গত কয়েকদিন ধরে অভিনেত্রী তথা তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহানের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবর নিয়ে চলছে তীব্র জল্পনা। স্বামী নিখিল জৈনর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হওয়ার আগেই অভিনেতা যশের সন্তানের মা হতে চলেছেন অভিনেত্রী, জল্পনা এমনটাই। এ নিয়ে তাঁর স্বামী নিখিল জৈন বলেছিলেন, যদি খবরটা সত্যি হয়, তবে অভিনেত্রীর সন্তানের পিতা তিনি নন ৷ কারণ তাঁরা দীর্ঘদিন একসঙ্গে থাকেন না ৷ নুসরতের সন্তানসম্ভবা হওয়া খবরে স্বাভাবিকভাবেই জড়িয়ে যায় অভিনেতা যশ দাশগুপ্তের নাম ৷ গত
কয়েক মাসের গতিবিধিতে তিনিই এখন নুসরতের চর্চিত বয়ফ্রেন্ড ৷ তবে জলপ্নার জল ঘোলা হলেও মুখে কুলুপ এঁটে ছিলেন নুসরত। অবশেষে মুখ খুললেন সাংসদ অভিনেত্রী। বড়সড় বিবৃতি দিয়ে তিনি জানালেন, নিখিল জৈনের সঙ্গে আইনীভাবে বিয়েই হয়নি তাঁর ৷ তাই বিবাহবিচ্ছেদের প্রশ্নই নেই ৷ তবে বিবৃতিতে তাঁর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবর নিয়ে কোনও কথা বলেননি বসিরহাটের সাংসদ ৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় নয়, সাংবাদিকদের বিবৃতি পাঠিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন নুসরত ৷ তিনি লিখেছেন, “তুরস্কের
বিয়ের আইন অনুযায়ী বিদেশের ওই অনুষ্ঠান অবৈধ ৷ আর যেহেতু এটা দুই ধর্মে বিয়ে, সে জন্য এটি বৈধতা পেতে স্পেশ্য়াল ম্যারেজ অ্যাক্টের স্বীকৃতি প্রয়োজন, যেটা ঘটেনি ৷ আইন অনুযায়ী এটা কোনও বিয়ে নয় ৷ এটা একটা সম্পর্ক অথবা একটা লিভ-ইন সম্পর্ক ৷ সুতরাং বিবাহবিচ্ছেদের প্রশ্নই ওঠে না ৷ দীর্ঘদিন হল আমরা আলাদা আছি ৷ তবে এ নিয়ে কখনও কিছু বলিনি, কারণ আমার ব্যক্তিগত জীবন নিজের কাছেই রাখতে চেয়েছি ৷ তাই আমার সঙ্গে জড়িত কেউ বা কোনও সংবাদমাধ্যম এই
সেপারেশনের ভিত্তিতে আমার কাজকর্ম নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে না ৷ এই বিয়ে বেআইনি ও অবৈধ ৷” সেপারেশনের পরও নিখিল জৈন তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলেছেন বলে বিবৃতিতে অভিযোগ করেছেন নুসরত জাহান ৷ তাঁর কথায়, “আমার বোন ও পরিবারের সব খরচ প্রথম দিন থেকে আমিই চালাই ৷ কারণ এটা আমার দায়িত্ব ৷ এ জন্য কারও ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করার কোনও প্রয়োজন আমার নেই ৷ যিনি নিজেকে ধনী বলে দাবি করেন এবং বলেন আমি তাঁকে ব্যবহার করেছি, তিনি সেপারেশনের
পরও আমার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে বেআইনিভাবে টাকা তুলছেন ৷ ইতিমধ্যে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করেছি এবং শিগগিরই এ ব্যাপারে পুলিশে অভিযোগ জানাব ৷ আমাকে না জানিয়ে তিনি আমার বিভিন্ন অ্যাকাউন্টের অপব্যবহার করেছেন ৷ এ জন্য প্রয়োজনে আমি প্রমাণও দাখিল করতে পারি ৷ এখনও আমার জামাকাপড়, ব্যাগ, জিনিসপত্র তাঁর কাছেই রয়েছে ৷ আমার পরিবার, বন্ধুবান্ধবদের থেকে পাওয়া সব গয়না ও আমার কষ্টের সম্পত্তি এখনও ওদের কাছেই আছে ৷ আমি কঠিন
পরিশ্রম করে নিজের পরিচয় তৈরি করেছি ৷ তাই আমার পরিচয় ব্যবহার করে কেউ জনপ্রিয় হবে, ফলোয়ার বাড়াবে এটা আমি হতে দেব না ৷” নিখিল যেখানে এখন আর তাঁর সঙ্গে যুক্তই নন, তাই তাঁর বিষয়ে নিখিলকে যাতে প্রশ্ন না করা হয়, সেই আর্জি জানিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ ৷ তবে গোটা বিবৃতিতে কোথাও নিখিলের নাম উল্লেখ করেননি তিনি। ভাববাচ্যে লেখা গোটা বিবৃতি। এতদিন নিজের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটে থাকলেও অবশেষে নিজের বক্তব্য রাখলেন নুসরত। স্বামী নিখিলকে
নিয়ে নুসরতের এই বক্তব্য সামগ্রিক প্রেক্ষাপটের ভিত্তিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও বিবৃতিতে কোথাও নিজের সন্তানসম্ভবা হওয়ার বিষয়ে কোনও কথা উল্লেখ করেননি নুসরত। অভিনেত্রীর এই লম্বা বিবৃতি সামনে আসার পর নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে। খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে তুরস্কে হওয়া নুস্রত এবং নিখিলের বিলাসবহুল বিয়ের অনুষ্ঠান নিয়ে। প্রি-ওয়েডিং শ্যুট থেকে বিয়ের সব রীতি, সমস্তটাই সকলের সামনে করেছিলেন তাঁরা। বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-পরিজন সকলকে সাক্ষী রেখেই ১৯ জুন ২০১৯-এ আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে করেন নিখিল-নুসরত। পরে কলকাতায় এসে আইটিসি
রয়েল বেঙ্গলে বিয়ের রিসেপশন পার্টিও দেন। যেখানে টলিউডের তারকা বন্ধুদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল কংগ্রেসের বহু আমলা মন্ত্রীরাও। এখন প্রশ্ন উঠছে এসবই কী তবে লিভ-ইন রিলেশনে যাচ্ছেন বলে করেছিলেন সাংসদ অভিনেত্রী নুসরত জাহান! শুধুমাত্র লিভ-ইন করবেন বলেই বিতর্ক সৃষ্টি করে সিঁথিতে সিন্দুর পরেছিলেন বসিরহাটের সাংসদ! এই সব প্রশ্নের উত্তর এখন সময়ই দেবে। ভবিষ্যতে নিখিল জৈন এবং নুসরত জাহানের সম্পর্কের কোন সমীকরণ সামনে আসে সেটাই এখন দেখার।