অবশেষে নগেন্দ্রপ্রসাদ সর্বাধিকারীর ভূমিকায় দেখা দিলেন দেব। পরনে সাদা পাঞ্জাবি, গায়ে বাদামী রঙের শাল। হেয়ার স্টাইলেও খানিক সেকেলে ভাব। নতুন লুকে খুবই পরিণত মনে হচ্ছে দেবকে। ‘গোলন্দাজ’-এর জন্য নগেন্দ্রপ্রসাদ সর্বাধিকারীর বেশে নিজের ফার্স্টলুক শেয়ার করলেন সাংসদ অভিনেতা। ইনস্টাহ্যান্ডেলে পোস্ট করে ক্যাপশানে দেব লিখেছেন, ”ভারতীয় ফুটবলের জনক নগেন্দ্রপ্রসাদ সর্বাধিকারীর জীবন কাহিনী অবলম্বনে আমার পরবর্তী সিনেমা গোলন্দাজের যাত্রা শুরু আজ থেকে, আপনাদের সকলের সহযোগিতা এবং আশীর্বাদ একান্ত কাম্য।” ক্যারিয়ারের শুরুটা যেমনই হোক, একটা সময়ের পর থেকে বিভিন্ন চরিত্রে এক্সপেরিমেন্ট করে চলেছেন দেব । তাই আজ তাঁর ঝুলিতে রোম্যান্টিক হিরো ছাড়াও অনেক চরিত্র । প্রথমবারের জন্য ফুটবলারের চরিত্রে অভিনয় করছেন তিনি। এই চরিত্রের জন্য যথেষ্ট পরিওশ্রমও করতে হচ্ছে দেবকে। ছবির প্রস্তুতিতে কিছুদিন আগেই মাঠে গিয়ে ভারতীয় ফুটবল দলের প্রাক্তন অধিনায় বাইচুং ভুটিয়ার কাছে ফুটবলের পাঠ নিতে দেখা গিয়েছিল দেবকে। চরিত্রের প্রয়োজনে কুস্তিও শিখেছেন দেব। এমনকি খালি পায়েও ফুটবল খেলা প্র্যাকটিস করেছেন তিনি। এককথায় হোমওয়ার্কে কোনও রকম ফাঁক রাখেননি। শারীরিক গঠনকে একেবারে ফুটবলারের মতো করতে দিনরাত পরিশ্রম করে চলেছেন অভিনেতা। তার প্রমাণ পাওয়া গেল ছবিতে। গায়ের রংও বেশ কিছুটা ট্যান করা হয়েছে। ধ্রুব ব্যানার্জির পরিচালনায় এই ছবির মাধ্যমেই এস ভি এফ-এর সঙ্গে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করলেন দেব। আজ থেকে শুরু হল ‘গোলন্দাজ’-এর শুটিং। বুধবার বাণতলাতে ‘গোলন্দাজ’ টিম নিয়ে হাজির হলেন ‘ক্যাপ্টেন অফ দ্য শিপ’ পরিচালক ধ্রব বন্দ্যোপাধ্যায়। যার কাণ্ডারী দেব। প্রসঙ্গত কিছুদিন আগেই প্রযোজনা সংস্থার তরফে ছবির কোন কোন ভূমিকায় কারা অভিনয় করছেন সে বিষয়টি সামনে আনা হয়। জানা যাচ্ছে, ছবিতে দেবের বাবার ভূমিকায় নাকি দেখা যাবে শ্রীকান্ত আচার্যকে। ছবিতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় থাকবেন অনির্বাণ ভট্টাচার্য, তাঁকে দেখা যাবে স্বাধীনতা সংগ্রামী ভার্গবের ভূমিকায়। দেবের স্ত্রীর ভূমিকায় দেখা যাবে ইশা সাহাকে। যিনি কিনা হচ্ছেন শোভাবাজারের রানি কমলিনী। ছবিতে জীতেন্দ্রর অভিনয় করতে দেখা যাবে ইন্দ্রাশিস রায়কে। এই ছবির সঙ্গীত পরিচালনার দায়িত্বে থাকছেন বিক্রম ঘোষ। নগেন্দ্রপ্রসাদের ফার্স্টলুক প্রকাশ্যে আনার সঙ্গে সঙ্গেই দেব নিজের ইনস্টাহ্যান্ডেল ও টুইটার হ্যান্ডেল সহ সোশ্যাল মিডিয়ার সর্বত্রই তাঁর ডিপি চেঞ্জ করে ফেলেছেন। নগেন্দ্রপ্রসাদের লুকটিকেই নিজের ডিপিতে লাগিয়েছেন অভিনেতা। ভারতবাসী হিসেবে প্রথম ফুটবলে পা দেন নগেন্দ্রপ্রসাদ সর্বাধিকারী। এই ছবির মাধ্যমেই আদ্যোপান্ত এক বাঙালি সেই মানুষটিকেই জানবেন দর্শক। কিন্তু এমন গৌরবান্বিত ইতিহাস বোধহয় সিকিভাগ লোকেরই জানা। এই বাংলার অতীতেই লুকিয়ে রয়েছে কত অজানা গল্প। যার সঙ্গে মিলেমিশে রয়েছে পুরোদস্তুর বাঙালিয়ানা। বাংলা ইতিহাসের পরতে পরতে সুপ্ত থাকা সেই গল্পকেই সিনেম্যাটিক ফরম্যাটে জীবন্ত করে তুলতে চলেছেন ধ্রুব। তাঁর কথায়, ” গোলন্দাজ ছবিটি বায়োপিক এক্কেবারেই নয়। আবার আমি কোনও ডকুমেন্টরিও বানাচ্ছি না। সিনেমা বানাতে গেলে সিনেমার সব শর্ত মেনেই আমি ছবিটি বানাবো। গল্পের প্রয়োজনে ওনার যতটুকু নেওয়ার, ততটুকুই নেব। সুন্দর করে একটা গল্প বলতে গেলে যতটুকু প্রয়োজন ঠিক ততটুকুই। একটা মানুষ যিনি সে সময় ছিলেন, তাঁর হাত ধরে কী কী হয়েছিল, কীভাবে তিনি কী করলেন সেই সময়টাকে ঘিরেই একটা গল্প বলার চেষ্টা করবো।”