জেলা

শীতলকুচিতে ক্ষোভের মধ্যেই নিহতদের শেষকৃত্য সম্পন্ন

ভোট পর্ব চলাকালীন শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে শনিবার নিহত হয়েছেন ৪ জন। ঘটনায় স্বজনহারাদের বুকফাটা কান্নাকেও ছাপিয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক গলাবাজি। গুলি চালানোর কারণ সঠিক ভাবে খতিয়ে দেখার আগেই শুরু হয়েছে একে অপরের ঘাড়ে দোষ দেওয়ার পালা। এরই মধ্যে রবিবার ময়নাতদন্তের পর নিহতদের দেহ তুলে দেওয়া হয় পরিবারের হাতে। চোখের জলে তাঁদের অন্তিম বিদায় জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা। সম্পন্ন হয়েছে শেষকৃত্য। মাথাভাঙার জোরপাটকায় আমতলি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বুথে শনিবার ভোটগ্রহণ চলাকালীন অশান্ত হয় পরিবেশ। সেইসময় আচমকাই জনগণকে লক্ষ্য করে গুলি চালান কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। সেই গুলিতে মৃত্যু হয় এলাকার বাসিন্দা মণিরুল মিঁঞা, হামিদুল মিঁঞা, ছামিউল মিঁঞা এবং নূর ইসলাম মিঁঞার। এরপর থেকেই স্বজনহারাদের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে গ্রামের পরিবেশ। ময়নাতদন্তের পর রবিবার হাসপাতাল থেকে মৃতদেহ তুলে দেওয়া হয় পরিবারের হাতে। শোকমিছিল করে গ্রাসবাসীরা দেহ নিয়ে আসেন গ্রামে। তৈরি করা হয় শহিদবেদি। শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন গ্রামবাসীরা। উত্তোলন করা হয় কালো পতাকা। এরপর বিকালে দেহগুলি সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় সমাধিস্থ করার উদ্দেশ্যে। ঘটনার পর থেকেই ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা গ্রাম। স্বজনহারাদের শোকে এদিন হাঁড়ি চড়েনি গ্রামে। প্রসঙ্গত, নিহতরা তৃণমূল সমর্থক বলে এলাকায় পরিচিত হলেও তাঁরা প্রত্যেকেই ছিলেন হতদরিত্র পরিবারের সদস্য। তাঁদের মধ্যে মনিরুল সিকিমে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। হামিদুলও মাথাভাঙায় রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। ছামিউল ছিলেন মাথাভাঙা কলেজের ছাত্র। নূর ইসলাম মিঁঞা ছিলেন পেশায় কৃষক। এদিন নিহতদের আত্মীয়দের সঙ্গে শিলিগুড়ি থেকে ফোনে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সবরকম ভাবে তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। উল্লেখ্য, এই মর্মান্তিক ঘটনার পর আগামী ৭২ ঘন্টা পর্যন্ত কোচবিহার জেলায় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে নির্বাচন কমিশন। ফলে রাজনৈতিক নেতৃত্বের কোচবিহার জেলা সফরে কমিশনের নিষেধাজ্ঞা ওঠার পর ঘটনাস্থলে যাওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।