কলকাতাঃ দীপাবলি আলোর উৎসব। আঁধার ঘুচিয়ে জীবনে নতুন আলো আসার রাত। আবার পূর্ব পুরুষদের উদ্দেশ্যে সম্মান জানানোর রাত দীপাবলি। সেই আলোর জন্য আলোকদানি যদি বিক্রি না হয় তাহলে কেমন হয় ? খারাপ অবস্থা মাটির প্রদীপ বিক্রেতাদের। বৃষ্টির জেরে দীপাবলির তিন দিন আগেও কার্যত মাছি তাড়াচ্ছে তাঁদের ব্যাবসা। কুমোরটুলি থেকে শুরু করে বড় বাজার প্রদীপ বিক্রেতাদের চিত্রটা একইরকম। রাস্তার ধারে পস্রা সাজিয়ে বসে রয়েছেন। বিক্রেতা নেই। বৃষ্টি মাথায় নিয়েই মাঝে মাঝে কয়েকজন আসছেন , কাস্টমার হারানোর ভয়ে তাঁদের কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে মাটির প্রদীপ। বড় বাজারে এক প্রদীপ বিক্রেতা সুদেশ গিরি জানালেন, ‘এটাই তো বাজার ধরার আসল সময়। এরকম করে যদি বৃষ্টি চলে তাহলে আর ব্যাবসা চলবে কিভাবে। লাভের মুখ দেখা তো অনেক দূরের কথা।’ মায়া শুকুরের বয়স হয়েছে। বললেন গত চল্লিশ বছর ধরে এই মাটির জিনিসের ব্যাবসা করছি। কালীপুজো দেওয়ালীর সময় আমরা কুমোরটুলির ভিতরের দোকান থেকে এসে বাইরের রাস্তায় বিক্রি করি প্রদীপ। কিন্তু এবারে প্রদীপ বাইরে নিয়ে এসেই সমস্যায় পড়েছি। কাল দুপুর থেকে হঠাৎ করে আবহাওয়া এমন পরিবর্তন হয়ে যাবে তো বুঝতে পারিনি। বৃষ্টি হয়েই যাচ্ছে। রঙ ছাড়া প্রদীপ বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে যাওয়ার বাইরে রাখতে পারছি না। রঙিন প্রদীপের রঙ শুকোতে চাইছে না। ক্রেতাদের জিনিস দেখাতে হলে প্লাস্টিক সরিয়ে জিনিস দেখাতে সমস্যা হচ্ছে। অনেক ক্রেতার আবার সেই ধৈর্য নেই। ফলে ব্যাবসা মার খাচ্ছে। আবার রঙিন প্রদীপের রঙ পুরো শুকিয়ে যায়নি। ফলে ক্রেতার হাতে একটু রঙ লাগলেও সে কিনতে চাইছে না।’ একইসঙ্গে তিনি বলেন , ‘কাল তবু কিছু বিক্রি হয়েছিল। আজ সকাল থেকে টানা বৃষ্টি হয়েই যাচ্ছে ফলে আজ মার্কেট আরও খারাপ। শুনছি শুক্রবারও বৃষ্টি হবে। কীভাবে চলবে জানি না।’ জয়ন্ত সাহা বলেন , ‘১০টাকার প্রদীপ আট টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। চার টাকার প্রদীপগুলো তিন টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। বুঝতেই পারছেন মার্কেটের কি অবস্থা।’ এদিকে হাওয়া অফিস এখনও পর্যন্ত আলোর দিশা দেখাতে পারেনি। জানিয়ে দেওয়া হয়েছে ২৬ তারিখের আগে বৃষ্টি থামার সম্ভাবনা কম। ২৫ অক্টোবর মালদহ, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর-সহ পাহাড়ের পাঁচ জেলায় অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। বাঁকুড়া, বীরভূম, মুর্শিদাবাদেও ওইদিন সতর্কতা দিয়েছে হাওয়া অফিস। এই জেলাগুলির পাশাপাশি রাজ্যের সমস্ত জেলাতেই কমবেশি বৃষ্টি হবে।