ফের রাজ্যসভায় নয়া ইনিংস শুরু করতে পারেন মুকুল রায়। ইঙ্গিত আগেই মিলেছিল। রাজ্যসভায় তৃণমূলের সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদী একুশের বিধানসভা নির্বাচনের মুখে নাটকীয় ভাবে পদত্যাগ করেছিলেন। সেই আসন এখনও ফাঁকা আছে। আগামী ৯ আগস্ট সেই আসনে নির্বাচনের দিনক্ষন ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। এছাড়া তৃণমূলের অপর এক রাজ্যসভার সাংসদ মানস ভুঁইয়াও তাঁর রাজ্যসভার আসন থেকে পদত্যাগ করেছেন রাজ্যে মন্ত্রী হওয়ার কারনে। সেই আসনে অবশ্য কনে নির্বাচন হবে রা কমিশন যানায়নি। তবে শোনা যাচ্ছে এই ২ আসনের মধ্যে একটিতে দেশের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী যশোবন্ত সিনহার নাম কার্যত পাকা হয়েই গিয়েছে। অপর আসনে মুকুল রায়ের নাম ঘোরাফেরা করছে। এখন দেখার বিষয় ৯ তারিখে যে আসনে নির্বাচন হতে চলেছে সেখানে যশোবন্তের নাম থাকে নাকি মুকুলের। তবে এর পাশাপাশি এটাও জানা গিয়েছে মুকুল রাজ্যসভায় প্রার্থী হলে তাঁর ছেড়ে যাওয়া আসনে তৃণমূলের প্রার্থী হতে পারেন মুকুলপুত্র শুভ্রাংশু রায়। মুকুল বিজেপির হয়ে বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে কৃষ্ণনগর উত্তর আসন থেকে জয়ী হয়েছেন। কিন্তু পরে তিনি ফিরে এসেছেন তৃণমূলেই। সঙ্গে ছেলে শুভ্রাংশুকেও এনেছেন। যদিও খাতায় কলমে মুকুল রায় এখনও বিজেপিরই বিধায়ক। রাজ্য বিধানসভায় তিনি এখন পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যানও। কিন্তু বিজেপি যেমন এখন তাঁকে আর দলীয় বিধায়ক হিসাবে মানে না তেমনি তাঁকে পিএসি’র চেয়ারম্যান পদেও মানতে চাইছে না। বরঞ্চ বিজেপি এখন কলকাতা হাইকোর্টে জোড় মামলা ঠুকছে মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ বাতিল করার আর্জি নিয়ে। একই সঙ্গে থাকছে আর্জি তাঁকে পিএসি’র চেয়ারম্যান পদ থেকে সরানোর জন্যও। এই দুই মামলা যে চট করে নিষ্পত্তি হবে একথা জোর দিয়ে বলা যাচ্ছে না। কেননা যাদেরই রায় পছন্দ হবে না তাঁরাই উচ্চ আদালতে যাবেন। শেশগে হয়তো বিষয়টি সাংবিধানিক বেঞ্চে গড়াবে। সেখানেই এই দুই বিষয়ে স্পষ্ট মত মিলতে পারে। তবে তার আগেই মুকুলকে রাজ্যসভায় পাঠিয়ে দিতে পারে তৃণমূল। এই পরিকল্পনার পিছনে বিজেপিকে পাল্টা চাপে রাখার পথই নিতে চলেছে রাজ্যের শাসক দল। এক তো মুকুল রাজ্যসভায় ফিরলে তাঁকে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিতে হবে। আর সেক্ষেত্রে পিএসি’র চেয়ারম্যান পদ থেকেও ইস্তফা দেবেন তিনি। ফলে মুকুলের এই ঘটনা তুলে ধরে লোকসভায় তৃণমূল চাপ বাড়াবে শিশির অধিকারী ও সুনীল মণ্ডলের সাংসদ পদ খারিজের জন্য। আবার মুকুলের ছেড়ে যাওয়া কৃষ্ণনগর উত্তর আসনে শুভ্রাংশু রায়কে তৃণমূল প্রার্থী করে তাঁকে বিধানসভায় ফেরত পাঠাবে। তাতে রায় পরিবারের আগেকার গুরুত্ব ফের ফিরে আসবে তৃণমূলের অন্দরে। পাশাপাশি রাজ্য রাজনীতিতে তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ হিসাবে রায় পরিবারের গুরুত্ব বাড়বে যা সন্দেহ নেই অধিকারীদের গাত্রদাহ অনেকাংশেই বাড়িয়ে দেবে। একই সঙ্গে এটাও শোনা যাচ্ছে বিজেপির যেসব বিধায়ক তৃণমূলে আসতে চাইছেন বা তলে তলে যোগাযোগ রাখছেন তাঁদেরই কাউকে পিএসি’র চেয়ারম্যান পদে বসিয়ে দেবে শাসক পক্ষ। এবার অন্তত দিলীপ ঘোষ বা শুভেন্দু অধিকারী ঘনিষ্ঠ কিংবা দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের প্রতি আস্থাভাজন এমন কোনও বিজেপির বিধায়ককে এই পদ পেতে দেওয়া হবে না।