ভূমিকম্পের জেরে বিপর্যস্ত মায়ানমার । পাল্লা দিয়ে ক্রমশ বেড়েই চলেছে মৃতের সংখ্যা। ইতিমধ্যেই মায়ানমারে মৃতের সংখ্যা ১৭০০ পেরিয়ে গিয়েছে । আহত ৩৪০০। বিভিন্ন এলাকায় পুরোদমে চলছে উদ্ধার অভিযান। তবে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা এবং সেতুর কারণে অনেক জায়গায় পৌঁছতে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে উদ্ধারকারীদের। এই পরিস্থিতিতে সামরিক জুন্টা সরকারের বিরোধী গোষ্ঠী একতরফাভাবেই সাময়িক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে মায়ানমারে। শনিবার রাতে জুন্টা বিরোধীদের সশস্ত্র শাখা পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের তরফে ঘোষণা করা হয়েছে, রবিবার থেকে ভূমিকম্প বিধ্বস্ত এলাকায় আগামী দু’সপ্তাহের জন্য যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকবে। ভূমিকম্প কবলিত এলাকায় উদ্ধার অভিযানে এবং ত্রাণ সামগ্রী সুষ্ঠুভাবে পৌঁছে দিতেই এই পদক্ষেপ। অন্যদিকে, মায়ানমারের সামরিক সরকার শনিবার ঘোষণা করেছে যে, ভূমিকম্পে সে দেশে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১,৬৪৪। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩,৪০৮ জন। পাশাপাশি ভূমিকম্পের তীব্রতার প্রভাব পড়েছে ৯০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ডেও। সেদেশের রাজধানী ব্যাংককেও ভেঙে পড়েছে একটি নির্মীয়মাণ ৩০ তলা বিল্ডিং সহ একাধিক বহুতল, সেতু। ওই নির্মীয়মাণ ৩০ তলা বিল্ডিং ভেঙে ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের। এখনও ৪০ জনেরও বেশি আটকে রয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। শুক্রবার পরপর জোরালো ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে মায়ানমার। প্রথম দুটি ভূমিকম্পে রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.২, ৭। ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার বেলা ১১টা ৫০ মিনিট নাগাদ প্রথম ভূমিকম্প অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.২। প্রথমটির উৎপত্তিস্থল মায়ানমারের বার্মার ১২ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। ভূমিকম্পের গভীরতা ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে। এরপর দ্বিতীয় ভূমিকম্প অনুভূত হয়, ১২টা ২ মিনিট নাগাদ। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ৭। দ্বিতীয়টির উৎপত্তিস্থল মায়ানমারের লকসকের ১৫১ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত। এরপর ক্রমাগত আফটার শক অনুভূত হয়েছে মায়ানমারে। ভূমিকম্পে মায়ানমারে দু’টি সেতু ভেঙে গিয়েছে। মান্দালয় শহর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে একটি মসজিদ ভেঙে মৃত্যু হয়েছে অনেকের। ভেঙেছে একাধিক বাড়ি। ভূমিকম্পের পর সাগাইং, মান্দালয়, ম্যাগওয়ে, বাগো, ইস্টার শান রাজ্য এবং রাজধানী নেপিডোতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। ভূমিকম্পে বিপর্যস্ত পড়শি দেশের রাজধানী ব্যাংককেও জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।
