কলকাতা

বাজেট অধিবেশনে বিতর্কের অবসান, শেষমেশ রাজ্যের লিখিত ভাষণই পাঠ করলেন রাজ্যপাল

কলকাতাঃ শুক্রবার দুপুরে রাজ্য বিধানসভার বাজেট অধিবেশন শুরুর আগেই বিতর্ক তৈরি হয়েছিল রাজ্যপালের ভাষণ নিয়ে। রাজ্য ও রাজ্যপাল চাপানউতোর চলছিল জোরকদমে। রাজ্য সরকারের লিখে দেওয়া ভাষণই পড়বেন, নাকি নিজের মন্তব্য জুড়ে দেবেন, তা নিয়ে চলছিল জল্পনা। প্রস্তুত ছিলেন শাসকদলের বিধায়করা। রাজ্যপাল যদি বাজেট ভাষণে সরকারের সম্বন্ধে কোনও নেতিবাচক কোনও মন্তব্য করেন, তাহলে সঙ্গে সঙ্গেই আসনে বসে তাঁর প্রতিবাদ করবেন বিধায়করা। কিন্তু কোনওরকম বিতর্কে গেলেন না রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। প্রথামাফিক রাজ্যের লিখিত ভাষণই পাঠ করলেন তিনি। কোনও কিছুই বাদ দিলেন না। আবার নতুন কিছু যোগও করলেন না সেই ভাষণে। ফলে স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলল সরকার পক্ষ। তবে ভাষণ শেষে প্রথামাফিক বিধানসভা ত্যাগ করলেন না রাজ্যপাল। বিধানসভার কক্ষ থেকে বের হয়েই ফের অন্য দরজা দিয়ে সোজা চলে যান স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘরে। সেখানেই তিনি ডেকে নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। চলছে বৈঠক, তবে কী কী বিষয়ে আলোচনা চলছে সেটা এখনও জানা যায়নি। এর আগে বৃহস্পতিবার রাজভবনের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, মন্ত্রিসভার তৈরি বক্তৃতার খসড়া দেখে রাজ্যপাল কয়েকটি জায়গায় পরিবর্তন ও সং‌যোজন করতে চেয়েছিলেন। তাঁর সেই সুপারিশ মানা হয়নি। সরকার বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাঁকে জানিয়ে দেয়, যে বক্তৃতা পাঠানো হয়েছে, সেটাই চূড়ান্ত। তবে রাজ্যপাল ‘লক্ষ্মণরেখা’ লঙ্ঘন করতে চান না। আবার প্রশাসন বা অন্য কোনও কর্তৃপক্ষ সংবিধানের বিচ্যুতি ঘটালে তা-ও মানা হবে না। এর আগে শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতীতে এক অনুষ্ঠানে বৃহস্পতিবার তিনি বলেছিলেন, রাজ্য সরকারের যেমন অধিকার আছে বাজেট ভাষণ তৈরি করার, তেমনই রাজ্যপাল হিসেবে তাঁরও তা কাটছাঁট করার অধিকার আছে। বক্তৃতার প্রয়োজনীয় অংশে তিনি নিজের মত, পর্যবেক্ষণ জানাবেন। এখানেই আশঙ্কা দেখছেন সরকার পক্ষ। যদি বেফাঁস কিছু বলে বসেন রাজ্যপাল? তাই বিধানসভায় রাজ্যপালের ভাষণের সরাসরি সম্প্রচার স্থগিত করলেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, বৈদ্যতিন মাধ্যমের প্রতিনিধিদের বিধানসভায় ক্যামেরা নিয়ে ঢোকা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সরকারি সূত্রের দাবি, রাজ্যপালের ভাষণের সরাসরি সম্প্রচার করতে হবে এরকম কোনও নীতি নেই। ফলে এই সম্প্রচার স্থগিত করার মধ্যে কোনও জটিলতাও নেই।