কলকাতাঃ দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার পরে আজ মঙ্গলবার প্রথমবার কলকাতায় আসছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। ঝটিকা সফরে দুপুর ১ টা নাগাদ বিশেষ বিমানে দমদম বিমানবন্দরে নামবেন তিনি। সেখান থেকে সোজা চলে যাবেন নিউটাউনের হোটেলে। খানিক বিশ্রাম নিয়ে যাবেন নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে। সেখানে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) ও নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (সিএবি) নিয়ে দলের উদ্বাস্তু সেলের ডাকা জনজাগরণ সভায় ভাষণ দেওয়ার পরে দলের রাজ্য নেতাদের সঙ্গে বিশেষ বৈঠকে বসবেন। ওই বৈঠক শেষে সল্টলেকের বিজে ব্লকের দুর্গাপুজোর উদ্বোধন করে ফিরে যাবেন দিল্লিতে। যেহেতু বুধবার মহাত্মা গান্ধির সার্ধজন্মশতবর্ষ রয়েছে, তাই তড়িঘড়ি দিল্লি ফিরছেন তিনি। তবে অমিত শাহের নেতাজি ইন্ডোরের সভার দিকে তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল। কেননা, গত কয়েকদিন ধরেই বঙ্গে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি নিয়ে চরমে উঠেছে রাজনীতি। গেরুয়া শিবিরের নেতারা বাংলায় এনআরসি হবে বলে হুংকার ছাড়ায়, কার্যত সাধারণ মানুষের মধ্যে ত্রাহি-ত্রাহি রব পড়ে গিয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ইতিমধ্যেই এনআরসি আতঙ্কে এগারোজন আত্মঘাতী হয়েছেন। ফলে কিচুটা হলেও ব্যাকফুটে পদ্ম শিবিরের নেতারা। এহেন পরিস্থিতিতে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কি বার্তা দেন, তা নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। কেননা, অসমে এনআরসি থেকে ১২ লক্ষ হিন্দু বাদ পড়ায় এ রাজ্যেও ওপার বাংলা থেকে আসা উদ্বাস্তু হিন্দুরা যথেষ্টই উদ্বেগ নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন। আর সেই উদ্বেগ কাটাতে না পারলে যে আগামী পুরসভা ও বিধানসভা ভোটে দলের ভোটব্যাঙ্কে বড়সড় ধস নামবে, তা বুঝতে পেরেছেন বঙ্গের বিজেপি নেতারাও। তাই বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ-রাহুল সিনহারা চাইছেন, অন্তত এনআরসি নিয়ে রাজ্যের হিন্দুদের মনে যে ভীতি তৈরি হয়েছে, তা কাটাতে কোনও স্পষ্ট বার্তা দিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সূত্রের খবর, ইন্ডোরে এনআরসি নিয়ে সভার পরেই দলের রাজ্য পদাধিকারী, জেলা সভাপতি, সাংসদ এবং লোকসভা ভোটের পরাজিত প্রার্থীদের নিয়ে বৈঠকে বসবেন অমিত শাহ। ওই বৈঠকেই এনআরসি ও নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে কিভাবে তৃণমূলের প্রচারের পাল্টা প্রচারে ঝাঁপাতে হবে, তা নিয়ে পরামর্শ দেবেন তিনি। উৎসবের মরসুম মিটে যাওয়ার পরেই যাতে দলীয় নেতারা পাড়ায়-পাড়ায় গিয়ে দু’টি বিষয়ে প্রচারে ঝাঁপান, সেই নির্দেশও দেবেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি।