ক্রাইম

দিল্লির নাবালিকাকে দিনের পর দিন ধর্ষণের অভিযুক্ত নারী ও শিশু কল্যাণ দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টরের স্ত্রীরও জেল হেফাজত

বন্ধুর মেয়েকে বাড়িতে রেখে দিনের পর দিন ধর্ষণের অভিযোগে ধৃত দিল্লির এক সরকারি আধিকারিকের স্ত্রীকে জেল হেফাজত দিল আদালত। ধর্ষণের বিষয়ে স্ত্রী সীমা রানি সবকিছু জানতেন এবং স্বামীর কীর্তি ধামাচাপা চেষ্টা করেছিলেন বলে অভিযোগ। দিল্লির ওই আধিকারিকের নাম প্রেমোদে খাখা। সে নারী ও শিশু কল্যাণ দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর পদে কর্মরত ছিল। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল তৎক্ষণাৎ ওই আধিকারিককে সাসপেন্ড করেন সোমবারই। পুলিশ তদন্তে জানতে পেরেছে, খাখা ও তার স্ত্রী সীমা বুরারি এলাকার শক্তি এনক্লেভে থাকত। নির্যাতিতা নাবালিকাটি বাবার মৃত্যুর পর খাখা বাড়িতেই থাকত এবং তাকে মামা বলে ডাকত। কিন্তু দিনের পর দিন মেয়েটির অসহায়তার সুযোগ নিয়ে লোকটি তাকে ধর্ষণ করে এবং সে গর্ভবতী হয়ে পড়ে। সে কথা সে সীমাকেও জানায়। খাখার স্ত্রী তখন তার ছেলেকে গর্ভনিরোধক ট্যাবলেট কিনে এনে মেয়েটিকে খেয়ে নিতে বলে। সেই অবস্থায় মেয়েটি তার মায়ের কাছে ফিরে গিয়ে সব কথা জানায়। প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে ১ অক্টোবর ওই কিশোরীর বাবা মারা যান। তারপর থেকে ওই অফিসারের বাড়িতেই পরিবারের সঙ্গে থাকছিল কিশোরী। অভিযোগ, বেশ কয়েক মাস ১৪ বছরের কিশোরীকে ধর্ষণ করেছে অভিযুক্ত। এই ঘটনায় মুখ্যসচিবের কাছ থেকে রিপোর্ট তলব করেছেন কেজরিওয়াল। আম আদমি পার্টির নেতা সৌরভ ভরদ্বাজ বলেন, ওই অফিসার জঘন্য কাজ করেছে। এই অপরাধের ঘটনাতে তার স্ত্রীর যোগও রয়েছে। এমন একটি ঘটনা যা সমাজকে নাড়িয়ে দিয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রত্যেকের ঘরে মেয়ে রয়েছে। এটা খুব লজ্জাজনক ঘটনা। ওই অফিসারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই অফিসার খাখা ২০২০ সালের নভেম্বর মাস থেকে ২০২১ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত বারবার ধর্ষণ করেছে। অভিযুক্তের স্ত্রী কিশোরীকে সন্তান নষ্ট করার ওষুধ দিয়েছিল। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর খাখার স্ত্রীকে সব কথা জানিয়েছিল কিশোরী। দিল্লি সরকার একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, অপরাধ প্রমাণ হলে কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত। নারী নিরাপত্তা ও শিশুদের অপব্যবহারের মতো এরকম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দিল্লি সরকার খুব সংবেদনশীল। ওই কিশোরী এখন দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়ে। একটি হাসপাতালের কাউন্সেলরকে এই বিষয়ে বর্ণনা দিয়েছে সে। এই মাসে উদ্বেগজনক অসুস্থতায় সেখানে ভর্তি হয়েছিল সে। জানুয়ারি মাসের ২০২১ সালে ওই কিশোরী অভিযুক্তর বাড়ি থেকে মায়ের কাছে ফেরে। দিল্লি মহিলা কমিশনের প্রধান স্বাতী মালিওয়াল ওই অফিসারকে অপরাধী বলে বর্ণনা করেছেন। শুধু তাই নয়, মালিওয়াল সোমবার সারারাত হাসপাতালে ধরনা দিয়ে বসেছিলেন। নির্যাতিতার সঙ্গে তাঁকে দেখা না করতে দেওয়ার প্রতিবাদেই তাঁর এই ধরনা। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, দিল্লি পুলিশ গুন্ডামি করছে। ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিতে চাইছে। তার দ্রুত গ্রেফতারির আবেদন করেছেন।স্বাতী মালিওয়াল সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে লিখেছেন, দিল্লিতে ডেপুটি ডিরেক্টেরর পদে বসে নারী ও শিশু কল্যাণ দফতরে কন্যা শিশুকে হেনস্তা করেছে। যার রক্ষা করার কথা। সেই এখানে অপরাধী। তাহলে মেয়েরা কোথায় যাবে?