আজ থেকে শুরু হচ্ছে মাধ্যমিক। প্রায় সাত লক্ষ পরীক্ষার্থী এবার মাধ্যমিকে বসছে। এই সংখ্যা অন্যান্য বারের তুলনায় বেশ কম। তবে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কম হলেও কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা মোতায়েন থাকবে রাজ্যজুড়ে। ১১টা ৪৫ মিনিট থেকে পরীক্ষা শুরু হবে। তবে পুলিশ ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সকাল ৮টার মধ্যে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে হবে। রাজ্যজুড়ে ২৮৬৭টি কেন্দ্রে পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে এবার। মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, পরীক্ষার প্রথম দিনেও অভিভাবকরা কেন্দ্রের ভিতরে ঢুকতে পারবেন না। সমস্ত কেন্দ্রেই সিট নম্বর এবং অন্যান্য নির্দেশিকা এমনভাবে চিহ্নিত করা থাকবে যাতে পরীক্ষার্থীরা সহজেই তা দেখতে পান। সিংহভাগ পরীক্ষাকেন্দ্রে সিসিটিভি নজরদারি থাকছে। বিশেষ সর্তকতা হিসেবে পরীক্ষার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত শিক্ষক-আধিকারিক সহ পুলিস কর্মীরা মোবাইল ফোন রাখতে পারবেন না। কোনও সিভিক ভলান্টিয়ারকে এবার পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, পরীক্ষা চলাকালীন ইন্টারনেট বন্ধ রাখার পক্ষপাতী নয় তারা। ‘এলিগজাম’ নামে একটি অ্যাপের মাধ্যমে পরীক্ষার সময়ানুবর্তিতা, স্বচ্ছতা এবং সুশৃঙ্খল পরিচালনা নিশ্চিত করার চেষ্টা করবে পর্ষদ। সে কারণে ইন্টারনেট সংযোগের প্রয়োজন। অ্যাডিশনাল ভেনু সুপারভাইজারের কাছে মোবাইল ফোন থাকবে। সেই মোবাইলে এই অ্যাপটি দেওয়া হয়েছে। এতে জিও ট্যাগিং ব্যবস্থা রয়েছে। ফলে যে কোনও অঞ্চলের ছবি সল্টলেকের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বসে দেখতে পাবেন পর্ষদ কর্তারা। এর জন্য পর্ষদে থাকবে ছ’টি ড্যাশবোর্ড। সেখানে মিনিট টু মিনিট আপডেট আসবে। ভয়েস মেসেজ এবং ভিডিও পাঠিয়ে সাম্প্রতিক পরিস্থিতি পর্ষদকে অবহিত করতে পারবেন ভেনু সুপারভাইজাররা। মাধ্যমিকের পাশাপাশি মাদ্রাসাতেও এবার কমেছে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা। জানা গিয়েছে, মাদ্রাসার মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৭৫ হাজার। এর মধ্যে ৬৪ শতাংশ ছাত্রী এবং ছাত্র ৩৬ শতাংশ। গত বছর পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৮১ হাজার। এবার সংখ্যা ছ’হাজার হ্রাস পেয়েছে। মোট ২০৪টি কেন্দ্রে মাদ্রাসা পরীক্ষা হবে। মাধ্যমিকের মতো হাই মাদ্রাসা, আলিম ফাজিলের পরীক্ষাও শুরু আজ থেকে। প্রতিটি কেন্দ্রে সেন্টার সুপার রাখা হয়েছে। পরীক্ষাকেন্দ্রে পুলিসের কড়া নজরদারির ব্যবস্থা থাকছে। প্রশ্নপত্র নিয়ে যাওয়া এবং সেন্টার থেকে নির্দিষ্ট কেন্দ্রে উত্তরপত্র পুলিস পৌঁছে দেবে। মোবাইল, ক্যালকুলেটর সহ অন্যান্য ইলেকট্রনিক্স যন্ত্র নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশ করা যাবে না। মাধ্যমিক পরীক্ষায় যাতে পড়ুয়াদের কোনও রকম অসুবিধা না হয়, তার জন্য পরিবহণের দিকে বিশেষভাবে নজর দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষার আগে ও পরে ভিড় সামলাতে রাস্তা থাকবে সর্বাধিক সরকারি বাস। সকাল ও বিকেলে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ডিপো থেকে ছাড়বে অতিরিক্ত বাস। অন্যদিকে সমস্ত রাস্তায় যাতে ট্রাফিক মসৃণ থাকে, তার জন্য পুলিশ এবং ট্রাফিক কর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে শিয়ালদা ডিভিশনের বেশ কিছু ট্রেনগুলিকে সব স্টপেজে থামতে বলা হয়েছে। সমস্ত পরিবহন সংস্থা এবং বাস ইউনিয়নগুলির কাছে আবেদন জানানো হয়েছে, বেশি সংখ্যায় বাস চালানোর জন্য। বেসরকারি বাস এবং মিনিবাস চালকদের কাছেও একই আবেদন রাখা হয়েছে। পড়ুয়াদের সঠিক সময়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে দিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাছাড়াও যেকোনও অসুবিধা হলে, পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পরীক্ষার্থীদের সাহায্য করার জন্য। বাদ যাচ্ছে না মেট্রোও। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা অবধি, আবার পরীক্ষা শেষে দুপুর ৩টে থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে ৪টে করে অতিরিক্ত মেট্রো। এমনকী, দক্ষিণেশ্বর-কবি সুভাষ রুটে সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা ২০ মিনিট পর্যন্ত ৫-৬ মিনিট অন্তর মিলবে মেট্রো।