রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধের জেরে বিপাকে বাংলার ৪২২জন পড়ুয়া সহ আরও কয়েকজনের যারা কাজের জন্য ইউক্রেনে গিয়েছিলেন। অনিশ্চিত ভবিষ্যত নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন তারা। প্রথম থেকেই কেন্দ্রীয় সরকার এদের প্রতি বিমাতৃসুলভ আচরণ করে চলেছে। একই সঙ্গে ইউক্রেনের এই পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়াতে দেখা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই। বৃহস্পতিবারও তার ব্যতিক্রম হল না। মমতার আঁচলের তলায় সুরক্ষিত হল ইউক্রন ফেরত ৪২২জন পড়ুয়া ও ২জন যুবকের ভবিষ্যত। এদিন নবান্নে এক সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী এদের বিষয়ে রাজ্য সরকারের গৃহীত সিদ্ধান্তের কথা জানানোর পাশাপাশি কেন্দ্রের মনোভাব নিয়েও সরব হয়েছেন। এদিন মুখ্যমন্ত্রী নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে জানান, ‘ইউক্রেন থেকে এ রাজ্যের মোট ৪২২জন পড়ুয়া ফেরত এসেছে। এদের মধ্যে ৪১২জন মেডিকেল পড়ুয়া। ৬জন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পড়ুয়া। ৪জন ছিলেন এমন যারা ইন্টার্নশিপ করছিলেন ইউক্রেনে। আমরা ওদের সঙ্গে গত ১৬ মার্চ ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে বসেছিলাম। সেখানেই ওদের ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বেগ চোখে পড়েছিল। কেন্দ্র তো কিছুই করছে না। আমরা বলেছিলাম ওরা যাতে দেশের মেডিকেল কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে পড়া শেষ করার সুযোগ পায়। কিন্তু কেন্দ্র তা কানেও তোলেনি। তবে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ এরপরেই মুখ্যমন্ত্রী জানান, ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়াদের একটি বেসরকারি সংস্থার কলেজে পড়া শেষ করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে প্রথম থেকে ষষ্ঠ বর্ষের মোট ৪২২জন মেডিকেল পড়ুয়াদের এই রাজ্যের সরকারি মেডিকেল কলেজগুলিতে পড়া শেষের ব্যবস্থা করে দেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে ইউক্রেনে যারা ইন্টার্নশিপ করছিলেন সেই ৪জনকে এখানকার সরকারি হাসপাতালে ইনটার্নশিপ শেষ করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। ইউক্রেন থেকে ফেরত আসা ২ যুবককে দুজন জেলা শাসকের দফতরে কাজের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে তাঁদের পরিবারকে ঋণও দেওয়া হচ্ছে যাতে তাঁরা ব্যবসা করে ইউক্রেনে পড়ার খরচের জন্য নেওয়া ঋণ শোধ করতে পারেন। একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী এদিন ইউক্রেনের পড়ুয়াদের নিয়ে কেন্দ্র সরকারের মনোভাবকেও একহাত নেন। তিনি বলেন, ‘ইউক্রেন থেকে দেশে ফেরা পড়ুয়াদের জন্য কোনও পদক্ষেপ করেনি কেন্দ্র। সেখান থেকে আসা শ্রমিকদেরও কোনও ব্যবস্থা হয়নি। আমরা এদের সাহায্য করার চেষ্টা করেছি। ইউক্রেন থেকে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে যে সমস্ত পড়ুয়ারা মাঝপথে পড়া বন্ধ করে দেশে ফিরেছেন, তাঁদের জন্য এখানকার কলেজে পড়াশোনার ব্যবস্থা করেছি। আমরা না দেখলে দেখবে কে? এখন তো কত ছেলেমেয়ে বিদেশে পড়তে যায়। যুদ্ধ হওয়ার জন্য তো ওরা দায়ী নয়। তাই আমরাই যা করার করে দিচ্ছি।’