কলকাতা

মানুষের এই বৃষ্টি বিজেপিকে ২৪ সালে ভারতবর্ষ থেকে ভাসিয়ে নিয়ে যাবেঃ মমতা

কাকতালীয় ভাবে প্রতিবারই ২১ জুলাই তৃণমূলের শহিদ দিবসের কর্মসূচি চলাকালীন বৃষ্টি হয় ৷ এবারও হয়েছে ৷ এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যখন ভাষণ দিচ্ছিলেন, তখন মুষলধারে বৃষ্টি নামে ধর্মতলায় ৷ অভিষেকের ভাষণ শেষ হওয়ার পর মমতা যখন বলতে ওঠেন, তখন বৃষ্টি থেমে রোদের আলো দেখতে পাওয়া যায় ৷ ঠিক সেই সময়, বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা ৫২ মিনিটে ভাষণ শুরু করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ শুরুতেই বৃষ্টির প্রসঙ্গ টানেন তিনি ৷ বলেন, ‘‘মানুষের এই বৃষ্টি বিজেপিকে ২৪ সালে ভারতবর্ষ থেকে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে”৷ তৃতীয়বার ক্ষমতায় ফেরার পর, ধর্মতলায় তৃণমূলের প্রথম একুশে জুলাইয়ের সমাবেশ । করোনার কারণে দুবছর ভারচুয়ালি পালিত হয়েছে ২১ জুলাইয়ের অনুষ্ঠান। এদিন একুশের মঞ্চ থেকে কেন্দ্রকে হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। সরাসরি বিজেপিকে ক্ষমতা থেকে উৎখাতের ডাক দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । তিনি বলেন, ‘বৃষ্টি দেখে বিজেপি, সিপিএম হেসেছিল। ভেবেছিল তৃণমূলের মিটিংই শেষ হয়ে গেল! চব্বিশে মানুষের বৃষ্টিতে ভেসে চলে

যাবে বিজেপি।’ সভামঞ্চ থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমার মেরুদণ্ড সোজা। মাথা উঁচু করে চলি। ওদের মেরুদণ্ড বাঁকা। একদিকে সিবিআই, আরএকদিকে জিএসটি। বিজেপি সবজায়গায় সরকার ভাঙছে এটাই ওদের কাজ। বাংলাতেও সেই চেষ্টা করেছিল কিন্তু পারেনি। তৃণমূল কংগ্রেস থাকলে ফ্রি তে রেশন পাবেন, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পাবেন, কন্যাশ্রী পাবেন, স্বাস্থ্যসাথী পাবেন, শিল্পীদের পেনশন, সবুজসাথী পাবেন। গ্রাম বাংলার কর্মীদের বলবো মানুষের পাশে দাঁড়াতে। সারা ভারতে ৪৫ শতাংশ বেকারত্ব বেড়েছে আর বাংলায় ৪০ শতাংশ বেকারত্ব কমে গিয়েছে। বাংলায় কৃষকদের আয় সবথেকে বেশি।  মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘আমাদের একদিকে শিল্প, একদিনে কৃষি। ডানকুনি থেকে অমৃতসর করিডোর হচ্ছে। আসানসোল সেল গ্যাস পাওয়া গিয়েছে। দেউচা হয়ে গেলে বিদ্যুতের অভাব বাংলায় হবে না। আমরা বিদ্যুৎ বিক্রি করতে পারব। আদালতে মামলা চলছে তাই নইলে ১৭ হাজার জায়গা খালি আগে শিক্ষক নিয়োগে। আমি জানি রাস্তা কী করে বের করতে হয়। একদিক বন্ধ করলে আরএকদিক খুলে যাবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘কাজ করতে গেলে ভুল হয়। কিন্তু কেউ ইচ্ছে করে ভুল করলে সে শাস্তি পেত। সিপিএমের সময়ে ১০ লক্ষ টাকা ঘুস দিতে হত। এখন রাজ্যে ৫০০ শিল্প পার্ক আছে। পিএফের টাকা কোথায় যাচ্ছে?’ মমতা

বন্দ্যোপাধ্যায় চ্যালেঞ্জ করেছেন, ‘বিজেপি সিঙ্গল মেজরিটি পাবে না। চ্যালেঞ্জ করছি। বিজেপিকে হারাবেন? জীবন দিয়ে লড়াই করবেন? আবার এলাকায় লোক পাঠাতে শুরু করেছে। ভুঁইফোড় নেতা পাঠাচ্ছে। কোথায় যাচ্ছে, কী খাচ্ছে, কী দিচ্ছে, লক্ষ্য রাখবেন।’   মমতার দাবি, ‘গুজরাটের নামে হলে বাংলার নামে কেন প্রকল্প হবে না। বাংলাকে ১০০ দিনের টাকা দিচ্ছে না। প্রয়োজনে দিল্লি ঘেরাও করব। আগামীদিনে নতুন কমিটি তৈরি হলে নতুন প্রকল্প হবে। ইডি-সিবিআই দিয়ে ভয় দেখাবেন না। অবিলম্বে ১০০ দিনের টাকা দিন।’ তৃণমূল নেত্রীর অভিযোগ, মুম্বই ভেঙেছি, হরিয়ানা ভাঙব। এরপর ছত্তিশগড় ভাঙব, বাংলা ভাঙব। বলেছি, বাংলার কথা বলবেন না। এখানে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার আছে। আপনারা জঙ্গলমহল, পাহাড় এখনও দেখেননি। আমি চাইলে অনেকগুলো বিজেপির ভোট নিতে পারতাম আমি কিরিনি। দলের কর্মীদের সাবধান করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ, ‘দলের নামে কেউ চাঁদা তুলবেন না। একুশে জুলাইয়ে দুটি কেস আমার কাছে এসেছে। সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে বিজেপি জোট করবে। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না বিরোধীরা।  ধর্মীয় কার্ড খেলছে বিজপি। অথচ আদিবাসীদের সারনা ধর্মে স্বীকৃতি দিচ্ছে না। তৃণমূলের নামে টাকা তুললে ধরে থানায় নিয়ে যান।’