সংবিধান স্বীকৃত প্রতিবাদের অধিকার’’ এবং সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ এক জিনিস নয়। অর্থাৎ বিক্ষোভ দেখানোটা সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ নয়। মঙ্গলবার তার পর্যবেক্ষণে এমনটাই জানিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট৷ এদিন দিল্লি দাঙ্গা মামলায় ধৃত তিন প্রতিবাদীর জামিন মঞ্জুর করার সময় এই মন্তব্য করে আদালত ৷ গত বছরের গোড়ার দিকে হিংসা ছড়ায় রাজধানী দিল্লিতে ৷ সেই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এই তিন প্রতিবাদীকে গ্রেফতার করা হয় ৷ তারপর থেকে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্দি ছিলেন তাঁরা ৷ সূত্রের খবর, বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদ করাতেই গ্রেফতার করা হয়েছিল এই ৩জনকে ৷ ধৃতদের মধ্যে নতাশা নারওয়াল এবং দেবাঙ্গনা কালিতা পিঞ্জরা তোড় নামে একটি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ৷ যারা মূলত নারীর অধিকার রক্ষা নিয়ে কাজ করে ৷ অপর ধৃত আসিফ ইকবাল তনহা জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার ছাত্র ৷ গত বছরের মে মাসে তাঁদের গ্রেফতার করা হয় ৷ কঠোর বেআইনি কার্যকলাপ (বিরোধী) আইনের আওতায় তাঁদের গ্রেফতার করা হয় ৷ এবং এর আগে এই তিনজনেরই জামিনের আবেদন নাকচ করে দেয় নিম্ন আদালত ৷ মঙ্গলবার নিম্ন আদালতের সেই রায়ের সঙ্গে সহমত হয়নি হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ৷ বিচারপতি সিদ্ধার্থ মৃদুল এবং বিচারপতি অনুপ জয়রাম ভাম্ভানি তিন আবেদনকারীরই জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন ৷ তাঁদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ড ও সিওরিটির বিনিময়ে জামিন দেওয়া হয় ৷ বদলে তিনজনকেই তাঁদের পাসপোর্ট জমা রাখতে হয়েছে ৷ একইসঙ্গে আদালতের নির্দেশ, জামিনে ছাড়া পাওয়ার পর তাঁর কোনও বেআইনি কাজে যুক্ত হতে পারবেন না এবং তদন্তেও পূর্ণ সহযোগিতা করতে হবে ৷
এদিনের শুনানি চলাকালীন আদালত তার পর্যবেক্ষণে বলে, ‘‘মনে হচ্ছে, মতবিরোধকে চেপে দেওয়ার যে উদ্বেগ রাষ্ট্রের মানসিকতায় রয়েছে, তাতে সংবিধান স্বীকৃত প্রতিবাদের অধিকার এবং সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের মধ্যেকার সীমারেখা ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে ৷ যদি এই ধরনের মানসিকতা ক্রমশ বাড়তে থাকে, তাহলে তা গণতন্ত্রের জন্য দুঃখের ৷’’