গ্রিন জোনে চলবে বাস-ট্যাক্সি, খুলছে দোকান
‘এখনও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি ৷ এখনই বাড়ি থেকে বেরোবেন না ৷ মে মাসের শেষ পর্যন্ত নিয়ম মানুন।‘
কলকাতাঃ লকডাউনের মধ্যে বাংলায় বেশ কিছু পরিষেবায় ছাড় দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলায় গ্রিন জোনভুক্ত এলাকায় বাস চালু হচ্ছে। আগামী সোমবার থেকে বেশ কিছু দোকান খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে নবান্নে বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধায়। পাশাপাশি কলকাতার গ্রিন জোনে ট্যাক্সি পরিষেবা চালুর কথা ঘোষণা করা হয়েছে। অন্যদিকে গ্রিন জোন এলাকায় বেসরকারি বাস পরিষেবা চালুতেও অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সরকারি বাসগুলিতে সাধারণত ৬০টি করে আসন থাকে। কিন্তু এখন সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করার স্বার্থে ২০ জনের বেশি উঠতে পারবেন না এক একটি বাসে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, সোমবার থেকে গ্রিনজোনে বেসরকারি বাস চালানো যেতে পারে। কিন্তু বাসে ২০ জনের বেশি যাত্রী নেওয়া চলবে না এবং বাস ডেলার বাইরে নিয়ে যাওয়া যাবে না ৷ বাস চালানোর জন্যে জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের থেকে আগাম ছাড়পত্রও জোগাড় করতে হবে।নির্দিষ্ট দূরত্ব পর্যন্ত যে বাসগুলি চলাচল করবে, তার ভিতর কোনও ভাবেই যেন স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘিত না হয় সে ব্যাপারে সতর্ক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার নির্দেশ, প্রতিদিন স্যানেটাইজ করতে হবে বাস। বেসরকারি বাসের পাশাপাশি শর্তসাপেক্ষ ভাবে ট্যাক্সি পথে নামানোর বিষয়েও ছাড়পত্র দেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তবে এর সঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী সতর্ক করেছেন, ‘দোকান খুললেও দোকানে কোনও জমায়েত করা যাবে না ৷ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে ৷ চা-বিড়ি-পানের দোকান খুললেও সেখানে আড্ডা বসানো যাবে না ৷ চা খাওয়ার ইচ্ছে হলে চা নিয়ে বাড়ি চলে যান৷ পান সিগারেট খেতে হলে পান সিগারেট নিয়ে বাড়ি চলে যান ৷’ একইসঙ্গে তিনি এও বলেন, প্রত্যেক এলাকায় কোন কোন দোকান খুলতে পারবে তা সার্ভে করে জানাবেন পুলিশকর্মীরা ৷ আজ মুখ্যমন্ত্রী এও স্পষ্ট করে বলেছেন, এখনই উঠছে না বিধিনিষেধ ৷ তিনি বলেন, ‘এখনও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি ৷ এখনই বাড়ি থেকে বেরোবেন না ৷ মে মাসের শেষ পর্যন্ত নিয়ম মানুন ৷‘ গ্রিন জোন ও অরেঞ্জ গুলিকে কিছু পরিষেবায় ছাড় দেওয়া হয়েছে। কনটেনমেন্ট এলাকায় এই সুবিধা মিলবে না বলে এদিন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিস্থিতি খারাপ হলে পরে সিদ্ধান্ত বদল হতে পারে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। লকডাউনে বাংলায় কী কী শিথিল করার কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী, জেনে নিন একনজরে –
- সোমবার থেকে আমরা কিছু কিছু জায়গায় ছাড় দেব, যেমন- পাড়ার কিছু দোকান, ইলেকট্রনিক্সের দোকান, স্টেশনারি দোকান, হার্ডওয়্যার, লন্ড্রি, চা ও পানের দোকান (হোম ডেলিভারি), রঙের দোকান, মোবাইল রিচার্জের দোকান।
- গ্রিন জোনে ফ্যাক্টরি চালু করছি সমস্ত নিয়ম মেনে।
- জেলায় জেলায় ডিএম ও এসপিদের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে, তাঁরা ঠিক করবেন কীভাবে কী কী খোলা হবে।
- কলকাতায় হোম ট্যাক্সি চালু হবে।
- গ্রিন জোনে পাবলিক বাস চালু, কিন্তু ২০ জনের বেশি যাত্রী নেওয়া যাবে না।
- জুটমিল আমরা ২৫% চালু করেছি।
- চা বাগানও ২৫% চালু করা আছে।
- ফরেস্ট প্রোডাকশনের কাজও নিয়ম মেনে চালু করা হবে।
- নিয়ম ব্যাহত হলে বন্ধ করে দেওয়া হবে সব।
- পুলিশ সার্ভে করবে এলাকায় এলাকায়। কোন দোকান খোলা যাবে তা বলে দেবে পুলিশই। এটা রেড জোনের জন্য নয়। শুধু গ্রিন জোন ও অরেঞ্জ জোনের জন্য।
- যেহেতু সেন্ট্রাল গর্ভমেন্টও বন্ধ রাখতে বলেছে, সেলুন বন্ধই থাকবে।
- কনটেনমেন্ট এরিয়ায় টোটাল লকডাউন থাকবে।
- রেশন দোকানে ‘ধান দিন চেক নিন’ শুরু করছি।
- কেউ কেউ রটানোর চেষ্টা করেছিলে কলকাতায় বেড নেই। কিন্তু ৭৯০টি বেড এখনও রেডি আছে।