দেশ

ডিজিট্য়াল লেনদেনের উপর জোর, বাড়বে পেট্রোল-ডিজেলের দাম, অপরিবর্তিত আয়কর

শুক্রবার সংসদে পেশ করা পূর্ণাঙ্গ বাজেটে ডিজিট্য়াল লেনদেনের উপর জোর দিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। মাত্রাতিরিক্ত নগদ লেনদেনের উপর রাশ টানতে বিশেষ কিছু নিয়ম লাগু করার কথাও বাজেটে বলা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, বছরে ১ কোটি টাকা ব্যাঙ্ক থেকে নগদে তুললে ২ শতাংশ টিডিএস কাটা হবে। যে সমস্ত ব্যবসায়ীক সংস্থার বার্ষিক আর্থিক ট্রানজাকশনের পরিমাণ ৫০ কোটি টাকা, তাদের ভিম অ্যাপ, আধার পে, ডেবিট কার্ড, নেফট, আরটিজিএস এবং কিউ আর কোডের মাধ্যমে ক্রেতাদের সঙ্গে লেনদেন করতে হবে বলে বাজেটে উল্লেখ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় বাজেটে উল্লেখিত লো কস্ট ডিজিট্য়াল মোডের জন্য আরবিআই এবং ব্যাঙ্কগুলি কোন চার্জ কাটবে না বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। সম্প্রতি রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া এবং ন্যাশনাল পেমেন্টস কর্পোরেশনের তরফে একটি সমীক্ষা রিপোর্ট কেন্দ্রকে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ২০১৬ সালের অক্টোবরে দেশে ৭৯.৬৭ কোটি টাকার ডিজিট্যাল লেনদেন হয়। ২০১৯ সালের মার্চে তার পরিমাণ বেড়ে ৩৩২.৩৪ কেটি হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। এই সময়কালে ডিজিট্যাল আর্থিক লেনদেনের মূল্য ১০৮ ট্রিলিয়ন থেকে বেড়ে ২৫৮ ট্রিলিয়ন হয়েছে বলেও সমীক্ষা রিপোর্টে জানিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া এবং ন্যাশনাল পেমেন্টস কর্পোরেশন। পেট্রোল-ডিজেলের দাম লিটার প্রতি ১ টাকা করে বাড়ছে। অর্থমন্ত্রী নির্মালা সীতারমন তাঁর বাজেট প্রস্তাবে এই অতিরিক্ত উৎপাদন শুল্ক বসানোর কথা জানিয়েছেন। সড়ক ও পরিকাটামো হিসেবে এই সেস নেওয়া হবে। এরই পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ বাজার চাঙা করতে বাড়ি ও বৈদ্যুতিক গাড়ির ঋণে ছাড় দেওয়া হল কেন্দ্রীয় বাজেটে। গৃহঋণ নিলে ও ইলেকট্রিক গাড়ির কিনতে ঋণ নিলে অতিরিক্ত দেড় লাখ টাকা আয়কর ছাড়। গৃহঋণের সুদে ছাড় ২ লাখ থেকে বেড়ে সাড়ে ৩ লাখ। ৪৫ লাখের গৃহঋণে ৩ লাখের ছাড়। ৪০০ কোটি টাকার বার্ষিক লেনদেনের কোম্পানিগুলিতে ২৪ শতাংশ কর। বাজারে আসছে ২০ টাকার নতুন কয়েন। আসছে ১,২,৫,১০ টাকারও নতুন কয়েন। বছরে ২ থেকে ৫ কোটি টাকা যাদের রোজগার, তাদের আয়কর বাড়ানো হল ৩ শতাংশ। ৫ কোটির ওপরে আয়ের লোকজনের বাড়ল ৭ শতাংশ। আয়কর রিটার্ন আধার কার্ডেও হবে। বাজেট প্রস্তাবে বলা হয়েছে, প্রতিটি গ্রামে ২০২২ সালে বিদ্যুৎ, জল ও দূষণহীন জ্বালানি পৌঁছে দেওয়া হবে। ৭ কোটি নতুন গ্যাস কানেকশন দেওয়া হয়েছে উজ্জ্বলা যোজনায়। দেড় কোটি গ্রামীণ বাড়ি তৈরি করা হয়েছে গত পাঁচ বছরে। সরকারি ব্যাঙ্কগুলিকে ৭০ হাজার কোটি টাকার নতুন মূলধন যোগান দেওয়া হবে। ব্যাঙ্ক থেকে বছরে এক কোটির বেশির টাকা তুললে ২ শতাংশ লেভি বসানো হচ্ছে।  যে জিনিসগুলির দাম কমেছে সেগুলির মধ্যে রয়েছে বেশ কিছু কাঁচামাল ও ক্যাপিটাল গুডস, যা আদপে দেশের উত্‍পাদন শিল্পকে সাহায্য করবে। যেমন রয়েছে, অ্যালয় রিবন, ন্যাপথা, পারমানবিক বিদ্যুত্‍ কেন্দ্রের জ্বালানি সহ কিছু রাসায়নিক। এছাড়া দাম কমতে পারে উলের।  দাম কমার পাশাপাশি দেখে নেওয়া যাক দাম বাড়ল কোন কোন জিনিসের। এই তালিকা নেহাত ছোট নয়। যার মধ্যে রয়েছে, পেট্রোল, ডিজেল, সোনা, দামি ধাতু, বিদেশ থেকে আনা বই, কাজু, টাইলস, ভিনাইল ফ্লোরিং, গাড়ির যন্ত্রাংশ, সিন্থেটিক রবার, সিসিটিভি ক্যামেরা, আইপি ক্যামেরা, সিগারেট। এমন বেশ কিছু জিনিস যা কিন্তু আমজনতার প্রাত্যহিক জীবনে কাজে লাগে।