কঙ্গনা বিতর্কে জল্পনা তুঙ্গে
মহারাষ্ট্রের শাসকদলের সঙ্গে বাকযুদ্ধ জড়িয়ে পড়েন অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাওয়াত। আর তার জেরে অভিনেত্রী কঙ্গনাকে ওয়াই-প্লাস নিরাপত্তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। ১১ জন কমান্ডো সব সময় ঘিরে রাখবে কঙ্গনাকে। ২জন সব সময় তাঁর সঙ্গে থাকবে।তাঁর বাড়িতে মোতায়েন থাকবে ২৪ ঘণ্টা। কঙ্গনার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন অনেকেই। কেউ বলেছেন, ব্যক্তিগতভাবে একজন নাগরিক (কঙ্কনা) যখন তাঁর অফিসঘরের জন্য ৪৮ কোটি টাকা ভাড়া দিচ্ছেন, তিনি কেন ব্যক্তিগত রক্ষীর খরচ দিতে পারবেন না? এটাই তো আশ্চর্যের। করদাতার অর্থে ১১ রক্ষীর টাকা গুনতে হচ্ছে। আবার কেউ বলেছে, এসএসআর (সুশান্ত সিং রাজপুত) প্রসঙ্গটিকে প্রথমে বিহার বনাম মহারাষ্ট্র বানানো হল। এরপর (-) ২৩ শতাংশ জিডিপি-র প্রবৃদ্ধি, রাজ্যগুলোর জিএসটি-বাবদ প্রাপ্য দিতে ব্যর্থ হওয়া, চিন সীমান্তের কান্ড-সহ বিভিন্ন ঘটনা থেকে নজর ঘোরাতে মুম্বাইয়ে নাটক তৈরি করা হয়েছে। এই নিয়ে এখন স্যোশাল মিডিয়ায় জল্পনা তুঙ্গে।
🔹প্রাণের হুমকি পেলেই কি তাঁকে বিশেষ নিরাপত্তা দেবে কেন্দ্র সরকার?
একেবারেই নয়। একে বলে ‘ভিআইপি সিকিউরিটি’। সমাজের বা সরকারের বিশেষ ব্যক্তিত্বকেই এই নিরাপত্তা দেওয়া হয়। আমআদমিকে নয়। কেন্দ্র খুব প্রয়োজন না বুঝলে কাউকে সিআরপিএফ–এর নিরাপত্তা দেয় না। অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরই প্রাণের ঝুঁকি রয়েছে। সেক্ষেত্রে রাজ্য পুলিশ নিরাপত্তা দেয় সেই ব্যক্তিকে। সিদ্ধান্ত নেয় উদ্দিষ্ট রাজ্য সরকার।
🔹 কোনও ব্যক্তিকে কোন স্তরের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দেওয়া হবে, তা কীভাবে স্থির হয়?
কাকে কোন স্তরের নিরাপত্তা দেওয়া হবে, তা স্থির করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। গোয়েন্দা সংস্থা (আইবি) এবং গুপ্তচর সংস্থা (আরএডব্লিউ) যে তথ্য দেয়, তার ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেয়, কাকে কোন স্তরের নিরাপত্তা দেওয়া হবে। মন্ত্রক খতিয়ে দেখে, সেই ব্যক্তির কোনও সন্ত্রাসবাদী বা সংগঠনের থেকে কোনও বিপদ রয়েছে কিনা। ফোনে আড়ি পেতে বা বিভিন্ন ব্যক্তির ওপর নজর রেখে এসব তথ্য জোগাড় করেন গোয়েন্দারা। প্রধানমন্ত্রী, তাঁর পরিবার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, নিরাপত্তা উপদেষ্টার মতো উচ্চপদস্থ আমলারা স্বাভাবিকভাবেই এ ধরনের নিরাপত্তা পায়। কাউকে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দেওয়া হবে কিনা, সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এবং বিদেশমন্ত্রক। কেন কাউকে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দেওয়া হল, সেই কারণ প্রকাশ্যে আনা বেআইনি। এই কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দেওয়া নিয়ে বহু অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু তার পরও স্পষ্ট নেয়, কেন আর কাকে এই নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে। এও অভিযোগ ওঠে, রাজনৈতিক যোগ না থাকলে এই নিরাপত্তা পাওয়া যায় না।
🔹 কটি স্তরের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা হয়?
মোট ৬টি স্তরের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা হয়। এক্স, ওয়াই, ওয়াই প্লাস, জেড, জেড প্লাস, এসপিজি (স্পেশাল প্রোটেকশন ফোর্স)। এসপিজি মূলত প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর পরিবারকেই দেওয়া হয়। বাকি স্তরের নিরাপত্তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
🔴এক্স স্তর— এক জন বন্দুকধারি এক জন ব্যক্তির নিরাপত্তায় থাকেন।
🔴ওয়াই— এক জন বন্দুকধারি সব সময় সঙ্গে ঘোরে। আর এক জন (রোটেশনে মোট চার জন) বাড়িতে মোতায়েন থাকে।
🔴ওয়াই প্লাস— দু’জন বন্দুকধারি (আরও চার জন রোটেশনে) সব সময় সঙ্গে ঘোরে। এক জন (রোটেশনে আরও চার জন) বাড়িতে থাকে।
🔴জেড— ছ’জন বন্দুকধারি সঙ্গে থাকে। বাড়িতে দুই (রোটেশনে আরও আট)।
🔴জেড প্লাস— ১০ জন বন্দুকধারি সঙ্গে ঘোরে। বাড়িতে থাকে আরও দুই (সঙ্গে আরও আট)।