কলকাতা

রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের হাওয়ালা যোগের ‘প্রমাণ’ দিল তৃণমূল

প্রায় ২৫ বছর আগের হাওয়ালা জৈন কেলেঙ্কারি নিয়ে সোমবার থেকে সরগরম দেশের রাজনীতি ৷ এই কেলেঙ্কারিতে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের নাম ছিল বলে প্রথম অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ৷ কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পালটা সাংবাদিক বৈঠক ডেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় ৷ আজ তৃণমূল ভবনের সাংবাদিক বৈঠকে সুখেন্দুশেখর রায় জানিয়ে দিলেন, এই মামলা হারিয়ে গিয়েছে‌। মামলার নিষ্পত্তি এখনও হয়নি। ফলে এই মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়ার কোনও প্রশ্ন নেই । এই নিয়ে জনৈক বিনীত নারায়ণের বক্তব্য তুলে ধরেছেন তিনি ৷ যেখানে এই প্রবীণ সাংবাদিক উল্লেখ করেছেন, এই মামলার কোনও ট্রায়ালই হয়নি । ফলে এই মামলা নিস্পত্তি হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না । উল্লেখ্য, সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছিলেন, হাওয়ালা জৈন কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল । এই মামলায় তাঁর (রাজ্যপাল) বিরুদ্ধে চার্জশিটও হয়েছিল । এরপর রাজভবনে পালটা সাংবাদিক বৈঠক করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় । তিনি দাবি করেন, সঠিক তথ্য দিচ্ছেন না মুখ্যমন্ত্রী । ধনকড়ের বক্তব্য অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত নন । চার্জশিটে তাঁর নাম ছিল না । এক্ষেত্রে তৃণমূল সাংসদের অভিযোগ, হাওয়ালা জৈন মামলায় যাঁদের নাম ওঠে, তাঁরা লক্ষ লক্ষ টাকা উৎকোচ নিয়েছেন বলে জানা যায়, এই মামলায় দুই ধনকড়ের নাম রয়েছে । প্রথমজন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী । অন্যজন, যাঁকে অর্থ দেওয়ার কথা হাওয়ালা জৈন ডায়েরিতে উল্লেখ ছিল । সুখেন্দুশেখর রায়ের প্রশ্ন, ‘‘জৈন হাওয়ালা ডায়েরিতে যে ধনকড়ের নাম রয়েছে তিনি কে ? রাজ্যপালকে সাংবাদিকদের প্রশ্ন করা উচি‍ত । তিনি যদি সদুত্তর দেন ভালো হয় ।’’ এদিন মুখ্যমন্ত্রী বক্তব্যের সঙ্গে সাযুজ্য রেখেই সুখেন্দুশেখর রায় জগদীপ ধনকড়ের অপসারণ নিয়ে সরব হয়েছেন । সংসদের আসন্ন অধিবেশনে তৃণমূল এই বিষয়টি তুলবে বলে তিনি জানিয়েছেন । তিনি বলেন, ‘‘এই ধরনের একজন কলিমালিপ্ত ব্যক্তিকে রাজ্যপাল করার আগে প্রধানমন্ত্রীকে হয়তো সঠিক তথ্য দেওয়া হয়নি । যাঁরা অভিযুক্ত এই ধরনের কাউকে সাংবিধানিক পদে বসানো সঠিক কাজ হয়নি ৷’’ অন্যদিকে, এদিনের সাংবাদিক সম্মেলন থেকে রাজ্যপাল জিটিএ-র অডিট নিয়ে যে প্রশ্ন তুলেছেন, তারও জবাব দিয়েছে তৃণমূল । রাজ্যের মন্ত্রী তথা দমদমের বিধায়ক ব্রাত্য বসুর কথায়, জিটিএ-র দুর্নীতি প্রসঙ্গ তুলে রাজ্যপাল বলছেন যে তাঁকে জিটিএ সংক্রান্ত কোনও হিসেবনিকেশ দেখানো হয়নি ৷ তাই এ বিষয়ে সিএজিকে দিয়ে অডিট করানোর কথা বলছেন তিনি । ব্রাত্য বসুর প্রশ্ন, বিচ্ছিন্নতাবাদী বিজেপি নেতাদের সঙ্গে গিয়ে বৈঠক করছেন‌ রাজ্যপাল । সিএজিকে দিয়ে জিটিএ-এর অডিট করতে বলেছেন তিনি । কিন্তু সমস্ত তথ্যই পার্বত্য দফতরের মন্ত্রীর কাছে আছে । রাজ্যপাল চাইলেই তথ্য পেতে পারতেন । কিন্তু আগে তা না দেখেই অডিটে কারচুপির অভিযোগ করেছেন তিনি । রাজ্য সরকারকে কালিমালিপ্ত করতেই এমনটা করা হয়েছে বলে দাবি করেন ব্রাত্য বসু । এদিকে এদিন শিক্ষামন্ত্রী ও তৃণমূল সাংসদ ফেসবুক-টুইটারের অপব্যবহার নিয়েও সরব হয়েছে । তাঁদের বক্তব্য, এই বিষয়ে সংবিধানে কিছু লেখা নেই । এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট বিধি প্রণয়ন করুক কেন্দ্রীয় সরকার । পাশাপাশি তাঁদের অভিযোগ, মন্ত্রগুপ্তির শপথ নিয়ে সেই শপথ মানছেন না রাজ্যপাল । এক্ষেত্রে তিনি বিজেপি নেতাদের মতো আচরণ করছেন ।