কলকাতা: মঙ্গলবার দুপুর দেড়টা নাগাদ শহরে পা রাখেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কলকাতায় এসেই উপস্থিত হন নেতাজী ইন্ডোর স্টেডিয়ামে। প্রত্যাশা মতোই এদিনের অনুষ্ঠানে এনআরসি নিয়ে বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।বাংলায় এনআরসি করা নিয়ে রাজ্যের বিজেপি নেতাদের সুর বেশ চড়া। আর এই প্রসঙ্গেই এদিন অমিত শাহ বলেন, “এনআরসি নিয়ে বাংলার মানুষকে ভুল বোঝানো হচ্ছে। মমতা বলেছেন, লাখো লাখো হিন্দু শরণার্থীকে তাড়ানো হবে। এনআরসি নিয়ে মমতা মিথ্যাচার করছেন। হিন্দু শরণার্থীদের ভারত ছাড়তে হবে না। হিন্দু শরণার্থীদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। বৌদ্ধ, জৈন শরণার্থীদেরও নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। শিখ, খ্রিস্টান শরণার্থীদেরও যেতে হবে না।”এদিন নেতাজী ইন্ডোর স্টেডিয়ামের অনুষ্ঠানে নাগরিকপঞ্জীর পাশাপাশি নাগরিকত্ব সংশোধন বিল নিয়েও কথা বলেন অমিত শাহ। বলেন, “বিল এনে তাঁদের (হিন্দু-শিখ-খ্রিস্টান-বৌদ্ধ-জৈন) নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। এজন্য নাগরিকত্ব বিল আনবে মোদী সরকার। তৃণমূল বিরোধিতা করলেও বিল আসবেই। তবে একজন অনুপ্রবেশকারীকেও থাকতে দেব না।”তৃণমূল নেত্রীকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করে তিনি বলেন, “অনুপ্রবেশকারীদের ভোটব্যাঙ্ক বানিয়েছে মমতা। অনুপ্রবেশকারীদের তাড়াব, শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেব। দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে অনুপ্রবেশকারীদের তাড়াতেই হবে। বিরোধী থাকার সময় অনুপ্রবেশ নিয়ে সরব হয়েছিলেন মমতা। নিজের বক্তব্যের সেই পুরানো ফুটেজ দেখুন মমতা।”এনআরসি নিয়ে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি দূর করতে তিনি বিজেপি কর্মীদের নির্দেশ দেন, “বাড়িতে গিয়ে শরণার্থীদের আশ্বাস দিন বিজেপি কর্মীরা। শরণার্থীদের বলুন, তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।”সভার শুরুতেই পশ্চিমবঙ্গবাসীকে দুর্গাপুজোর শুভেচ্ছা জানান তিনি। এরপর ৩৭০ ধারার অবলুপ্তি নিয়ে তিনি বলেন, “৩৭০ ধারা বিলোপ করে শ্যামাপ্রসাদের স্বপ্নপূরণ করবেন মোদী। বাংলায় পরিবর্তনের জন্য প্রতিজ্ঞা করুন।” আসন্ন বিধানসভা ভোট ও গত লোকসভা ভোটে বাংলা থেকে বিজেপির প্রাপ্তিকে স্মরণ করে তিনি বঙ্গবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “৩০০ আসন অতিক্রমে বাংলার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। ১৮ টি আসন দিয়ে বঙ্গবাসী বুঝিয়ে দিয়েছে পরিবর্তন চান। এবার বাংলায় বিজেপির সরকার হবেই। একুশে বাংলায় মোদীর নেতৃত্বে বিজেপির সরকার হবে। রাজ্যের আড়াই কোটি মানুষ বিজেপির পক্ষে ভোট দিয়েছেন। বাংলায় ৪০ শতাংশ ভোট পেয়েছে বিজেপি। তবুও লাগাতার বিজেপির উপরে সন্ত্রাস চলছে। গত ৪ মাসে ৩০ জন বিজেপি কর্মী খুন হয়েছেন। একসময় সংস্কৃতির পীঠস্থান ছিল বাংলা। কংগ্রেস, সিপিএম, তৃণমূলকে সুযোগ দিয়েছেন। একবার বিজেপিকে সুযোগ দিন, সোনার বাংলা গড়ব।”