বাংলায় নাকি আইনশৃঙ্খলার নিদারুন খারাপ অবস্থা। এখানে নাকি জীবনের অধিকার, ব্যক্তিগত স্বাধীনতা, সাম্যতা আর ভোটের অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। তাই এখানে সুষ্ঠু ভাবে ভোট হওয়াই নাকি সম্ভব নয়। তাই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে রাজ্যে আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করতে হবে আর বিরোধী নেতাদের সুরক্ষা সুনিশ্চিত করতে হবে। এইসব দাবি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিল বিজেপি। কিন্তু সেই মামলাই খারিজ করে দিল দেশের শীর্ষ আদালত। জানা গিয়েছে, গত ২৩ ডিসেম্বর আইনজীবী বিনীত ধান্দার মাধ্যমে জনস্বার্থ মামলাটি দায়ের করেন জনৈক পুনীত কৌর ধান্দা। তাতে অভিযোগ করে জানানো হয়, পশ্চিমবঙ্গে জীবনের অধিকার, ব্যক্তিগত স্বাধীনতা, সাম্যতা এবং ভোটের বৈধ অধিকারের মতো মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। মামলার আবেদনে শীর্ষ আদালতকে পশ্চিমবঙ্গে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে স্বচ্ছ, অবাধ ও নিরপেক্ষ ভোট সুনিশ্চিত করার আবেদন জানানো হয়। একইসঙ্গে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে রাজ্যে আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েনের আবেদন করা হয়। পাশাপাশি ওই মামলায় মূলত তিনটি আবেদন করা হয়- এক, বিরোধী নেতাদের সুরক্ষা দিতে হবে। দুই, বিজেপি নেতাদের খুনের ঘটনা, যাতে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের সদস্যরা জড়িত, তার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করতে হবে সিবিআই-কে। তার রিপোর্ট দিতে হবে এবং তিন, ভুয়ো ভোটারদের বিষয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট দিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। এবং সেগুলি সেই তালিকা থেকে সরাতে ব্যবস্থা নিতে হবে। কিন্তু সোমবার এই জনস্বার্থ মামলা নাকচ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। সেই সঙ্গে দেশের শীর্ষ আদালত পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী নেতাদের সুরক্ষা প্রসঙ্গেও কোনও হস্তক্ষেপ করবে না শীর্ষ আদালত।
সোমবার বিচারপতি অশোক ভূষণের ঘরে মামলাটি ওঠে। বিচারপতি মামলাকারী আইনজীবী বিনীত ধান্দাকে প্রশ্ন করেন, ‘আপনি কোথায় থাকেন?’ এর জেরে আইনজীবী উত্তর দেন, ‘মুম্বই ও দিল্লিতে থাকি। মুম্বই থেকে এই মামলা করেছি।’ এরপর বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘গোটা বিষয়টিই বাংলাকে নিয়ে। অভিযোগ উঠছে বাংলায় বিজেপি নেতাদের ফাঁসানো হচ্ছে বলে। তবে মামলাটি কীভাবে একজন মুম্বইবাসী করতে পারেন?’ অনুচ্ছেদ ৩২ উল্লেখ করে বিচারপতি অশোক ভূষণ স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ‘অনুচ্ছেদ ৩২ অনুযায়ী, যে স্থানের ঘটনা, যেখানে অভিযোগ উঠছে, মামলাটিও সেখান থেকেই করতে হবে। তা না হলে সেটি গ্রহণযোগ্য হবে না।’ এরপরই বিজেপির এই মামলা খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট।