রাশিয়ার আবিষ্কৃত ভ্যাকসিন নিয়ে সমস্যার মুখে পড়েছেন বিজ্ঞানীরা। কারণ যাঁদের উপর চূড়ান্ত স্তরে ট্রায়াল চলেছিল স্পুটনিক ভি ভ্যাকসিনের, তাঁদের প্রতি সাত জনের মধ্যে এক জনের শরীরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে বলে জানিয়েছে সে দেশের সংবাদমাধ্যম দ্য মস্কো টাইমস। গত মাসেই রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বিশ্বের প্রথম করোনা ভ্যাকসিন আবিষ্কারের কথা ঘোষণা করেছিলেন। সেই ভ্যাকসিন ভারতে আসতে পারে আগামী বছরই, এমন কথাও হচ্ছিল। কিন্তু রাশিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী মিখাইল মুরাস্কো জানিয়েছেন, ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা প্রতি সাত জনের মধ্যে এক জনের দেহে দুর্বলতা, পেশিতে ব্যথা, মাঝেমাঝে জ্বর আসার মতো সমস্যা ঘটেছে। গত ১১ অগস্ট বিশ্বে প্রথম টিকা নিয়ে আসার ঘোষণা করে রাশিয়া জানিয়েছিল গণ টিকাকরণ জানুয়ারি মাসের আগে সম্ভব নয়। কিন্তু দিন দশেক আগেই আবার গ্যামেলিয়া ন্যাশনাল রিসার্চ সেন্টার অব এপিডেমোলজি অ্যান্ড মাইক্রোবায়োলজি এবং রাশিয়ান ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছিল, স্পুটনিক ভি টিকা করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে সক্ষম। প্রথম দুই পর্বের ট্রায়ালে সে প্রমাণ মিলেছিল বলে দাবি করা হয়েছিল। টিকার ডোজে মানুষের শরীরে পর্যাপ্ত অ্যান্টিবডি তৈরি হয় বলে জানানো হয়। টি-কোষও সক্রিয় করে রোগ প্রতিরোধ তৈরি করে। তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের রিপোর্টও ভাল বলেই জানা গেছিল। পরের দফার ট্রায়াল শুরু করার কয়েক দিন পরেই সামনে এল সমস্যার কথা। তবে শুরু থেকেই রাশিয়ার ভ্যাকসিনের সুরক্ষা ও কার্যকারিতা নিয়ে তুমুল বিতর্ক চলছিল আন্তর্জাতিক মহলে। প্রথম পর্যায়ে মাত্র ৭৬ জনের শরীরে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করেই কীভাবে ভ্যাকসিন নিয়ে আসার কথা বলছে রাশিয়া, এই নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছিল নানা মহলেই। টিকার সুরক্ষাবিধিতেই বড়সড় প্রশ্ন তুলে দেন খোদ রাশিয়ারই অভিজ্ঞ ডাক্তার এবং এথিক্স কাউন্সিলের অন্যতম প্রধান ডক্টর আলেক্সান্ডার। তাঁর অভিযোগ ছিল, ভ্যাকসিন তৈরি ও তার ট্রায়ালের দায়িত্বে থাকা প্রধান দু’জন নিয়ম ভেঙে বেআইনিভাবে টিকার প্রয়োগ করেছেন।