রাজতন্ত্র বনাম গণতন্ত্রের লড়াইয়ে অশান্ত প্রতিবেশী দেশ নেপাল ৷ রাজধানী কাঠমাণ্ডুর কয়েকটি জায়গায় কার্ফু জারি করা হয়েছে ৷ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে রাজধানীতে সেনা নামানো হয়েছে ৷ দেশে রাজতন্ত্র ফিরিয়ে আনার দাবিতে রাজতন্ত্রের সমর্থক রাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র পার্টি (আরপিপি) এবং অন্য কয়েকটি দল রাজধানী কাঠমাণ্ডুর রাস্তায় বিক্ষোভ প্রদর্শন করে ৷ ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয় ৷ পুলিশের দেওয়া ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করে ৷ অবস্থা আয়ত্তের বাইরে চলে যাওয়ায় রাজতন্ত্রের সমর্থকদের দিকে টিয়ার গ্যাস ও জলকামান ছুড়ল পুলিশ ৷ শূন্যে কয়েক রাউন্ড গুলিও চালাতে হয়েছে পুলিশকে ৷ এই সংঘর্ষের ঘটনায় ২জনের মৃত্যু হয়েছে ৷ আহত হয়েছেন ৩০ জন ৷ নেপাল সরকার দুর্নীতিগ্রস্ত ৷ তাই রাজতন্ত্র ফিরে আসুক ৷ এই দাবিতে টিনকুনে এলাকায় এদিন হাজার হাজার রাজতন্ত্রের সমর্থক রাস্তায় নামে ৷ নেপালের জাতীয় পতাকা ও দেশের প্রাক্তন রাজা জ্ঞানেন্দ্র শাহের ছবি হাতে বিক্ষোভকারীরা ‘রাজা আসুন, দেশ বাঁচান’, ‘দুর্নীতিগ্রস্ত সরকার’, ‘আমরা রাজতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে চাই’- স্লোগান দিতে থাকে ৷ এই মিছিলে অনেকে আবার জ্ঞানেন্দ্র শাহের পাশাপাশি উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের ছবি তুলে ধরেন ৷ ভিড় বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে দেয় বলে অভিযোগ ৷ ব্যারিকেড টপকানোর চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের পথ আটকায় ৷ তখন পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছুড়তে থাকে রাজতন্ত্রের সমর্থকরা ৷ এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, পুলিশের সঙ্গে জনতার এই হিংসার ঘটনায় একজন আহত হয়েছেন ৷ এই অবস্থায় রাজতন্ত্রের সমর্থক এবং বিরোধীদের মধ্যে সংঘর্ষ রুখতে কাঠমাণ্ডুজুড়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে ৷ নিউ বানেশ্বর এলাকায় যাওয়ার পথে বহু তরুণকে আটক করে পুলিশ ৷ পুলিশ জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীরা বাড়ি, ঘর, দোকান, হাসপাতাল, রাজনৈতিক দলের কার্যালয় এবং শপিং মলে ভাঙচুর চালায়। এমন কি পুলিশের আগ্নেয়াস্ত্রও ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে বিক্ষোভকারীরা। এই অশান্তির পর মোট ১০৫ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এদিকে দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা কমিউনিস্ট পার্টি অফ নেপাল (মাওবাদী সেন্টার)-এর প্রধান পুষ্পকমল দহল হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, রাজতন্ত্রের বাহিনীরা যেন স্বাধীনচেতা নেপালবাসী এবং দেশের রাজনৈতিক দলগুলিকে দুর্বল না ভাবে ৷ রাজা জ্ঞানেন্দ্র শাহ যেন ফের একই ভুল না করেন ৷ তিনি প্রচণ্ড নামেই অধিক পরিচিত।
