতা, বাকস্বাধীনতা এবং চলাফেরার মৌলিক স্বাধীনতার সাংবিধানিক প্রতিশ্রুতির বিরুদ্ধে সংখ্যাগুরুবাদী আধিপত্য নিয়ে প্রশ্ন তোলা উচিত। শনিবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচুড় এক ভাষণে এই মন্তব্য করেছেন৷ তিনি তাঁর পিতা সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি ওয়াই ভি চন্দ্রচূড়ের ১০১ তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে একটি ওয়েবিনারে বক্তব্য রাখছিলেন। বিচারপতি চন্দ্রচুড় বলেন, ধর্ম বা অঞ্চলের কারণে নাগরিক স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া যাবে না৷ সাধারণতন্ত্র হিসাবে সংবিধানের কাছে পূর্বপুরুষরা যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তা থেকে ব্যত্যয় ঘটানো যাবে না৷ আমাদের জাতির প্রতিটি নাগরিকের প্রতি নির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি ও অধিকারের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এই রাষ্ট্র ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। ধর্মীয় স্বাধীনতার প্রতিশ্রুতি, লিঙ্গ, বর্ণ বা ধর্ম নির্বিশেষে ব্যক্তিদের মধ্যে সমতার একটি প্রতিশ্রুতি, অযৌক্তিক রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপ এবং জীবন ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতা, বাক স্বাধীনতা এবং আন্দোলনের মৌলিক স্বাধীনতার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল৷ কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠতার কবলে পড়ে সেই স্বাধীনতা নষ্ট হতে বসেছে৷ স্বাধীন কণ্ঠকে জাতীয়তাবাদের দোহাই দিয়ে চেপে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে৷ তিনি আরও বলেন, প্রযুক্তির মতো সংবিধানও বিশ্বায়ন ও বেসরকারিকরণের যে পরিধি আজ আমরা প্রত্যক্ষ করছি তার পূর্বাভাস দিতে পারেনি। সংবিধান আমাদের সদ্য স্বাধীন রাষ্ট্রকে আমাদের সমাজের প্রধান, নিয়োগকর্তা এবং বিকাশকারী হিসাবে কল্পনা করেছিল। স্বাভাবিকভাবেই সংবিধান আমাদের বেশ কয়েকটি মৌলিক অধিকার গ্যারান্টি দিয়েছে৷ সেগুলি আক্ষরিক ভাষায় আমাদেরকে রাষ্ট্রের সম্ভাব্য অত্যাচার থেকে রক্ষা করার চেষ্টা করে৷ সাংবিধানিক চেতনা নাগরিক নির্বিশেষে আধিপত্যকামী শক্তি কাঠামো থেকে রক্ষা করার চেষ্টা করছে। বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে দেশের নাগরিকদের অধিকার রক্ষায় সংবিধানের প্রয়োগ ঘটানো যেতে পারে বলে তিনি মতপ্রকাশ করেন৷