অগ্নিগর্ভ মণিপুর। সংসদে বর্ষাকালীন অধিবেশনের প্রথমদিনেই অনাস্থা প্রস্তাব আনে বিরোধীদের ইন্ডিয়া জোট। শুধু তাই নয়, বিরোধীদের সেই অনাস্তা প্রস্তাব গ্রহণ করতে কার্যত বাধ্য হন লোকসভা স্পিকার। সংসদের অনাস্তা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার শেষদিন ছিল আজ, বৃহস্পতিবার। এদিন অবশেষে নীরবতা ভাঙলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মণিপুর নিয়ে আনা অনাস্থা প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জবাবি ভাষণের মাঝপথেই ওয়াক আউট করল বিরোধীরা। তার পরে প্রায় ঘন্টাখানেক ধরে বিরোধী শূন্য লোকসভাতে ভাষণ দিয়ে গেলেন প্রধানমন্ত্রী। যে মণিপুরের জাতি হিংসা নিয়ে অনাস্থা আনা হয়েছে, সেই মণিপুর নিয়ে বলার জন্য মিনিট পাঁচেক সময় ব্যয় করলেন মোদি। মোদির ভাষণের মধ্যেই বিরোধী সাংসদরা টিপ্পনি ছুড়ে বলেন, ‘মণিপুর নিয়ে বলুন। মণিপুর নিয়ে বলুন’। কিন্তু নিজের মনের মাধুরী বিষয়ে অন্যান্য প্রসঙ্গে নিজের জ্ঞানের বহর জাহির করতে থাকেন প্রধানমন্ত্রী। এর পরেই বিরোধীরা সভাকক্ষ ত্যাগ করেন। বিরোধীরা সভাকক্ষ ত্যাগ করাকে খোঁচা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মণিপুর নিয়ে বিরোধীরা কোনও আলোচনায় রাজি নয়। মণিপুর নিয়ে শোনার মতো ধৈর্য্য নেই।’ বাকি নাতিদীর্ঘ ভাষণের অধিকাংশ সময়ই কংগ্রেস, রাহুল গান্ধি, ‘ইন্ডিয়া’ জোটকে আক্রমণ করার কাজে ব্যয় করেছেন। সেই সঙ্গে নিজের জ্ঞানের বহর জাহির করেছেন। জবাবি ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘মণিপুরের ঘটনা আদালতে বিচারধীন রয়েছে। মণিপুরের ঘটনায় অনেকেই তাঁদের স্বজন হারিয়েছেন। মহিলাদের সঙ্গে যা হয়েছে তা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। দোষীদের সর্বোচ্চ সাজা দেওয়ার জন্য কেন্দ্র সরকার রাজ্য সরকার একসঙ্গে প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। সঙ্গে আশ্বাস, ‘আসন্ন ভবিষ্যতে মণিপুরে শান্তির সূর্য উঠবে, মণিপুর আবার আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এগিয়ে যাবে। দেশ আপনাদের সঙ্গে আছে, এই সংসদ সঙ্গে আছে। আমরা সবাই মিলে সমাধান করব। শান্তি স্থাপন হবেই’। বিরোধীদের তীব্র কটাক্ষ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘উত্তর-পূর্বের লোক এই সমস্যার জন্য দায়ী নয়। কংগ্রেসের রাজনীতি দায়ী। যে সব জায়গায় কম আসন তা নিয়ে কংগ্রেস কোনওদিন ভাবেনি। নেহেরুর বিরুদ্ধে লোহিয়াজির অভিযোগ ছিল জেনে বুঝে উত্তর-পূর্বের উন্নয়নে অগ্রহ দেখাচ্ছে না সরকার। চিন হামলার সময় নেহেরুর রেডিও বার্তা অসমবাসী আজও মনে রেখেছে। উত্তর-পূর্বের মানুষের বিশ্বাসকে হত্যা করেছে কংগ্রেস। সেই ক্ষোভেরই নানা ভাবে বহিঃপ্রকাশ হয়’। চব্বিশে বিজেপির বিরুদ্ধে ফের জোট বেঁধেছে বিরোধীরা। জোটের নাম, ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টাল ইনক্লুসিভ অ্যালায়েন্স। সংক্ষেপে, I.N.D.I.A। মোদি বলেন, ‘I.N.D.I.A নামটাও চুরি করেছে। ইন্ডিয়া জোটের আর্থিক নীতি নিয়ে দেশবাসীকে সতর্ক করব। এরা সেই লোক যারা ভারত মাতার ৩ টুকরো করেছে। ভারত মাতার মূর্তিকে যে চোখে দেখা হয়েছে তা দুর্ভাগ্যজনক। এরা ক্ষমতার বাইরে কিছুই বুঝে না’।