জেলা

কোচবিহারে পরাজিত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ডেপুটি নিশীথ প্রামাণিক, ৩৯ হাজার ২৫০ ভোটে জয়ী তৃণমূলের জগদীশ চন্দ্র বর্মা বাসুনিয়া

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দফতরের প্রতিমন্ত্রী নিশীথ আত্মবিশ্বাসী ছিলেন জয়ের ব্যাপারে। কিন্তু তৃণমূলের সাংগঠনিক শক্তিই জয় নিশ্চিত করল জগদীশের। হাইভোল্টেজ লড়াইয়ে কোচবিহার লোকসভায় জয়ী জগদীশচন্দ্র বসুনিয়া। তৃণমূলের জগদীশ চন্দ্র বর্মা বাসুনিয়া পেয়েছেন ৭৮৮৩৭৫ ভোট। বিজেপির নিশীথ প্রামাণিক পেয়েছেন ৭৪৯১২৫। ৩৯২৫০ ভোটে জিতেছে তৃণমূল। কোচবিহার লোকসভা নির্বাচনের এই ফল বিজেপির কাছে অপপ্রত্যাশিত। কেন না, এই লোকসভা কেন্দ্রের সাতটি বিধানসভা ক্ষেত্রের মধ্যে পাঁচটিতেই বিজেপির বিধায়ক। সিতাই ও দিনহাটায় রয়েছেন তৃণমূলের বিধায়ক। সিতাইয়ে জগদীশ। দিনহাটায় উদয়ন গুহ। কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রে নিশীথের সঙ্গে উদয়নের সংঘাতে বারেবারেই খবরের শিরোনামে থেকেছে দিনহাটা। উদয়ন উত্তরবঙ্গ উন্নয়মনন্ত্রী। ফলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বনাম রাজ্যের মন্ত্রীর দ্বৈরথ ঘিরে রাজনৈতিক মহল থেকেছে সরগরম। এই আবহে নিশীথের পরাজয় বিজেপি শিবিরে বড় ধাক্কা। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচন ও ২০১৬ সালের লোকসভা উপনির্বাচনে এই আসনটি ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে। ২০১৪ সালে বিজেপি ছিল তৃতীয় স্থানে। উপনির্বাচনে দুইয়ে উঠে আসে। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে নিশীথ প্রামাণিক সাংসদ হয়েছিলেন তৃণমূলের পরেশচন্দ্র অধিকারীকে হারিয়ে। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী দীপক কুমার রায়কে ৮৭ হাজার ১০৭ ভোটে হারিয়ে জয়লাভ করেছিলেন রেণুকা সিনহা। তিনি ২০১৬ সালে প্রয়াত হন। উপনির্বাচনে বিজেপি প্রার্থীকে ৪,১৩,২৪১ ভোটে হারিয়ে সাংসদ হন তৃণমূলের পার্থ প্রতিম রায়। তিনি ৫৯ শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছিলেন। ২০১৯ সালে পার্থকে টিকিট দেয়নি তৃণমূল। পরেশচন্দ্র অধিকারীকে প্রার্থী করা হয়েছিল। উপনির্বাচনে যেখানে বিজেপি ২৮.৩২ শতাংশ ভোট পেয়েছিল, সেখানে ২০১৯ সালে গেরুয়া শিবিরের প্রার্থী নিশীথ পান ৪৭.৯৮ শতাংশ ভোট। তৃণমূলের ভোট ২০১৪ সালে ছিল ৩৯.৫১ শতাংশ, ২০১৬-র উপনির্বাচনে ৫৯.০৩ শতাংশ। ২০১৯ সালে তা কমে হয় ৪৪.৪৩ শতাংশ। এবারও জগদীশ চন্দ্র বর্মা বসুনিয়া বেশিরভাগ সময় এগিয়ে ছিলেন। নিশীথ মাঝেমধ্যে এগিয়ে থাকলেও বড় লিড পাননি। নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, তৃণমূল এবার এগিয়ে রয়েছে ৩৯ হাজার ৪৬৪ ভোটে। তৃণমূল পেয়েছে ৪৮.৬১ শতাংশ এবং বিজেপি পেয়েছে ৪৬.১২ শতাংশ ভোট। যা পরে কিছুটা রদবদল হলেও জয়ের ক্ষেত্রে কোনও বদল আনবে না। কেন না, গণনা আর সামান্যই বাকি। তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সরিয়ে এককাট্টা হয়েই দুরন্ত জয় নিশ্চিত করলেন কোচবিহারে।