আর কয়েক ঘন্টা পরেই শুরু হতে চলেছে আরও একটা নতুন বছর। পুরোনো বছরের সব খারাপকে পিছনে ফেলে এগিয়ে যাওয়ার পালা। তবে কিছু খারাপ মনে থেকেই যায়। বিশেষ করে আমাদের মনে থেকে যান তাঁরা যারা চলে গিয়েছেন চির বিদায় নিয়ে। আজ বছর শেষের দিনে তাঁদের আরও একবার স্মরণ করার পালা। দেখে নেওয়া যাক ২০২৩-এ কাদের আমারা হারিয়েছি-
শরদ যাদব – প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা সাতবারের লোকসভার সাংসদ আরজেডি দলের এই নেতা। প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর আমলে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ দ্বায়িত্ব সামলেছেন তিনি। ১২ জানুয়ারি গুরুগ্রামের হাসপাতালে ৭৫ বছর বয়সী এই নেতার মৃত্যু হয়।
প্রকাশ সিং বাদল – ৯৫ বছর বয়সী পাঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দীর্ঘদিন শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। শিরোমণি আকালি দলের এই প্রাক্তন নেতার মৃত্যু হয় ২৫ এপ্রিল।
ওমেন চণ্ডি – কেরালার প্রাক্তন এই মুখ্যমন্ত্রীর মৃত্যু হয় ১৮ জুলাই। কংগ্রেসের এই বর্ষীয়ান নেতার মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৭৯।
হেনরি কিসিংগার – গোটা বিশ্ব রাজনীতির এক সময়ের গুরুত্বপূর্ণ মুখ ছিলেন আমেরিকার রাষ্ট্রপতি নিক্সনের এই সেক্রেটারি। বৈদেশিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ এই রাজনীতিকের ১০০ বছর বয়সে মৃত্যু হয় ২৯ নভেম্বর।
এন ভালামার্থি – ২০২৩ সালে যখন গোটা দেশ উপভোগ করেছে চন্দ্রযান-৩ এর সফল অবতরণ, ঠিক সেই বছরই আমরা হারিয়েছি চন্দ্রযান উৎক্ষেপণের কাউন্টডাউনের কণ্ঠস্বরের অধিকারিনীকে। ৩ সেপ্টেম্বর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়।
এম এস স্বামীনাথন – ভারতে সবুজ বিপ্লবের অন্যতম জনক এম এস স্বামীনাথনকে এবছরই হারিয়েছি আমরা। ২৮ সেপ্টেম্বর চেন্নাইয়ের বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ৯৮ বছরের এই কৃষিবিজ্ঞানী।
ইয়ান উইলমিট– বিশ্বে প্রথম সফল ক্লোনিংয়ের কারিগর বিজ্ঞানী উইলমিটকেও ২০২৩-এ হারিয়েছি আমরা। ১১ সেপ্টেম্বর ৭৮ বছর বয়সে প্রয়াত হন আমেরিকার এই বিজ্ঞানী।
সতীশ কৌশিক – দেশের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা সতীশ কৌশিককে বিদায় জানাতে হয়েছে আমাদের ২০২৩ সালে। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ৯ মার্চ মৃত্যু হয় মিস্টার ইন্ডিয়ার ক্যালেন্ডারের। দেশের নবীন থেকে প্রবীন সব অভিনেতা তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেন।
নীতেশ পাণ্ডে – টেলিভিশনের অন্যতম জনপ্রিয় মুখ নীতেশ পাণ্ডেকে আচমকাই হারাতে হয়েছে ২০২৩ সালে। ওম শান্তি ওম, খোসলা কা ঘোসলা-র মতো চলচ্চিত্রে অভিনয় করা এই শিল্পী মাত্র ৫১ বছর বয়সে ২৩ মে মারা যান।
