কলকাতা

দলবিরোধী কাজের অভিযোগে বালির বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়াকে বহিষ্কার করল তৃণমূল

দলের মধ্যে থেকেই অনুশাসন ভেঙ্গে একের পর এক দলবিরোধী মন্তব্যের জন্য বালির বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়াকে বহিষ্কার করল তৃণমূল। দলবিরোধী কাজের অভিযোগে তৃণমূলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি তাঁকে বহিষ্কার করল। বেশ কিছু দিন ধরেই প্রকাশ্যে তৃণমূলের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছিলেন। আজ রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পরও সংবাদমাধ্যমে রাজীবের সমর্থনে সরব হয়েছিলেন তিনি। তার পরই তাঁর বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপ নেওয়া হল। এর আগেও ডালমিয়ার ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করে বলেছিলেন, ‘‌ভারতের প্রধানমন্ত্রীকেই বহিরাগত বলা হচ্ছে, আমি কোন ছাড়।’‌ এখানেই প্রশ্ন, তবে কী দলের নেতা–কর্মীদের আচরণ না–পসন্দ বিধায়কের? বারবারই প্রকাশ্যেই বৈশালী ডালমিয়া দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন। তিনি আগে এও বলেছিলেন, “আমাকে হেনস্থা করা হলেও জেলা নেতৃত্বও মাথা ঘামায় না, ওপর থেকেও কোনো কথা বলা হয় না। আমি সুরক্ষিত নই।” এবার সেই সর কারণের জেরে বৈশালী ডালমিয়াকে বহিষ্কার করল তৃণমূলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি। অন্যদিকে, এই প্রসঙ্গে হাওড়া জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান অরূপ রায় বলেন, ”দল সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দলের বিরুদ্ধে কথা বলে যাঁরা দলের ক্ষতি করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। কারও কোনও ব্যক্তিগত অভিযোগ থাকতেই পারে। সেটা দলের ভিতরেই বলা উচিত।” অরূপ রায় এও বলেন, ”আমার বিরুদ্ধে কে কী বললেন, তাতে কিছু যায় আসে না আমার। আমি প্রথম দিন থেকে তৃণমূলে আছি, থাকবো। এঁদের কোনও গুরুত্ব নেই। এঁরা চলে যাওয়ায় দলের কোনও ক্ষতি হবে না। দলের প্রতীক না থাকলে এঁরা কেউ বিধায়ক হতে পারতেন না।”

২০১৬ সালেই বাবা জগমোহন ডালমিয়ার পরিচয়ের সূত্র ধরে কার্যত উড়ে এসে তৃণমূলী রাজনীতিতে জুড়ে বসেছিলেন বৈশালী ডালমিয়া। এমনকী দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বদান্যতায় হাওড়ার বালি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে ঘাসফুলের প্রার্থী হয়ে জিতে বিধায়কও হয়েছিলেন। যদিও তার পর থেকেই ভোট পাখি বৈশালীকে এলাকার সাধারণ মানুষের পাশে দাঁরাতে দেখা যায়নি। ফলে বালির স্থানীয় তৃণমূল নেতা-কর্মীরাও দলীয় বিধায়কের ভূমিকা নিয়ে একাধিকবার ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন। সম্প্রতি ভোটের বাদ্যি বাজতেই নিজের এলাকায় ফের ঘোরাঘুরি শুরু করে দিয়েছিলেন। আর এর জেরেই বিধায়ককে কাছে পেয়েই ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা থেকে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। ফের দলের হয়ে বিধানসভা ভোটের টিকিট পাবেন না তা নিশ্চিত হতেই বেসুরো গাইতে শুরু করেন বালির তৃণমূল বিধায়ক। সূত্রের খবর, বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জন্যও গেরুয়া শিবিরের রাজ্য নেতাদের ধরাধরিও শুরু করে দিয়েছিলেন। চলতি মাসের শেষের দিকে হাওড়ায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের উপস্থিতিতে বিজেপিতে তিনি যোগ দিতে চলেছেন বলে জল্পনাও শুরু হয়েছে।