ক্ষমতা এলে মহিলাদের প্রতিমাসে ৫০০ টাকা করে হাতখরচ দেব
বাঁ পায়ে গুরুতর চোট পেয়ে মাঝে কয়েক দিনের বিরতি। সোমবার থেকে ফের প্রচারে মমতা ব্যানার্জি। ভরসা হুইল চেয়ার। তাতে যদিও খুব একটা কিছু আটকাচ্ছে না। গড়ে রোজ প্রায় তিনটি সভা করছেন মুখ্যমন্ত্রী। আজ তাঁর লক্ষ্য পূর্ব মেদিনীপুর। সেখানকার এগরা, পটাশপুর, মেচেদায় সভা রয়েছে মমতার। তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতা এলে মহিলাদের প্রতি মাসে ৫০০ টাকা করে হাতখরচ দেবে ৷ এগরার সভা থেকে এ কথাই বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ৷ পাশাপাশি আরও বেশকিছু প্রতিশ্রুতির কথা শুনিয়েছেন তিনি ৷ স্বপ্ন দেখিয়েছেন কর্মসংস্থানের ৷ এছাড়া তিনি এও বলেন, বারো ক্লাসে উঠলেই Tab বা স্মার্টফোন কেনার জন্য পড়ুয়ারা পাবে ১০ হাজার টাকা। এ দিনের সভায় ফের দলবদল করা নেতাদের একহাত নেন তৃণমূল নেত্রী ৷ ‘তৃণমূলের গদ্দার’দের জন্যই মানুষ কিছু ক্ষেত্রে পরিষেবা পাননি বলে দাবি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ৷ তিনি বলেন, “গদ্দাররা বেইমানি করেছে ৷ তাই আপনারা কিছু পরিষেবা পাননি ৷ এ বার সব সরাসরি কাজকর্ম হবে ৷” দলবদল করে বিজেপিতে যোগ দেওয়া নেতাদের ফের মীরজাফর বলে তোপ দেগেছেন মমতা ৷ তাঁর কথায়,মনে রাখবেন, যাঁরা গদ্দার, মিরজাফর তাঁরা আজকে বিজেপি–র প্রার্থী। বিজেপি–র পুরনো প্রার্থীরা আজ ঘরে বসে কাঁদছে। আর কিছু সিপিএম–এর হার্মাদ আর তৃণমূল থেকে কিছু চোর–চোরটা চিটিংবাজ গিয়েছে। সেখানে গিয়ে ছড়ি ঘোরাচ্ছে।” এ দিন ফের সরকারের কন্যাশ্রী, শিক্ষাশ্রী, রূপশ্রী, বিনামূল্যে রেশন, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের কথা মনে করিয়ে দিয়ে মমতা জানান, আগামী দিনে সরকার ক্ষমতায় এলে বছরে দু বার করে হবে দুয়ারে সরকার ৷ বিনামূল্যে রেশন পৌঁছে যাবে ঘরে ঘরে ৷ পাশাপাশি তাঁর ঘোষণা, “বাড়িতে ছেলেরা ও মেয়েরা কাজ করলেও অনেক সময় দেখা যায় মেয়েদের হাতে কোনও হাত খরচ থাকে না ৷ সেই কারণে আমরা সরকারে এসে মহিলাদের সাহায্য করার জন্য সব মহিলাদের মাসে .৫০০ টাকা করে হাতখরচ দেব ৷ তপশিলি জাতির মানুষেরা পাবেন এক হাজার টাকা ৷ এ ছাড়াও ছাত্রছাত্রীদের নামে ১০ লক্ষ টাকার অ্যাকাউন্ট করে দেব ৷ মাত্র ৪ শতাংশ সুদে ৷ যাতে সন্তানের পড়াশোনা খরচ নিয়ে বাবা-মায়ের আর চিন্তা করতে না-হয় ৷ সেই টাকা দিয়েই ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, আইনজীবী হবে ছাত্রছাত্রীরা ৷ আগামী দিনে শিক্ষক নিয়োগ দ্বিগুণ করা হবে ৷ এর ফলে প্রচুর মানুষ চাকরি পাবেন ৷” দীঘায় বন্দর তৈরি করেও প্রচুর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী ৷ এ দিনের সভাতেও তাঁর পায়ের আঘাতের প্রসঙ্গ টেনে এনে বিরোধীদের ঘাড়েই দোষ চাপান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তিনি বলেন, “আমাকে ওরা প্রচুর মেরেছে ৷ মাথায় মেরেছে ৷ ব্রেনে অপারেশন হয়েছে ৷ হাতে মেরেছে, কোমরে মেরেছে , চোখে মেরেছে ৷ বাকি ছিল পা ৷ তাই এ বার ভাবল পায়ে মারি, আর তাহলে ভোটের প্রচারে বেরোতে পারবে না ৷ তবে আমার যখনই পায়ে যন্ত্রণা হয়, তখনই ভাবি মা-বোনেদের পা গুলোই আমার শক্তি ৷”হাথরসের প্রসঙ্গ টেনে এনে মমতা এ দিন বিজেপিকে একহাত নিয়েছেন ৷ তাঁর অভিযোগ, বিজেপির শাসন যেখানে রয়েছে, সেখানে মহিলারা সুরক্ষিত নন ৷ তবে এ দিনের প্রচারে শুধু বিজেপিই নয়, বামেরাও ছিল তৃণমূল নেত্রীর নিশানায় ৷