কলকাতাঃ দেশজুড়ে যে সাম্প্রদায়িক অশান্তির বাতাবরণ, সেই জায়গায় দুর্গাপুজোয় মরুভূমির মধ্যে মরুদ্যানের মতো সম্প্রীতির বার্তা। সর্বধর্ম সমন্বয়ের চেতনা জাগ্রত করতে এবছর পুজো মণ্ডপে এমনই বিষয় ভাবনা উপস্থাপন করেছিল বেলেঘাটা ৩৩ পল্লি অধিবাসীবৃন্দ। আর সেটাই ‘কাল’ হল উদ্যোক্তাদের। ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাতের অভিযোগ তুলে পুলিশের দ্বারস্থ হলেন শান্তনু সিং নামে এক আইনজীবী। পুজো কমিটির সম্পাদক-সহ মোট ৮ জনের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর দায়ের করেছেন তিনি।তাঁর অভিযোগ, পুজো মণ্ডপে বাজছে আজান। আর তাতেই হিন্দুদের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত হানা হয়েছে বলে তাঁর দাবি। এতে নড়েচড়ে বসেছেন উদ্যোক্তারা। তাঁদের পালটা প্রতিক্রিয়া, কোনও ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত হানা হয়নি। পুজোর থিমের সঙ্গে যে আবহ সংগীত ব্যবহৃত হয়েছে তাতে একাধারে দুর্গাস্তোত্র, আজান ও চার্চবেল বাজানো হয়েছে। কিন্তু পুজো হয়েছে হিন্দু রীতি মেনেই। তার সঙ্গে আবহের কোনও যোগসূত্র নেই। ভুয়ো হিন্দুত্ববাদের ধুয়ো তুলে পুজোয় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা হচ্ছে। এবং এর পিছনে রাজনৈতিক অভিসন্ধী দেখছে বেলেঘাটা ৩৩ পল্লির পুজো উদ্যোক্তারা। প্রসঙ্গত, শিল্পী রিন্টু দাসের ভাবনায় এবার মণ্ডপে ফুটে উঠেছে সর্বধর্ম সমন্বয়ের বার্তা। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ‘আমরা এক, একা নই’, এই চেতনায় জাগ্রত করার প্রয়াস নিয়েছিল এবার বেলেঘাটা ৩৩ পল্লি। গোটা মণ্ডপে ঝুলছে হিন্দু, ইসলাম ও খ্রিস্টান ধর্মের প্রতীক। মন্দির-মসজিদ-চার্চ-গুরুদ্বারের ছোট ছোট রেপ্লিকা দিয়ে সাজানো হয়েছে প্যান্ডেল। আর সঙ্গে আবহ সংগীতে শোনা যাচ্ছে চণ্ডীপাঠ, আজান আবার কখনও চার্চবেল। কিন্তু তাল কাটল মহানবমীতে। গত সোমবার দুপুরে থানায় উদ্যোক্তাদের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর দায়ের করেন ওই আইনজীবী।