রাফাল নিয়ে বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না মোদি সরকারের। যুদ্ধবিমান নির্মাতা ফরাসি সংস্থা দাসো অ্যাভিয়েশন এবং এমবিডিএ সংস্থার বিরুদ্ধে এবার ‘অসহযোগিতা’র অভিযোগ উঠল। দেশের কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি) বা ক্যাগের রিপোর্টে বলা হয়েছে, চুক্তি মেনে প্রযুক্তি দিয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের গবেষণা সংস্থা ডিআরডিও-কে সাহায্য করছে না ওই দুই সংস্থা। রাফাল প্রস্তুতকারী সংস্থা দাসোর সঙ্গে চুক্তির শর্ত ছিল, চুক্তিমূল্যের ৫০ শতাংশ মূল্যের প্রকল্প বা কাজের বরাত ভারতের কোনও সংস্থাকে দেবে বা প্রযুক্তিগতভাবে সাহায্য করবে। কিন্তু সেই শর্ত মানা হচ্ছে না বলেই প্রকাশিত হয়েছে ক্যাগ রিপোর্টে। বুধবার সংসদে প্রকাশিত রিপোর্টে ক্যাগ জানিয়েছে, দাসো ও এমবিডিএ সংস্থার প্রাথমিক প্রস্তাব ছিল, চুক্তির শর্তের ৩০ শতাংশ পূরণ করতে তারা ডিআরডিও-কে উন্নত মানের প্রযুক্তি দেবে। যুদ্ধান্ত্র তৈরির প্রযুক্তি, উন্নত যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য প্রযুক্তিগত সুবিধা দিয়ে নানা সময় ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থাকে সাহায্য করবে। কিন্তু রাফাল চুক্তির পরে তাদের আর সেই দায়বদ্ধতা দেখা যাচ্ছে না। সেই সাহায্য এখনও পাওয়া যায়নি। এমনকী, কবে পাওয়া যাবে, তা নিয়েও নিশ্চিতভাবে ওই ফরাসি সংস্থা কিছু জানায়ওনি। প্রসঙ্গত, হালকা ওজনের যুদ্ধ বিমান তৈরি করতেই ওই প্রযুক্তি চেয়েছিল ডিআরডিও। শুধু রাফাল বলে নয়, বহু বিদেশি সংস্থার ক্ষেত্রেই একই ঘটনা ঘটছে। চুক্তি করার সময় ভারতীয় সংস্থাকে বরাত দেওয়ার বিষয়টি মেনে নেয় তাঁরা। একবার চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে তারপর আর সেই শর্তপূরণ করতে বিশেষ তত্পরতা দেখা যায় না। ফলে দেশীয় সংস্থাগুলি সেই তিমিরেই থেকে যায়। দাসো অ্যাভিয়েশনও সেই পথেই হাঁটছে বলে অভিযোগ সিএজি-র। ডিআরডিও তাদের তৈরি লাইট কমব্যাট এয়ারক্রাফ্টের জন্য কাবেরী ইঞ্জিন তৈরির ব্যাপারে প্রযুক্তিগত সাহায্য চেয়েছিল দাসোর কাছে। কিন্তু এখনও অবধি সেই টেকনোলজি ভারতকে দেয়নি ফরাসি যুদ্ধবিমান নির্মাতা সংস্থা। সিএজি-র দাবি, প্রতিরক্ষা মন্ত্রক আরও একবার সেই চুক্তির শর্ত মিলিয়ে দেখুক। কীভাবে বিদেশি সংস্থা তাদের দায় এড়াচ্ছে সেটা বিবেচনা করা দরকার। বাদল অধিবেশনের শেষদিনে প্রকাশিত ক্যাগ রিপোর্টেও এ বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।