কলকাতা

আগামীকাল কলকাতার পুরভোটের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করতে পারে তৃণমূল

সূত্রের খবর, শুক্রবারই কলকাতার পুরভোটের জন্য প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করতে পারে শাসক দল তৃণমূল৷ এই পৌর ভোটের প্রচারের দৌঁড়ে এগিয়ে থাকতে চাইছে ঘাসফুল শিবির ৷ কারা টিকিট পাবেন এই নির্বাচনে তা নিয়ে ইতিমধ্যেই শাসক দলের অন্দরে জল্পনা শুরু হয়েছে৷ এদিন নির্বাচনী নির্ঘণ্ট প্রকাশ হোয়ার পর সেই জল্পনাই আরও জোরদার হয়েছে। সূত্রের খবর, তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব ইতিমধ্যেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বয়স বেশি হয়েছে বা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ, শয্যাশায়ী এমন কোনও প্রাক্তন কাউন্সিলকে এবার আর প্রার্থী করা হবে না ৷ এই বিষয়টি মাথায় রেখেই প্রার্থী বাছাই করা হয়েছে ৷    সূত্রের খবর, তৃণমূল কংগ্রেসের নির্বাচনী বিষয়গুলি এই মুহূর্তে নজরে রাখছে প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আইপ্যাক। তারা চাইছে অপেক্ষাকৃত যুব মুখকে প্রার্থী করতে ৷ এবারের পৌরভোটে বয়স্ক ও অসুস্থদের টিকিট না দেওয়ার সুপারিশ করেছে পিকে-র সংস্থাও। তুলনায় বয়স কম, কর্মঠ এরকম মুখদের পৌরভোটে টিকিট দেওয়ার পক্ষে আইপ্যাক ৷ বয়স্ক এবং অসুস্থ কাউন্সিলরদের তুলনায় নতুন প্রার্থী অনেক বেশি স্থানীয় মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হবেন বলেই মনে করছে তারা। ফলে এবার কলকাতার একাধিক ওয়ার্ডে প্রার্থী বদলের সম্ভাবনা। এমনিতেই কলকাতার চারটি ওয়ার্ডে কো-অর্ডিনেটরদের প্রয়াণে নতুন প্রার্থীদের টিকিট দেবে তৃণমূল। প্রয়াত হয়েছেন ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অপরাজিতা দাশগুপ্ত, ৬৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুখদেব চক্রবর্তী, ১২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মানিক চট্টোপাধ্যায় ও ১৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইন্দ্রজিৎ ভট্টাচার্য। অবশ্য এঁদের প্রয়াণের আগেই দল ঠিক করেছিল, বয়স্ক এবং অসুস্থ প্রাক্তন কাউন্সিলরদের আর টিকিট দেওয়া হবে না। এবার আরও কিছু প্রাক্তন কাউন্সিলর বা কো-অর্ডিনেটরের নাম বাদের তালিকায় সংযোজিত হতে চলেছে। সূত্রের খবর, এই তালিকায় রয়েছেন, ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের সত্যেন দে, ৫৫ নম্বর ওয়ার্ডের অরুণ দে, ৬২ নম্বর ওয়ার্ডের ইকবাল আহমেদ, ৬৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিজনলাল মুখোপাধ্যায়, ৭৯ নম্বর ওয়ার্ডের রাম পেয়ারে রাম, ৮৩ নম্বর ওয়ার্ডের মঞ্জুশ্রী মজুমদার, ৮৯ নম্বর ওয়ার্ডের মমতা মজুমদার, ১০০ নম্বর ওয়ার্ডের সুস্মিতা দাম এবং ১২৬ নম্বর ওয়ার্ডের শিপ্রা ঘটক। তবে শুধু প্রবীণরাই নন, তৃণমূলের এবারের বাতিলের তালিকায় রয়েছেন বেশকিছু অপেক্ষাকৃত কম বয়সী কিছু নেতা-নেত্রীরাও। মূলত তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ, পরিষেবা ও জনসংযোগ নিয়ে সাধারণের মধ্যে ক্ষোভ এক্ষেত্রে তাঁদের বিপক্ষে কাজ করতে পারে ৷ এবার বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস গোটা রাজ্যে অপ্রত্যাশিত জয় পেলেও প্রবীণ ও অসুস্থদের একটা বড় অংশকে বাদ দেওয়া হয়েছিল সেই প্রার্থী তালিকা থেকে। এবার পুরভোটেও সেই প্রক্রিয়ায় জারি থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে ৷ আর একটি সূত্রে খবর, কাল পুরসভা ভোটের জন্য প্রার্থী তালিকায় নাম থাকতে পারে বাবুলের। ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী হতে পারেন তিনি। এবং বাবুল পুরসভায় প্রার্থী হলে এবার আর পুরভোটে দাঁড়াবেন না কলকাতা পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম। ববি হাকিম এখন কলকাতা পুরসভার ৮২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। জানা গিয়েছে, ববি প্রার্থী না হলেও ৮২ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী হতে পারেন তাঁর বড় মেয়ে প্রিয়দর্শিনী হাকিম। তৃণমূলের অন্দরে প্রিয়দর্শিনী হালফিলে পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছেন। নতুন প্রজন্মকে তুলে আনার জন্য দিদির উত্‍সাহও রয়েছে। তা ছাড়া ইদানীং বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক অনুষ্ঠানে বাবার পাশে দেখা যাচ্ছে তাঁকে। এই সম্ভাবনার মানচিত্রে আরও খুঁটিনাটি রয়েছে। যেমন ববি হাকিম হলেন বর্তমানে পরিবহণ মন্ত্রী। তিনি মেয়র পদ ছাড়লে রাজ্য মন্ত্রিসভায় তাঁকে পরিবহণ দফতরের পরিবর্তে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। তৃণমূল সূত্রে আরও খবর, শুধু প্রিয়দর্শিনী নন, রাজ্য মন্ত্রিসভার আরেক মন্ত্রীর (দফতরবিহীন) মেয়েকেও পুরভোটে প্রার্থী করা হতে পারে। ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের মন্ত্রী ছিলেন সাধন পাণ্ডে। তিনি খুবই অসুস্থ। তাই তাঁকে আপাতত দফতর থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, এহেন অবস্থায় সাধন পাণ্ডের মেয়ে শ্রেয়া পাণ্ডেকে পুরভোটে প্রার্থী করা নিয়ে দলের মধ্যে আলোচনা রয়েছে। সাধন পাণ্ডে মানিকতলার বিধায়ক। ওই বিধানসভা কেন্দ্র বা বটতলা এলাকার কোনও ওয়ার্ড থেকে শ্রেয়াকে প্রার্থী করা হতে পারে বলে খবর।