এবার কলকাতায় গান্ধী মূর্তির পাদদেশে ধরনা তৃণমূলের
কৃষি বিলের বিরোধিতায় গর্জে উঠলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, কৃষি বিল পাশ করার দিন ‘কালা রবিবার’ হয়ে থাকবে দেশের ইতিহাসে। সংসদে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে। কোনও নিয়ম-কানুনের তোয়াক্কা না করে গায়ের জোরে বিল পাশ করানো হয়েছে বলে অভিযোগ বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর। রাজ্য তথা দেশবাসীকে এই বিলের বিরোধিতায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামিকাল থেকে রাজ্যে শুরু হচ্ছে আন্দোলন, জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।সোমবার নবান্ন থেকেই দলের মহিল শাখার নেত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে নির্দেশ দিলেন গান্ধি মূর্তির পাদদেশে ধরনায় বসার। দলের ছাত্র সংগঠন এবং ক্ষেতমজুর ও কিষাণদের সংগঠনকেও পর্যায়ক্রমে পথে নামার নির্দেশ দিয়ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ হিটলারের কায়দায় দেশ চালানো হচ্ছে। ফ্যাসিজম চলছে।’রবিবার রাজ্যসভায় পাশ হয়েছে কৃষি সংক্রান্ত দু’টি বিল। এই বিল পাশ ঘিরে রাজ্যসভায় তুলকালাম হয়েছে। তার জেরে তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন-সহ আট সাংসদকে সাসপেন্ড করেছেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডু। সোমবার এই নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ”সংসদের বাইরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন সাসপেন্ড ৮ সাংসদ-সহ বিরোধীরা। সোমবার সারা দিন-রাত চলবে। মঙ্গলবার সকালে পরবর্তী কর্মসূচি ঠিক করবেন তাঁরা।” দিল্লির পাশাপাশি রাজ্যেও কৃষি বিলের বিরোধিতায় আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা। তিনি বলেন, ”আগামিকাল, মঙ্গলবার গাঁধী মূর্তির পাদদেশে দলের মহিলা নেত্রী-কর্মীরা অবস্থান-বিক্ষোভ করবেন।” তবে করোনা সংক্রমণ এড়াতে সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে কর্মসূচি পালনের নির্দেশ দিয়েছেন দলনেত্রী। এর পর দলের অন্য শাখার নেতা-কর্মীরাও পর পর কর্মসূচি পালন করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। রাজ্য তথা দেশের সাধারণ মানুষ এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকেও আন্দোলনে শামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।মমতা এদিন সমস্ত রাজনৈতিক দলকে আন্দোলন গড়ে তোলার ডাক দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘প্রয়োজনে তৃণমূল কংগ্রেস পিছনের সারিতে থাকবে। কাসর-ঘণ্টা বাজিয়ে শ্লোগান দেবে বিজেপি সরকার আর নেই দরকার।’ দিল্লিতে কৃষি বিল নিয়ে আন্দোলন শুরু হয়েছে। মমতা বলেন, ‘সব রাজনৈতিক দলগুলো এক হয়েছে কৃষক ইস্যুতে। আগামী দিন শ্রমিক ইস্যুতে সব রাজনৈতিক দল এক হবে। শ্রমিকদের ওপর বজ্রাঘাত ও কৃষকদের ওপর প্রত্যাঘাত। সর্বস্তরের মানুষকে প্রতিবাদে সামিল হতে আহ্বান জানাচ্ছি। চন্দ্রিমার নেতৃত্বে তৃণমূল মহিলা কংগ্রেস কয়েকজনকে নিয়ে হলেও কাল গান্ধীমূর্তির পাদদেশে বসে ধরনা দেবে। কাল মহিলারা, পরশু ছাত্ররা, তারপর দিন আমাদের ক্ষেত মজুর কিষান সংগঠন পথে নামবে।’ ‘নেট’ হওয়ার কথা ছিল ২১, ২২ এবং ২৩ অক্টোবর। ২১ তারিখ থেকেই শুরু হয়ে যাচ্ছে দুর্গাপুজো। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বলেন, ”এ রাজ্যের পড়ুয়া-পরীক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখে পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রকে আর্জি জানিয়েছিল তৃণমূল। সেই আর্জি মেনে ওই পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তে সায় দিয়েছে কেন্দ্র।”