কলকাতাঃ শত যোজনের মধ্যে কেউ নেই। শহর হোক কিংবা শহরতলী, উদ্বোধক হিসেবে তিনিই পুজো উদ্যোক্তাদের প্রথম পছন্দ। তাই প্রতিদিনই পুজো উদ্বোধনে নিজের রেকর্ড নিজেই ভাঙছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ রবিবার ছুটির দিনেই বিশ্রাম নেওয়ার ফুরসৎটুকু নেই তাঁর। বেহালা থেকে হরিদেবপুর, কসবা থেকে বালিগঞ্জ ছুটতে হবে তাঁকে। আট-আটটি পুজোর উদ্বোধন করতে হবে তাঁকে। বঙ্গের বিজেপি নেতারা যেখানে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের উদ্বোধনের জন্য মাথা খুঁড়েও কোনও পুজো কমিটির কর্তাদের রাজি করাতে পারছেন না, সেখানে তৃণমূল সুপ্রিমোর কাছে উদ্বোধনে যাওয়ার আমন্ত্রণপত্রের স্তুপ জমেছে। তাই এবার পুজো উদ্বোধনে যাওয়ার বিষয়ে কিছুটা ঝাড়াই-বাছাই করছেন তিনি। গত কয়েক বছর ধরে তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের দমকল মন্ত্রী সুজিত বসুর শ্রীভূমি স্পোর্টিং থেকেই পুজো উদ্বোধন শুরু করতেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার সুজিতের পুজো উদ্বোধনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।শুক্রবার থেকেই কার্যত পুজো উদ্বোধনে নেমে পড়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রথম দিন তিনটি পুজোর উদ্বোধন করেছিলেন। প্রথমে গিয়েছিলেন কলকাতার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষের পুজো বলে পরিচিত হাতিবাগান সর্বজনীন পুজো মণ্ডপে। সেখান থেকে মানিকতলার চালতাবাগানের পুজো উদ্বোধন করে হাজির হয়েছিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের পুজো হিসেবেই পরিচিত গড়িয়াহাটের হিন্দুস্থান ক্লাবে। শনিবার ৭টি পুজোর উদ্বোধন করেছেন।নজরুল মঞ্চে দলের মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’র শারদ সংখ্যার প্রকাশ করে হাজির হয়েছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পুজো হিসেবে পরিচিত নাকতলা উদয়ন সঙ্ঘে। সেখান থেকে সেলিমপুর, বাবুবাগান, যোধপুর পার্ক ৭৫ পল্লী, যোধপুর পার্ক সর্বজনীনের পুজো উদ্বোধন শেষ করে মুখ্যমন্ত্রী পৌঁছন রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের পুজো হিসেবে পরিচিত চেতলা অগ্রণীতে। অন্যান্যবারের মতো এবারও সেখানে তুলি হাতে প্রতিমার চক্ষুদান করেন। সবশেষে নিজের পাড়ার পুজো কালিঘাট মিলন সঙ্ঘের পুজো উদ্বোধন করেন।মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ ছুটির দিনে মোট আটটি পুজোর উদ্বোধন করবেন মমতা। তার মধ্যে বেশ কয়েকটি পুজো রয়েছে বেহালা ও হরিদেবপুরে। একদা যা কলকাতার প্রাক্তন মেয়র তথা নব্য বিজেপি নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায়ের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল। প্রথমে বেহালার নতুন দলের পুজোমণ্ডপে যাবেন তিনি। সেখান থেকে বড়িশা ক্লাব, হরিদেবপুর অজেয় সংহতি, হরিদেবপুর ৪১ পল্লীর পুজো উদ্বোধন শেষে সোজা পৌঁছে যাবেন বোসপুকুর শীতলা মন্দিরে। তারপর বোসপুকুর তালবাগান, আদি বালিগঞ্জের পুজোমণ্ডপে যাবেন। বালিগঞ্জ ফাঁড়ির কাছে ২১ পল্লীর পুজো উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে আজকের উদ্বোধন কর্মসূচি। আগামীকাল সোমবার রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের একডালিয়া এভারগ্রীন সহ মোট ৯ টি পুজোর উদ্বোধন করার কর্মসূচি রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর।