গত ৪ বছরে প্রধানমন্ত্রীর বিমানের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ১৫৮৩ কোটি ১৮ লক্ষ টাকা ও তাঁর চার্টার্ড বিমানের জন্য ৪২৯ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে
গত পাঁচ বছরে মোট ৫৮টি দেশে সফরে গিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই বিদেশ সফরে মোট ৫১৭ কোটি ৮২ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। রাজ্যসভায় একটি প্রশ্নের লিখিত জবাবে এমনটাই জানানো হলে কেন্দ্রের তরফে। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় বিদেশমন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী ভি মুরলীধরণ এই লিখিত জবাব দেন। তিনি জানিয়েছেন, এই সময়ের মধ্যে যে তিন দেশে সবথেকে বেশিবার প্রধানমন্ত্রী গিয়েছেন, তা হল আমেরিকা, রাশিয়া ও চিন। তিনটি দেশেই পাঁচবার করে গিয়েছেন তিনি। চিনের সঙ্গে গত কয়েক মাসে যেভাবে সীমান্ত নিয়ে সংঘাত হচ্ছে ভারতের, তাতে সেদেশে পাঁচ বছরে মোদীর পাঁচ বার সফর যথেষ্ট তাত্পর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এছাড়া আরও যে দেশগুলিতে প্রধানমন্ত্রী একাধিকবার সফরে গিয়েছেন সেগুলি হল সিঙ্গাপুর, জার্মানি, ফ্রান্স, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী ও শ্রীলঙ্কা। এছাড়া আরও অনেক দেশে একবার করেই গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। কোথাও দ্বিপাক্ষিক সফর হয়েছে, আবার কোথাও সফরে একাধিক দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা মিলিত হয়েছেন। এই সব দেশে সফরের জন্য মোট ৫১৭ কোটি ৮২ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভি মুরলীধরণ। প্রধানমন্ত্রী শেষবার বিদেশ সফরে গিয়েছে ব্রাজিলে। গত বছর নভেম্বর মাসে ব্রিকস সামিটে যোগ দিতে সেখানে যান তিনি। সেখানে ভারত ছাড়াও ব্রাজিল, রাশিয়া, চিন ও দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রপ্রধানরাও যোগ দিয়েছিলেন। ২০২০ সালে করোনা সংক্রমণের জন্য মার্চ মাস থেকেই বিদেশ সফর বন্ধ রয়েছে। কিন্তু তার আগের তিন মাসেও কোনও দেশের যাননি প্রধানমন্ত্রী। রাজ্যসভায় ভি মুরলীধরণ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এই সফরের ফলে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ভারতের দ্বিপাক্ষিক ও আন্তর্জাতিক স্তরের অনেক চুক্তি হয়েছে। এর ফলে দেশের অর্থনীতির উন্নতি হয়েছে। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক অনেক চুক্তি হয়েছে। টেকনোলজি ও প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত অনেক চুক্তিও হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও ভাল হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। অথচ ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে কেন্দ্র জানিয়েছিল ২০১৪ সালের জুন মাস থেকে তখন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফরে ২ হাজার কোটি টাকার বেশি খরচ হয়েছে। এর মধ্যে চার্টার্ড বিমান, নিরাপত্তা ও সফরের অন্যান্য সব খরচ যুক্ত ছিল। সেই সময়ের বিদেশমন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী ভি কে সিং বলেন, ২০১৪ সালের ১৫ জুন থেকে ২০১৮ সালের ৩ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর বিমানের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ১৫৮৩ কোটি ১৮ লক্ষ টাকা ও তাঁর চার্টার্ড বিমানের জন্য ৪২৯ কোটি ২৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এছাড়া হটলাইন পরিষেবার জন্য ৯ কোটি ১১লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছিলেন।প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফরের এই খরচ নিয়ে বিরোধীরা তাঁর বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিলেন।