নেতাজির জন্মজয়ন্তীতে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান ঘিরে বঙ্গ রাজনীতিতে রাজনৈতিক টানাপোড়েন অব্যাহত।প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, বিজেপির কর্মী–সমর্থকরা, যাঁরা ওইদিন ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান তুলেছিলেন, তাঁরা ওই অনুষ্ঠানে ঢুকলেন কী করে? গেরুয়া শিবির সূত্রেই খবর, অনুষ্ঠানে ঢোকার জন্য আমন্ত্রণপত্রের প্রয়োজন ছিল, তা নাকি দলের নিচুতলার কর্মী–সমর্থকদের মধ্যে মুড়ি মুরকির মতো বণ্টন করা হয়েছে। এক সূত্র জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সংস্কৃতিমন্ত্রক থেকে বিজেপি সাংসদদের গুচ্ছগুচ্ছ ‘ইনভিটেশন কার্ড’ (আমন্ত্রণপত্র) দেওয়া হয়েছিল। প্রায় ৩০০–৪০০টি করে। সেই কার্ডই নাকি দলীয় কার্যালয় থেকে বিজেপি কর্মী–সমর্থকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এমনকী মণ্ডল কমিটির সদস্যরাও নাকি সেই কার্ড পেয়েছেন, যাঁরা হয়ত জানেনই না, ওই ধরনের সরকারি অনুষ্ঠানে কীরকম আচরণ করা উচিত!
শনিবারের ‘অপ্রীতিকর’ ঘটনা ঘিরে কার্যত দ্বিধাবিভক্ত গেরুয়া শিবির। নেতাদের একাংশ জানিয়েছেন, ‘শিক্ষিত’ বিজেপি কর্মীরা ওই অনুষ্ঠানে গেলে হয়ত এই ঘটনা ঘটত না। ওই অনুষ্ঠানে অতিথিদের সামলানোর দায়িত্বে ছিলেন বিজেপির যুব মোর্চার নেত্রী রিমঝিম মিত্র। তাতে প্রশ্ন উঠেছে, কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক আয়োজিত একটি সরকারি অনুষ্ঠানের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব কেন দেওয়া হয়েছে বিজেপি নেতা–কর্মীদের? গোটা ঘটনার বিরোধিতা করেছেন বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য। বলেন, ‘এই অনুষ্ঠানে জয় শ্রী রাম স্লোগান তোলা উচিত হয়নি, এটা ঠিকই। দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটেছে। এখানে কাউকে ছোট বা বড় করার কিছু নেই!’ যদিও ঘটনার পর মুখ্যমন্ত্রীকেই আক্রমণ করে বঙ্গ বিজেপির পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় টুইটারে লেখেন, ‘জয় শ্রী রাম ধ্বনি দিয়ে স্বাগত জানানো হয়েছে বলে এই বিষয়টাকে অপমান হিসেবে দেখছেন মুখ্যমন্ত্রী। এটা কী ধরনের রাজনীতি!’ পাল্টা জবাবে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চ্যাটার্জি বলেন, ‘এখন যদি কৈলাসবাবুর কাছ থেকে বাংলার সংস্কৃতির পাঠ নিতে হয়, তাহলে এই বাংলার আর কোনও ঐতিহ্য থাকবে না। গরিমা থাকবে না। সাহিত্য–সংস্কৃতির বাংলা থাকবে না। আজ যে ঘটনাটা ঘটেছে, তা গোটা জাতির পক্ষে লজ্জাজনক। বাংলার মাথা হেট করে দিয়ে গেছেন।