মালদা

স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদের সপ্তাহে পৃথক পৃথক দিনে পড়াশুনা করার ব্যবস্থা

হক জাফর ইমাম, মালদা: স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদের সপ্তাহে পৃথক পৃথক দিনে পড়াশুনা করার ব্যবস্থা করা হয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে। জানা গেছে স্কুলে ক্লাস চলাকালীন কাগজের টুকরো চালাচালি চলত এক ব্রেঞ্চ থেকে অপর ব্রেঞ্চে। ক্লাস চলাকালীন শ্রেণিকক্ষেই বিভিন্ন কায়দায় চলত ‘প্রেম-নিবেদন’। ঘটনার খবর স্কুল ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়তেই স্কুলে প্রেম রুখতে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের পৃথক পৃথক দিনে ক্লাস নেওয়া শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ। মালদা হবিবপুর ব্লকের বুলবুলচন্ডী গিরিজা সুন্দরী বিদ্যামন্দিরে ছাত্র-ছাত্রীদের পৃথক পৃথক দিনে ক্লাস নেওয়ার সিন্ধান্তের ঘটনায় দ্বিধাবিভক্ত পড়ুয়া থেকে শুরু করে অভিভাবকদের একাংশ। যদিও স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, এমন সিন্ধান্ত নেওয়ার ফলে স্কুলে স্বাভাবিক হয়েছে পঠন-পাঠন। মালদা
হবিবপুর ব্লকের বুলবুলচন্ডী গিরিজা সুন্দরী বিদ্যামন্দির। পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পঠন-পাঠন হয় স্কুলে। পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত শুধুমাত্র ছাত্রদেরই পড়ানো হয়। তবে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে ছাত্রদের পাশাপাশি ছাত্রীদেরও ভর্তি নেওয়া হয়। স্কুলের একাংশ শিক্ষকের দাবি, শ্রেণিকক্ষের মধ্যে ক্লাস চলাকালীন কাগজের কখনও উড়ো জাহাজ, কাগজের টুকরো করে একাংশ ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে প্রেম-নিবেদন চলত। এখন দেখা যাচ্ছে স্কুল ক্যাম্পাসের মধ্যেই কিছু ছাত্র-ছাত্রী একে অপরের সঙ্গে হাত ধরে ঘোরা ফেরা করছে। এমনকি, মেয়েদের কমন রুমের সামনেই লাইন করে দাঁড়িয়ে রয়েছে ছাত্রদের একাংশ। তাই প্রেমে লাগাম টানতে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের পৃথক পৃথক দিনে ক্লাস নেওয়ার সিন্ধান্ত নিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, সপ্তাহে সোমবার, বুধবার এবং শুক্রবার ক্লাস নেওয়া হচ্ছে ছাত্রীদের। আর ছাত্রদের ক্লাস নেওয়া হচ্ছে সপ্তাহের বাকি দিন গুলিতে। সোমবার স্কুলের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শ্রেণিকক্ষে গিয়ে দেখা যায় শতাধিক আসনের হলঘরে জনা তিরিশেক ছাত্রীদের পড়াচ্ছেন শিক্ষকেরা। আর পুরো কক্ষই ফাঁকা পড়ে রয়েছে। ছাত্রীদের একাংশ জানায়, “মনে হচ্ছে যেন গার্লস স্কুলেই রয়েছি। একেবারে নিরিবিলি পরিবেশ। তাদের দাবি, বেশকিছু ছাত্র নানা ভাবে উত্যক্ত করত স্কুলের মধ্যে। শিক্ষকদের জানালে উৎপাতের মাত্রা বেড়ে যেত। তাই স্কুল কর্তৃপক্ষের সিন্ধান্তে আমরা খুশি।” তবে ক্ষুব্ধ একাংশ ছাত্র-ছাত্রী। তাঁদের দাবি, “সপ্তাহে তিনদিন করে ক্লাস হওয়ায় পঠন-পাঠনের ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়তে হবে। সিলেবাস সময়ের মধ্যে শেষ হওয়া নিয়ে সংশয় হবে।” স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ পান্ডে বলেন, “একাংশ ছাত্র-ছাত্রীদের আচারনের কারনে স্কুলের সকলে মিলে আমরা পরীক্ষামূলক ছাত্র-ছাত্রীদের সপ্তাহে পৃথক পৃথক দিনে পড়ানোর সিন্ধান্ত নিয়েছি। এছাড়া শুনেছি মালদায় বেশকিছু স্কুলেই এমনই ভাবে পঠন-পাঠন হচ্ছে।”