বৈভবী উপাধ্যায় – টেলিসিরিয়ালের অভিনেত্রীকে খুব অল্প বয়সে হারিয়েছি আমরা। সারাভাই ভার্সেস সারাভাই সিরিয়ালের এই অভিনেত্রী ২২ মে মাত্র ৩৮ বছর বয়সে মৃত্যু হয় উদীয়মান এই তারকার।
গুফি পেন্টাল – সরবজিৎ সিং পেন্টালকে আমরা গুপি পন্টাল মানেই চিনেছি। মহাভারতরে শকুনির চরিত্রে অভিনয় করে মন জয় করেছিলেন তিনি। ৭৮ বছর বয়সে ২০২৩ সালের ৫ জুন মৃত্যু হয় এই তারকার।
রিও কাপাডিয়া – বলিউডে একটু দেরিতে আত্মপ্রকাশ হলেও যথেষ্ট জনপ্রিয় হন এই অভিনেতা। তবে ৬৬ বছর বয়সে হঠাৎ ১৪ সেপ্টেম্বর মৃত্যু হয় তাঁর।
দীনেশ ফাড়নিশ – নিজের নামের থেকে সিআইডি-র ফ্রেডি নামেই তিনি বেশি জনপ্রিয় ছিলেন। লিভারে সংক্রমণ নিয়ে ভেন্টিলেশনে চলে যাওয়ার পর ৫ ডিসেম্বর মৃত্যু হয় ৫৭ বছর বয়সি এই অভিনেতার।
ম্যাথু পেরি – জনপ্রিয় আমেরিকান কমেডিয়ান ম্যাথু পেরির আচমকাই ২৮ অক্টোবর জাকুজিতে স্নান করার সময় মৃত্যু হয়। চ্যান্ডলার বিঞ্জ-খ্যাত অভিনেতা মাত্র ৫৪ বছর বয়সে চলে যাওয়ার যথেষ্ট রহস্য তৈরি হয়।
লি সান কিউন – অস্কারজয়ী চলচ্চিত্র প্যারাসাইট-এর এই অভিনেতার দেহ উদ্ধার হয় গাড়ির ভিতর থেকে। ২৭ ডিসেম্বর দক্ষিণ কোরিয়ার একটি পার্কে নিজের গাড়িতেই তাঁর মৃত্যুর পর শুরু হয় পুলিশি তদন্ত।
সেলিম দুরানি – আফগানিস্তানে জন্ম নেওয়া এই অলরাউন্ডার ভারতীয় ক্রিকেটকে দীর্ঘদিন সাফল্যের মুখ দেখিয়েছেন। তিনিই ছিলেন প্রথম ভারতীয় অর্জুন পুরস্কার জয়ী ক্রিকেটার। ২০২৩-এর ২ এপ্রিল ৮৮ বছর বয়সে তাঁর মৃত্যু হয়।
সুধীর নায়েক – ভারতীয় ওপেনিং ব্যাটসম্যান দলে খুব বেশি খেলার সুযোগ না পেলেও ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে পিচ তৈরিতে তাঁর অবদান চিরকাল মনে রাখা হবে। ৫ এপ্রিল ৭৮ বছর বয়সে তাঁর মৃত্যু হল।
বিষাণ সিং বেদী – ভারতীয় স্পিন বোলিংয়ের পথিকৃৎ বিষাণ সিং বেদীকে এই বছরই হারিয়েছি আমরা। ১৯৭৬ সালে দলের অধিনায়কও হন তিনি। কিংবদন্তী ক্রিকেটারের ২৩ অক্টোবর ৭৭ বছর বয়সে মৃত্যু হয়।
এস পি হিন্দুজা – হিন্দুজা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা পি ডি হিন্দুজার পুত্র শিল্পপতি এস পি হিন্দুজার সময়েই এই সংস্থার নাম টাটা, বিড়লা, আম্বানীদের পাশে শোনা যেত। প্রসিদ্ধ এই শিল্পপতি ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ১৭ মে ৮৭ বছর বয়সে প্রয়াত হন।
সুব্রত রায় – সাহারা পরিবার গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা ব্যবসায়ী সুব্রত রায়ের মৃত্যু হয় এই বছরই। ব্যবসায় সাফল্য, তারপর বিতর্ক এমনকি জেল যাত্রা সত্ত্বেও ভারতের ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে অবদান রেখে গিয়েছেন ৭৫ বছর বয়সি এই শিল্পপতি। তাঁর মৃত্যু হয় ১৪ নভেম্বর।