হক জাফর ইমাম, মালদা: ফুলহর নদীর জল বিপদ সীমার কাছাকাছি আসতেই ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লকে। বিহার ও বাংলার মধ্যে তৈরি হওয়া মহানন্দার বাঁধ আশঙ্কা করে শোরগোল পড়ে যায় ওই এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে। স্থানীয় বাসিন্দাদের ধারণা, বাঁধের খানিকটা অংশ নদী সংলগ্ন বিহারের বাসিন্দারা কেটে দেওয়ার ফলেই জল ঢুকতে শুরু করেছে উত্তর মালদার বিস্তীর্ণ এলাকায়। তবে পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায় আশঙ্কা সম্পূর্ণ অমূলক। অক্ষত রয়েছে ফুলহার নদীর বাঁধ।এদিকে মঙ্গলবার সন্ধ্যাতে ফুলহার নদীর জল স্তর চরম বিপদ সীমার কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। সেচ দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী বলবার সন্ধ্যায় ফুল হারের জলচর ছিল ২৮.২৯ মিটার। ফুলহার নদীর চরম বিপদসীমা ২৮.৩৫ মিটার। কয়েক ঘন্টার মধ্যেই ফুলহার নদীর জলস্তর অসংরক্ষিত এলাকায় চরম বিপদসীমা অতিক্রম করে যেতে পারে বলে ধারণা স্থানীয় বাসিন্দাদের। এদিকে ফুলহার নদীর জল ঢুকতে শুরু করেছে হরিশ্চন্দ্রপুর ২এবং রতুয়া ১ ব্লকের বিভিন্ন গ্রামে। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত এই ২ ব্লকের দশটিরও বেশি গ্রাম জলমগ্ন হয়ে পড়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। নদী চরম বিপদসীমা অতিক্রম করলে আরও বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়তে পারে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক মুস্তাক আলম। তিনি বলেন, মঙ্গলবার সকাল থেকে মহানন্দা এমব্যাঙ্কমেন্টের কিছুটা এলাকা ভেঙে গিয়ে জল ডুকছে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। আমি বিধানসভাতেও বিষয়টি তুলেছি। মুখ্যমন্ত্রী ও সেচ মন্ত্রীকে অনুরোধ করেছি বাঁধের যেন কেউ ক্ষতি না করতে পারে তা দেখার জন্য বিহার সরকারের সঙ্গে আলোচনা করতে। মালদা জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য বলেন, উত্তর মালদার দু-একটি ব্লকের কিছু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে বলে জানতে পেরেছি। আমি বৃহস্পতিবার ওইসব এলাকার পরিস্থিতি দেখতে যাব। মহানন্দা এমব্যাঙ্কমেন্টের নিরাপত্তা নিয়ে ইতিমধ্যেই বিহারের কাঠিহার জেলার জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। মালদা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও বাঁধের নিরাপত্তার দিকটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেচ দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, মহানন্দা ও গঙ্গা নদীর জলও ক্রমশ বাড়ছে। এই দুটি নদীর জলই মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত বিপদ সীমার খানিকটা নিচে আছে। তবে যেভাবে জলস্তর বাড়ছে তাতে আশঙ্কিত হয়ে নদীর চরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা ইতিমধ্যেই অন্য জায়গায় করতে শুরু করেছেন বলে জানা গেছে।