বিদেশ

ইমরানকে ক্ষমতাচ্যুত করে সেনা অভ্যুত্থানের পথে পাকিস্তান

ইসলামাবাদ: অতল গহ্বরে পাকিস্তানের অর্থনীতি৷ এই পরিস্থিতি সামাল দিতে এবার এগিয়ে আসতে হল পাকিস্তান সেনাকে৷ প্রধানমন্ত্রীর কাজে হস্তক্ষেপ করে ময়দানে নেমে পড়লেন পাকিস্তান সেনা প্রধান কামার জাভেদ বাজওয়ার৷ পাকিস্তানের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সামাল দিতে দেশের প্রথম শ্রেণির ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করলেন সেনা প্রধান৷ করাচিতে সামরিক দফতর ছাড়াও রাওয়ালপিন্ডিতে সেনা বাহিনীর সদর কার্যালয়েও দফায় দফায় বৈঠক করেছেন তিনি৷ কী করে দেশের অর্থনীতির হাল ফেরানো যায়, তার পরামর্শ চেয়েছেন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে৷সেনা প্রধানের এই পদক্ষেপ পাকিস্তানের সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার ইঙ্গিত দেখছে বিশেষজ্ঞরা৷ মনে করা হচ্ছে, পরিস্থিতি যেদিকে গড়াচ্ছে, তাতে যে কোনদিন পাকিস্তানে সেনা অভ্যুত্থান ঘটতে পারে৷ ইমরান সরকারে কাজে না-খুশ হয়েই বাজওয়ার দেশের আর্থিক শুধারে এই পদক্ষেপ নিয়েছেন বলেই মনে করা হচ্ছে৷ ইমরান সরকার আগে আগে সেনাবাহিনী কোনদিন দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করেনি৷ পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে সেনাপ্রধান বাজওয়ার বলছেন তারা যত বেশি সম্ভব বিনিয়োগ বাড়ানোর ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা করতে৷ যাতে দেশের অর্থনৈতিক ঘাটতি মেটানো যায়৷ পাকিস্তানে এই প্রথম কোন সেনাপ্রধান অর্থনীতি বিষয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করল৷বৃহস্পতিবার সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বাজওয়ার বলেছেন, জাতীয় সুরক্ষা সরাসরি দেশের অর্থনীতির সঙ্গে যুক্ত৷ দেশের সুরক্ষা ঠিক থাকবে, তখনই দেশের নাগরিক এবং দেশের আর্থিক অবস্থা ভালো হবে৷ বেশ কিছুদিন ধরেই দুর্বল অর্থনৈতিক অবস্থার প্রভাব পাকিস্তানি সেনাবাহিনীতেও পড়েছে৷ গত দশকে প্রথমবারের জন্য সামরিক ব্যয়ের উপর বড়সড় কাটছাট করা হয়েছে৷ এমন পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনী ভারত ও আফগানিস্তানের সীমান্তে নজরদারি রাখতে অনেক সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে।পাকিস্তানের বেশিরভাগ বড় ব্যবসায়ী ইমরান খান সরকারের চেয়ে সেনাবাহিনীকে বেশি বিশ্বাস করে৷ অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের বিশ্বাস, সেনাবাহিনী দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি করতে পারে। ইমরান সরকার বিষয়টি মোকাবিলার পক্ষে তেমন সক্ষম নন। তবে কেউ কেউ বলেছেন, এটি পাকিস্তানের গণতন্ত্র ও নাগরিক সংস্থাগুলিকে প্রভাবিত করতে পারে এবং সেনাবাহিনী শিগগির ইমরান খান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে নিজেরাই দেশ চালানোর দায়িত্ব নিতে পারে৷ কারণ, এমন ঘটনা পাকিস্তানের ইতিহাসে বহুবার দেখা গিয়েছে।এদিন কামার বাজওয়ার এই পদক্ষেপকে সরকার স্বাগত জানিয়েছে। পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রকের মুখপাত্র ওমর হামিদ খান বলেছেন, সরকারের অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তে সেনাবাহিনীর কোনও হস্তক্ষেপ নেই। আমরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সেনাপ্রধানের বৈঠককে স্বাগত পদক্ষেপ হিসাবে বিবেচনা করছি৷