তিনি দেশের তিনটি রাজ্যের প্রাক্তন রাজ্যপাল ছিলেন। সেই সঙ্গে বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতিও। এখন তিনিই কার্যত হয়ে উঠেছেন বিজেপির ‘ঘরশত্রু বিভীষণ’। একুশের যুদ্ধে বাংলায় গোহারা বিজেপিকে এখন তিনি নিত্যদিনই তুলোধনা করছেন। কখনও তাঁর আক্রমণের মুখে পড়ছেন খোদ সঙ্ঘের নেতারা, আবার কখনও কেন্দ্রের শীর্ষ নেতারা। তাঁর আক্রমণ থেকে বাদ পড়েননি রাজ্য বিজেপির নেতা থেকে টলি তারকারাও। আর এবার তো নাম না করেই দলবদলু নেতাদের ‘চোর, লম্পট, বদমায়েশ, দুশ্চরিত্র’ বলে দেগে দিলেন তিনি। আর সেটাও খাস কলকাতায় বসে থেকেই। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের তলবে তাঁর দিল্লি যাত্রা তো দূর অস্ত, বরঞ্চ নিত্যদিন এখন তিনি আক্রমণের ধার আরও বেশি করে শানছেন। তিনি তথাগত রায়। দলের নেতা থেকে শুরু করে টলি তারকাদের নিয়ে তিনি প্রকাশ্যেই কুমন্তব্য করেছেন। তার জেরে রাজ্যের সমাজজীবনে ছিঃ ছিঃ কার রব পড়ে যাওয়ার পাশাপাশি নানা সমাজমাধ্যমেও তথাগতবাবুর কার্যত মুণ্ডপাত করছেন নেটিজেনরা। সেই সমালোচনার ধাক্কা সামলাতে না পেরেই বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব তাঁকে দিল্লিতে তলব করেছিল। কিন্তু সেই তলবে সাড়া দেওয়া তো দূরের কথা, উল্টে আক্রমণ আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন দেশের তিনটি রাজ্যের এই প্রাক্তন রাজ্যপাল। এবার কারও নাম না করেই দলবদলু নেতাদের যারা ভোটের মুখে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে এসে প্রার্থী হয়েছিলেন তাঁদের প্রকাশ্যেই ‘চোর, লম্পট, বদমায়েশ, দুশ্চরিত্র’ বলেব দেগে দিলেন। তথাগতবাবু দলবদলু নেতাদের নিয়ে যে খুবই অসন্তুষ্ট সেটা বোঝাতেই সাফ জানিয়েছেন, ‘ভোটের আগে দলে যোগদেন মেলা কাদের নিয়ে হয়েছে? চোর, দুশ্চরিত্র, বদমায়েশ, লম্পটদের নিয়ে যোগদান মেলা হয়েছে। মানুষ এদের নিয়ে তিতিবিরক্ত। এদের পছন্দ করে না। সেই জঞ্জালগুলিকে কেন দলে ঠাঁই দেওয়া হল? সঙ্ঘের পক্ষে যা বলা হয়েছিল সম্ভবত তা শোনা হয়নি। ফলে তাঁরাও হাত গুটিয়ে বসে ছিলেন। ফলে যা হওয়ার সেটাই হয়েছে। ভরাডুবি।’ এর পাশাপাশি তিনি দিল্লি না যাওয়ার কারনও জানিয়েছেন। বলেছেন, ‘আমি এখন কোভিডে আক্রান্ত। ঘর থেকে কোথাও বার হচ্ছি না। কোভিড নেগেটিভ রিপোর্ট পেলেই আমি যাব। যা বলার ইতিমধ্যেই বলে দিয়েছি। এ বার সবিস্তারে লিখছি। কে ডেকেছেন তা আমি বলছি না। তবে একেবারে উপরমহল থেকেই আমাকে ডাকা হয়েছে।’ তবে, তথাগতর এই বিস্ফরণে দলের ভাবমূর্তি যে আরও ধাক্কা খেল, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।