কলকাতাঃ বাঙালিকে শাসন করার জন্য উত্তর ও পশ্চিম ভারত থেকে অবাঙালিদের বাংলায় পাঠানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করলেন দলের মুখপাত্র তথা রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। ব্রাত্য বসুর কথায়, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে যে ভাবে কোণঠাসা করা হয়েছিল, সে ভাবেই এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কোণঠাসা করার চেষ্টা হচ্ছে। তবে সাবধানী ব্রাত্য এ-ও স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, নেতাজির সঙ্গে তিনি মমতার ‘তুলনা’ করছেন না। ‘উদাহরণ’ দিচ্ছেন মাত্র। ত্রিপুরি কংগ্রেসের পর সুভাষচন্দ্র বসুর সঙ্গে যা করা হয়েছিল তার অনেকটাই মিল আছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ! মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আবার নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সেই উত্তর-পশ্চিম ভারত থেকে লোক পাঠানো হচ্ছে ৷ যেভাবে সুভাষ বসুকে কোণঠাসা করা হয়েছিল৷ আজ সাংবাদিক বৈঠক থেকে সুভাষচন্দ্র বসুর সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সমপাল্লায় বসিয়ে BJP-কে কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন তৃণমূল নেতা ব্রাত্য বসু ৷ তিনি বলেন, “১৯৩৯ সালে সুভাষচন্দ্র বসু ত্রিপুরি কংগ্রেসে জয়ের পরও পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন ৷ তৈরি করেছিলেন ফরওয়ার্ড ব্লক ৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পথ চলাটাও অনেকটাই তেমন ৷” এর পরই ব্রাত্য বুঝিয়ে দেন, সুভাষচন্দ্র যেভাবে নতুন দল নিয়ে দেশের স্বাধীনতার জন্য লড়াই চালিয়েছিলেন, মমতাও তৃণমূল কংগ্রেস তৈরি করে লড়াই করে চলেছেন ৷ বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাংলায় নির্বাচন পরিচালনার জন্য BJP-র তরফে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পাঁচ নেতাকে ৷ এ-প্রসঙ্গে ব্রাত্যের সংযোজন, “আজ আবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য উত্তর-পশ্চিম ভারত থেকে লোক পাঠানো হচ্ছে ৷ যেভাবে সুভাষ বসুকে কোণঠাসা করা হয়েছিল ৷” বলা বাহুল্য, ব্রাত্য তথা তৃণমূলের আক্রমণের অভিমুখ বিধানসভা ভোটের জন্য বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নিযুক্ত পাঁচ নেতার প্রতি। জন্ম এবং কর্মসূত্রে যাঁরা অবাঙালি। শুক্রবার ব্রাত্য বলেন, ”বহিরাগত কর্তৃক বাংলাকে আক্রমণ করা হচ্ছে। বাংলাকে না বোঝা, বাংলার সংস্কৃতি না বোঝা, বাংলার নাড়ি না বোঝা কিছু লোক বাংলায় ঘোরাঘুরি করছেন। এই বহিরাগত তাণ্ডব বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙারই একটা পরের ধাপ।” পাশাপাশিই ব্রাত্য বলেছেন, ”আরএসএসের প্রধান পদে তো কোনওদিন কোনও বাঙালিকে বসানো হয়নি! হয় তেলুগু ব্রাহ্মণ বা মরাঠি ব্রাহ্মণকে বসানো হয়েছে ওই পদে।” রাজ্যের এই মন্ত্রীর আরও অভিযোগ, রাম মন্দিরের আশেপাশে ১৮টি মন্দির রয়েছে। মতুয়া মহাসঙ্ঘের প্রধান হরিচাঁদ গুরুচাঁদ ঠাকুরের মন্দির তো সেখানে নেই! ব্রাত্যর মতে, অবাঙালিরা বা বিশ্বের যে কোনও প্রান্তের মানুষ।ব্রাত্যর কথায়, বাংলায় অতঃপর বাঙালি-অবাঙালি তত্ত্ব নিয়ে নামবে তৃণমূল। ‘বহিরাগত’রা যে অবাঙালি, প্রাথমিক ভাবে সেটাই রাজ্যের মানুষকে মনে করিয়ে দেওয়া হবে। ব্রাত্য অবশ্য পাশাপাশিই বলেছেন, ”আমরা বিশ্ববাংলার কথা বলি। বাংলায় কোনও বাঙালি-অবাঙালি-হিন্দু-মুসলিম-শিখ ভেদাভেদ করা হয় না। হবেও না। কিন্তু এখন বাংলায় বহিরাগতরা এসে তাণ্ডব চালাচ্ছে।”