দেশের সব মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে আজ বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সব থেকে বেশি করোনা সংক্রমিত অঞ্চল বা হটস্পটগুলোতে মে-র ৩ তারিখের পরও জারি থাকবে লকডাউন। সোমবার ৯জন মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে এই বার্তাই দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘দেশ দুটো লকডাউন দেখেছে, যাতে দুরকম প্রভাব রয়েছে। এবার আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী দিনে করোনাভাইরাসের প্রভাব প্রত্যক্ষ হবে।’ হটস্পটগুলোতে লকডাউনের কেন্দ্রীয় নির্দেশিকা কড়াভাবে যাতে পালন হয় রাজ্যগুলোকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে বলেন মোদি। দেশের অর্থনীতির দুর্বল দশা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীরা উদ্বেগ প্রকাশ করলে প্রধানমন্ত্রী তাঁদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘কোভিড–১৯ নিয়েও যেমন আমাদের লড়তে হবে, তেমনই অর্থনীতিতেও জোর দিতে হবে। অর্থনৈতিক দিক থেকে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। আমাদের অর্থনীতি ভালো অবস্থায় আছে।’ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত শিক্ষাবিদ এবং গবেষকদের নতুন আবিষ্কারের মাধ্যমে এই সমস্যা মোকাবিলার উপায় খুঁজতে আবেদন করেন তিনি। মোদি বলেছেন, অন্যান্য রাষ্ট্রের তুলনায় ভারতে জনসংখ্যা বেশি হলেও সময়ে পদক্ষেপ করায় সেভাবে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েনি। তবে গ্রীষ্মের পর বর্ষাকালে ফের এই রোগের প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে রাজ্যগুলোকে সতর্ক করে দিয়েছেন মোদি। সামাজিক দূরত্ব বিধি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সবাইকে পরস্পরের মধ্যে দুই গজ বা ছয় ফুটের দূরত্ব বজায় রাখতে হবে এবং সম্ভবত আগামী দিনে মাস্কই হবে জীবনযাপনের অঙ্গ। দেশের গ্রিন জোন বা যেখানে করোনা সংক্রমণ একেবারে নেই এবং অরেঞ্জ জোন, যেখানে তুলনামূলকভাবে কম সংক্রমণ সেখানে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালু নির্দেশ দেন মোদি। তিনি বলেছেন, লকডাউন ধাপে ধাপে তোলার জন্য রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলোকে তাদের করোনা সংক্রমিত অঞ্চলগুলোকে রেড, অরেঞ্জ এবং গ্রিন জোনে ভাগ করতে হবে। রেড জোনকে প্রথমে অরেঞ্জ এবং তারপর গ্রিন জোনে রূপান্তরিত করার দায়িত্বও সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলোকে নিতে হবে। বিধিনিষেধ মেনে ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচলের পক্ষে অনুমতি দিলেও আপাতত গণপরিবহন বন্ধই রাখা হবে। স্কুল, কলেজের মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আপাতত বন্ধ থাকবে। ধর্মীয় সভা, সমাবেশ বা মিটিং, মিছিলে নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে। প্রযুক্তি সাহায্যে এবং সংস্কারমূলক পদক্ষেপের সহায়তায় কোভিড–১৯–এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ জয়ের উপর জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। পাঁচজন মুখ্যমন্ত্রী লকডাউন তোলার পক্ষে মত দিয়েছেন। তবে ওডিশা, মেঘালয়, গোয়া সহ বাকি চারজন লকডাউন চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন। মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা বলেন, বিভিন্ন অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নিয়ম শিথিল করা হলেও সামাজিক দূরত্ব বিধির মতো নতুন নির্দেশিকা জারি করা উচিত। কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন বৈঠকে যোগ না দিলেও রাজ্যের তরফে ছিলেন কেরলের মুখ্যসচিব। কেরল সরকার তাদের পরামর্শ আগেই লিখিত আকারে কেন্দ্রকে পাঠিয়ে দিয়েছিল।