জেলা

নবমীর রাতে ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার ছয়

রায়গঞ্জ: পোল্ট্রি ফার্মে ডাকাতি করতে এসে বাধা পেয়ে দুষ্কৃতীরা গুলি করে খুন করেছিল ফার্মের মালিককে৷ ধারালো অস্ত্রের কোপ ফার্মের ম্যানেজারকেও গুরুতর জখম করা হয়েছিল। ঘটনাটি ঘটেছিল উত্তর দিনাজপুর জেলার করণদিঘী থানার ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে বাসস্ট্যান্ড এলাকায়। খুনের ঘটনায় বড়সড় সাফল্য পেল রায়গঞ্জ জেলা পুলিশ।জেলা পুলিশের স্পেশাল টিম গ্রেফতার করল ছয় দুষ্কৃতীকে। উদ্ধার করল খুনে ব্যাবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র, কার্তুজ, ১৫ টি মোবাইল ফোন, ছিনতাই হওয়া বেশকিছু টাকা ও একটি মোটরবাইক। আগে একজনকে গ্রেফতারের পর রবিবার দুই মহিলা সহ আরও পাঁচ জন দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করল করনদিঘী থানার পুলিশ ও জেলা পুলিশের স্পেশাল টিম। সোমবার ধৃতদের আদালতে তোলা হয়েছে।নবমীর রাতে খুন হওয়া করনদিঘীর পোল্ট্রি ব্যাবসায়ী সুবেশ দাসের গাড়ির চালকই তার শ্যালকদের দিয়ে মালিককে খুন করিয়েছে। রায়গঞ্জ জেলা পুলিশের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ তদন্ত চালিয়ে বড় ধরনের সাফল্য পেল। করনদিঘীর পুলিশ আগেই এই খুনের ঘটনায় অপর এক পোল্ট্রি ব্যাবসায়ী নিসারুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছিল।এই নিসারুলই সুপারি দিয়েছিল সুবেশবাবুর গাড়ির চালক নাদিম শেখকে। সে তার দুই শ্যালক সাজ্জাক ও মরতুজকে দিয়ে সুবেশবাবুকে খুন ও টাকা লুটপাট চালিয়েছিল বলে পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে। এই খুনের ঘটনায় দুজন মহিলাকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে একজন নাদিম শেখের স্ত্রী আশরাফা এবং তার দিদি মর্জিনা বিবি।রায়গঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার সুমিত কুমার জানিয়েছেন, ব্যাবসায়ী সুবেশ দাসের কাছে সবসময় মোটা অঙ্কের টাকা থাকত জানত তার বিশ্বস্ত গাড়ির চালক নাদিম শেখ৷ সেই টাকা হাতাতে নিজের দুই শ্যালক সাজ্জক আর মরতুজকে দিয়ে খুন ও লুটপাট চালিয়েছিল। এই খুনের ঘটনায় মোট ছয় জন দুষ্কৃতীকে গ্রেফতারের পাশাপাশি খুনে ব্যাবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র, কার্তুজ, ১৫ টি মোবাইল ফোন ও একটি মোটরবাইক উদ্ধার করা হয়েছে৷ ধৃতদের সোমবার আদালতে তোলা হয়েছে।প্রসঙ্গত, পুজোর সময় পোল্ট্রি মুরগির মাংসের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় নিজের পোল্ট্রি ফার্মে কাজ করছিলেন করণদিঘীর বাসিন্দা সুবীর দাস। করণদিঘী বাসস্ট্যান্ডের কাছেই ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে পোল্ট্রি ফার্মটিতে সুবীর বাবু ও তাঁর ম্যানেজার বাবলু সিংহ কাজে মগ্ন ছিলেন।স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আর পাঁচটা সাধারণ খদ্দেরের মতো চার-পাঁচজনের একটি দুষ্কৃতী দল ফার্মে প্রবেশ করে টাকা পয়সা লুট করতে শুরু করে৷ সুবীরবাবু ও ম্যানেজার বাবলু তাদের বাধা দিলে দুষ্কৃতীরা গুলি করে সুবীরবাবুকে এবং ধারালো অস্ত্রের কোপ মারে ম্যানেজার বাবলুকে। এরপর তারা পালিয়ে যায়। গুলির শব্দ শুনে আশপাশ থেকে স্থানীয় মানুষজন ছুটে আসেন৷তারা দেখতে পান মাটিয়ে লুটিয়ে পরে রয়েছেন পোল্ট্রি ফার্মের মালিক সুবীর দাস। তাকে দ্রুত করণদিঘী গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসিকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। স্থানীয় বাসিন্দারা গুরুতর জখম অবস্থায় ম্যানেজার বাবলু সিংহকে প্রথমে করণদিঘী গ্রামীণ হাসপাতালে এবং পরে রায়গঞ্জ গভর্মেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভরতি করেন।