কলকাতা

ফের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আঘাত কেন্দ্রের! মুখ্যমন্ত্রীকে এড়িয়ে ডিএমদের সঙ্গে কোভিড-বৈঠক প্রধানমন্ত্রীর

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ৪ চিঠি নিয়ে কুলুপ

টিকাকরণ এবং অক্সিজেনের দাবিতে বারবার প্রধানমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছেন একাধিক অবিজেপি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা। এদিনও ১২ জন বিরোধী নেতা মিলিতভাবে চিঠি দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদিকে। যদিও পত্রাঘাত পর্বে অন্যতম অবশ্যই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বিগত কয়েকদিনে নরেন্দ্র মোদিকে চারটি চিঠি পাঠিয়েছেন। অথচ প্রধানমন্ত্রী উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন অনুভব করেননি। উল্টে মুখ্যমন্ত্রীদের এড়িয়ে এবার সরাসরি জেলাশাসকদের সঙ্গে কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে ভিডিও-বৈঠক ডেকেছেন তিনি। আগামী সপ্তাহে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় হবে ওই বৈঠক। ৯টি রাজ্য এবং একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৫৪টি জেলার ডিএমকে সেখানে হাজির থাকার নির্দেশ এসেছে বুধবার। তালিকায় রয়েছেন বাংলার ন’জন জেলাশাসক। প্রধানমন্ত্রী এড়াতে চাইলেও মানুষের স্বার্থে নাছোড় মনোভাব দেখাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিনও সকালে নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলিকে দিয়ে টিকা উৎপাদনের প্রস্তাব দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের পক্ষ থেকে এদিনই জেলাশাসকদের নিয়ে বৈঠকের নোটিস পাঠানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলির মুখ্যসচিব এবং কোভিড ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বে আধিকারিকদেরও বৈঠকে অংশ নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন পিএমও-র ডিরেক্টর রাজেন্দ্র কুমার। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিবকে এই প্রসঙ্গে একটি প্রেজেন্টেশনও আগামী ১৯ তারিখের মধ্যে জমা দিতে হবে। মূলত সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা বিচার করে এই ৫৪টি জেলাকে বাছা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। পশ্চিমবঙ্গ থেকে ডাকা হয়েছে কলকাতা, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব মেদিনীপুর, নদীয়া, বীরভূমের ডিএমকে। রাজ্যে সর্বাধিক সক্রিয় আক্রান্ত এই ৯ জেলাতেই। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় মুখ্যমন্ত্রীকে টপকে এভাবে জেলাশাসকদের মিটিং করার নজির কম। যদিও ক্ষমতায় এসে একাধিকবার এই চেষ্টা করেছে নরেন্দ্র মোদি সরকার। যদিও পশ্চিমবঙ্গ সরকার সেই প্রচেষ্টা এড়িয়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিষয়টিকে ‘কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ চাপিয়ে দেওয়া’ আখ্যা দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন রাজীব গান্ধী একবার ডিএমদের দিল্লি ডেকে পাঠিয়েছিলেন। ঘোষণা করেছিলেন ‘পিএম টু ডিএম, মাইনাস সিএম’ নীতি। তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার বিষয়টির তীব্র বিরোধিতা করে। কোভিড পরিস্থিতিতে নরেন্দ্র মোদিও সেই পথেই হাঁটছেন।
এদিকে, এদিন টিকার বিপুল চাহিদা মেটাতে চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দরবার করেছেন মমতা। লিখেছেন, দেশজুড়ে বিপুল চাহিদা মেটাতে বিদেশি সংস্থাগুলিকে দিয়ে টিকা উৎপাদন বা দেশে তাদের শাখা খোলা যেতে পারে। তাতে দ্রুত ভ্যাকসিন আমদানি করা যাবে। সেক্ষেত্রে টিকা উৎপাদনের কারখানার জন্য জমিও দিতে পারে রাজ্য।
অন্যদিকে, করোনা পরিস্থিতিতে উত্তরপ্রদেশের দিক থেকে বিহারে মৃতদেহ ভেসে আসার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গঙ্গা অববাহিকায়। বিহার-ঝাড়খণ্ড হয়ে এমন অনেক দেহ রাজ্যে প্রবেশ করতে পারে বলেও আশঙ্কা নবান্নের। তাই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ গিয়েছে মালদহের জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্রের কাছে।