মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গুরুদোয়ারায় যাচ্ছেন। তার পালটা বিজেপি শিখ সমাজভুক্ত তাদের কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে আনছেন প্রচারে। লক্ষ্য একটাই, শিখ ভোট। একুশের নির্বাচনে ভবানীপুরের ২৮০০০ ভোটে জিতেছিলেন তৃণমূল প্রার্থী শোভন চট্টোপাধ্যায়। ভোটে জয়ের ব্যবধান তো কমেই ছিল পাশপাশি বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে পিছিয়েছিল তৃণমূল। এই ওয়ার্ডগুলিতে অবাঙালি ভোটাররা রয়েছেন যার মধ্যে শিখ সম্প্রদায়ের ভোট সংখ্যা যথেষ্ট বেশি। এবার এই শিখ ভোটকেই নিজেদের ঝুলিতে ভরতে চাইছে দুই যুযুধান শিবির। কলকাতা পৌরসভার ওয়ার্ড নং ৬৩, ৭০, ৭১, ৭২, ৭৩, ৭৪, ৭৭ এবং ৮২ নিয়ে ভবানীপুর বিধানসভা। যার ৭০, ৭১, ৭২, ৭৪ নং ওয়ার্ড অবাঙালি অধ্যুষিত। ব্রিটিশ আমল থেকেই এখানে প্রজুর শিখ, গুজরাটি, মাড়োয়াড়ি, বিহারিল ও ইউপির মানুষ থাকেন। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে ৭০ ও ৭৪ নং ওয়ার্ডে বিজেপির কাছে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। স্বাভাবিকভাবেই এবারে আর কোনও রকম ফাঁক রাখতে চাইছে না ঘাসফুল। কারণ কোনরকম অঘটন ঘটে যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় না জেতেন এখানে তাহলে মুখ্যমন্ত্রিত্ব তো ছাড়তেই হবে পাশপাশি দলনেত্রীর পরপর পরাজয়ে দলে ভয়ঙ্কর প্রভাব পড়বে। তাই ভবানীপুরের অবাঙালিদের সঙ্গে ইতিমধ্যেই বৈঠক করেছে তৃণমূল। ভবানীপুরে গুরুদোয়ারাই গিয়ে শিখ ভোটারদের মন জয়ের চেষ্টাও করেছেন। এবার সেই পথেই বিজেপিও। যদিও ভবানীপুরের অবাঙালি ভোটের কথা মাথায় রেখে প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালকে প্রার্থী করেই আগেই তৃণমূলকে কিছুটা চাপে ফেলেছে বিজেপি। এবার নিজেদের দলের কেন্দ্রীয় আবাসন,নগর বিষয়ক এবং পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরীকে ভবানীপুরে প্রচারে এনে চমক লাগিয়ে দিয়েছে বিজেপি। মমতার মতোই গুরুদোয়ারাতে গিয়েছেন হরদীপও। তবে মমতা গুরুদোয়ারাতে যাওয়ার সময় তাঁর প্রচার সঙ্গীদের বেশ কয়েকজনের মাথায় শিখ ধর্মের নিয়ম অনুসারে কাপড় ছিল না। তা নিয়ে বিতর্কও তৈরি হয়েছে। এ নিয়েও বিজেপি নেতারা খোঁচা মেরেছে তৃণমূলকে। বুধবার হরদীপ সিং পুরি ভবানীপুরে প্রচারে গেলে তাঁকে বিভিন্ন জায়গাতে পুলিশি বাধার সম্মুখীন হতে হয়। কিন্তু তিনি এবং রাজ্য বিজেপি নেতাররা তাও ভবানীপুরে প্রিয়ঙ্কার সমর্থনে প্রচার চালিয়ে গিয়েছেন। এখন দেখার হরদীপের আসা কী বিজেপিকে ভবানীপুরে শিখ ভোট এনে দিতে পারে? নাকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গুরুদোয়ারাতে যাওয়া এবং শিখদের কাছে টানার প্রয়াসই তৃনমূলকে ভবানীপুরে শিখ ভেট এনে দিতে পারে! মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের অন্য নেতারা অবশ্য পঞ্জাবে কৃষক আন্দোলনের মতো বিষয়গুলোকে সামনে রেখে প্রচার চালাচ্ছেন।