জেলা

বিরাটি স্টেশনে বাচ্চা চুরির ঘটনা গুজব, অভিযুক্ত মহিলাই শিশুটির মা

বিরাটিকাণ্ডে নয়া মোড়! বাচ্চা চুরির অভিযোগে অভিযুক্ত মহিলা শিশুটির মা ৷ দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর বুধবার রাতেই এমনটা জানানো হয়েছে শিয়ালদা জিআরপি’র তরফে। অর্থাৎ মহিলার বিরুদ্ধে বাচ্চা চুরির যে অভিযোগ এনে ট্রেন যাত্রীরা হুলস্থুল কাণ্ড বাঁধিয়ে ছিলেন বিরাটি স্টেশনে। সেই অভিযোগের কোনও ভিত্তি নেই বলে জানাল রেল পুলিশ। এর নেপথ্যে ‘গুজব’ রয়েছে বলেই মনে করছেন তাঁরা। প্রাথমিক তদন্তে রেল পুলিশ জানতে পেরেছে, ব‍্যাগে ভরে শিশু চুরির যে অভিযোগ ট্রেন যাত্রীদের একাংশ করেছিলেন, তা ভিত্তিহীন ৷ বুধবার চলন্ত ট্রেনে এমন কোনও ঘটনায় ঘটেনি বলেও দাবি শিয়ালদা জিআরপি-র। রেল পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে, ১১ মাসের ওই শিশুটি এদিন মহিলার কোলে ছিল। মহিলা কামরায় তিনি তাঁর সন্তানকে স্তন্যপান করাচ্ছিলেন। তখনই কোনওভাবে মহিলাকে শিশু ‘চোর’ ভেবে নেন সহ-যাত্রীদের একাংশ। এরপরই কোনও কিছু না জেনে শিশু ‘চোর’ সন্দেহে মহিলার থেকে জোর করে কেড়ে নেওয়া হয় তাঁর সন্তানকে। তাঁকে হেনস্থা করেন । পরে শিয়ালদাগামী দত্তপুকুর লোকাল বিরাটি স্টেশনে ঢুকলে ওই মহিলাকে রেল পুলিশের হাতে তুলে দেন ট্রেন যাত্রীরা। এদিকে, বিরাটিকাণ্ডে আটক মহিলাকে বারাসত জিআরপি থানায় নিয়ে এসে দফায় দফায় জেরা করেন তদন্তকারীরা। রেল পুলিশ সূত্রে খবর, মহিলাকে জেরা করার সময় তাঁর পাশেই রাখা হয়েছিল ১৫ মাসের ওই শিশুটিকে। জেরায় ওই মহিলা রেল পুলিশকে দমদমের একটা ঝুপড়ির ঠিকানা বলেন। সেই ঠিকানায় নিয়ে যাওয়া হয় ওই মহিলাকে। কিন্তু মহিলা সঠিক ঠিকানা দেখাতে পারেননি। ফলে, প্রাথমিকভাবে তদন্তকারীদের ধারণা, মহিলা মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত। তাই আপাতত শিশুটিকে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে ঠিক হয়েছে। সেই সঙ্গে মহিলার মেডিক্যাল পরীক্ষাও করানো হচ্ছে । প্রয়োজনে মহিলাকে হোমেও পাঠানো হতে পারে। পরবর্তী সময়ে মহিলার স্মৃতিশক্তি ঠিক হলে এবং সঠিক ঠিকানা দিতে পারলে শিশুটিকে তাঁর কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে রেল পুলিশের তরফে। প্রসঙ্গত, ছেলেধরা গুজব নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই উত্তাল উত্তর 24 পরগনার বিভিন্ন এলাকা। গুজবের জেরে একাধিক জায়গায় গণপিটুনির ঘটনাও ঘটেছে। গুজব বন্ধ করতে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভ্রান্তিমূলক পোস্টের বিরুদ্ধে পুলিশ যেমন কড়া ব্যবস্থা নিয়েছে।